বিশেষ প্রতিবেদক
অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ডে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক ওসি প্রদীপসহ সকল খুনীদের রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি দিয়েছে পরিবারের সদস্যরা। রায় কার্যকর হয়েছে এমন দৃশ্য দেখে যেতে চান সিনহার মা।

সোমবার (৩১ জুলাই) বিকেলে কক্সবাজার পাবলিক লাইব্ররীর শহীদ সুভাষ হলে সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকীর স্মরণ সভায় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস এমন কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, আমার ভাই হত্যা মামলার রায়ের আদেশে নয় বরং রায় কার্যকর হলেই সন্তুষ্টি মিলবে। দুই প্রধান আসামির ফাঁসির রায়ের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে, কিন্তু সাতজনের খালাস নিয়ে আছে অসন্তোষ। যেদিন রায় কার্যকর হবে সেদিন সন্তুষ্টি মিলবে।

তিনি আরও বলেন, তিন বছর অপেক্ষা করেছি আর কত অপেক্ষা করবো। এখনো রায় কার্যকর হয়নি। এই রায় আটকে আছে। এই ঘটনা কোন সাধারণ ঘটনা হতে পারে না। আমরা রায় কার্যকর চাই।

আমার ভাই অসম্ভব সৎ অফিসার ছিলেন। তার সামনে কোটি টাকা রাখলেও তার টাকা না হলে ধরবে না। আমার ভাইকে সন্ত্রাসীরা হত্যা করলে আমরা সহজে মেনে নিতে পারতাম। কিন্তু আইনের পোশাক পরে হত্যা করা মানে সন্ত্রাসীর চেয়ে কম না। আমার ভাই ছিল ট্রেনিংপ্রাপ্ত দক্ষ অফিসার। তাকে পোষাকধারী সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমরা এখনো তার মৃত্যু মেনে নিতে পারছি না। সে এখনো আমাদের সামনে ঘুরে বেড়ায়। মাঝে মধ্যে মনে হয় সে এখনো মরে নাই। আমার ভাই একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক ছিল। দেশের জন্য প্রাণ দিতে সে সবসময় প্রস্তুত ছিল।
সিনহার স্মৃতি স্মরণ করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস।

বক্তব্য শেষে তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, আমার পরিবার আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। সাংবাদিকদের কারণে আমরা আজ এই পর্যন্ত আসতে পেরেছি।

মেজর সিনহা হত্যামামলার বাদী পক্ষের প্রবীন আইনজীবী মোহাম্মদ মোস্তফার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম, দৈনিক আমাদের বাংলা পত্রিকার সম্পাদক মিজানুর রহমান চৌধুরী, নারী নেত্রী নাজনীন সরওয়ার কাবেরী, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সৈয়দ মোঃ রেজাউর রহমান রেজা, ওসি প্রদীপের হাতে নির্যাতিত সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা খান, এডভোকেট মাহবুবুল আলম টিপু, সাংবাদিক মহসীন শেখ, সাংবাদিক শহিদুল্লাহ মেম্বার প্রমুখ।

এতে বক্তারা বলেন, সকল আইনগত পক্রিয়া শেষ করে আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে এই রায় কার্যকর না করলে সরকার,পুলিশ,বিচার বিভাগের প্রতি সাধারন মানুষের ক্ষোভ বাড়বে। উঠে যাবে আস্থা। যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সকল ভালো কাজকে ধুলির সাথে মিশিয়ে দেবে।

এসময় ওসি প্রদীপের নির্মম নির্যাতনের শিকার হামজালাল, পিতা হারোনা উখিয়ার বখতিয়ার মেম্বারের ছেলে হেলাল উদ্দীন মেম্বার সহ অনেকেই আলোচনা করেন।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরে এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।

Spread the love