আবদুর রহমান খান

কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এবং পিপলস ডেমক্রাটিক পার্টি (পিডিপি)’র প্রেসিডেন্ট মেহবুবা মুফতি বলেছেন, ভারতের সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ফ্যাসিস্ট সরকার কাশ্মীর সংকটের সমাধান আরো জটিল করে দিয়েছে।

আজ ( ১৭ ফেব্রুয়ারী) শোপিয়ান জেলার পাহনো তে এক শোক সভায় অংশ নিয়ে মেহবুবা মুফতি বলেছেন, মোদী সরকার বিশ্ববাসীকে এই ধারনা দিতে চায় যে কাশ্মীর সমস্যা সমাধানের জন্য ৩৭০ ধারা বিলুপ্ত করা হয়েছে। আসলে এর ফলে সঙ্কট আরো বেড়েছে; নির্যাতন- নিপীড়ন বেড়েছে; হত্যা গুম গ্রেপ্তার আরো বেড়েছে। প্রতিবাদী যুবক, রাজনীতিবিদ এমনকী নারী-শিশুদেরকেও জেলে পুরে রাখা হচ্ছে মাসের পর মাস।

কাশ্মীরের এ নেতা আরো বলেন, জনগনের মতামত প্রকাশ এবং গণধ্যমে খবর প্রকাশের ওপরও নিষেধজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। সাংবাদিকদের ওপরো বহাল করা হয়েছে সরকারী নিয়ন্ত্রন।

হিজাব নিয়ে বিতর্ক প্রসঙ্গে মুফতি মেহবুবা বলেন, মুলত সুসলিম মেয়েদের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত রাখার জন্যই হিজাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের চেষ্টা। এতা ধর্ম নিরপেক্ষ ভারতের নীতি হতে পারে না । তিনি দৃরভাবে বিশ্বাস করেন ভারতের মুসলমান মেয়েরা নিজদেরকে শিক্ষা থেকে দূরে রাখবে না।

কাশ্মীর নিয়ে চীনের অবস্থান অনুসরণ করার আহবান

গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের রাষ্ট্রপতি এবং দেশটির রাষ্ট্রীয় কেন্দ্রীয় সামরিক পরিষদের প্রধান, শি চিনফিং গত ০৬ ফেব্রুয়ারি বেইজিংয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সাথে দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ বৈঠক শেষে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন যে “কাশ্মীর বিশ্বের মানচিত্রে সবচেয়ে বিপজ্জনক স্থান কারণ এটি কেবল দুটি দেশের মধ্যে একটি বিতর্কিত অঞ্চল নয়, কাশ্মীরের সাথ তিনটি রাষ্ট্রের সীমান্ত রয়েছে, যারা পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত।”

চীন-পাকিস্তান শীর্ষ সম্মেলনে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান চীনা প্রসিডেন্টকে ভারত অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের পরিস্থিতি সম্পর্কে বিশেষ করে এ কাশ্মীরে নতুন দিল্লি কর্তৃক সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং অধিকৃত অঞ্চলের জনসংখ্যার ভারসাম্য বদলে দেবার কৌশলের বিষয়গুলি অবহিত করেছেন ।

উভয় নেতা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলেশনের ভিত্তিতে ভারতের কাশ্মীর দখলের অবসান ঘটানো ও কাশ্মীরিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের লড়াইয়ে তাদের সংকল্পকে সমর্থন জানিয়েছেন।

ওদিকে, কাশ্মীরের স্বাধীনতাকমি সংগঠন তেহরিক-ই-কাশ্মীর – এর যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি ফাহিম কায়ানি চীনের ভুমিকাকে স্বাগত জানিয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়কে এ নীতির পক্ষে সমর্থন জানানোর আহবান করেছে।

ফাহিম কায়ানি বলেছেন, “ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের অবৈধ দখলের বিষয়ে বেইজিংয়ের অবস্থান জাতিসংঘের প্রস্তাবের ভিত্তিতে, এটিই সত্যিকারের অবস্থান যা যুক্তরাজ্য সহ অন্যান্য দেশের অনুসরণ করা উচিত।”

ফাহিম কায়ানি প্রবাসী কাশ্মীরি সম্প্রদায়কে তাদের ন্যয্য অধিকারের সংগ্রাম এগিয়ে নিতে চীনা নেতৃত্ব, কূটনীতিক, শিক্ষাবিদ, মিডিয়া এবং বুদ্ধিজীবীদের সাথে ঘনিষ্ট থাকার আহ্বান জানান। কারণ, চীন ন্নিরাপত্তা কাউন্সিলের স্থায়ী সদস্য এবং কাশ্মীর প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে পারে।”

বেইজিংয়ে ইমরান খানের সফল সফরের প্রশংসা করে কায়ানি কাশ্মীরিদের পক্ষে দ্ব্যর্থহীন ওকালতি করার জন্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। কায়ানি বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী খান কাশ্মীরিদের ন্যায্য দাবি সম্পর্কে সচেতনতার স্তর বাড়িয়েছেন এবং ভারতের ফ্যাসিবাদী শাসনের মুখোশ উন্মোচন করেছেন। ভারত আজ সংখ্যালঘুদের জন্য নরকে পরিণত হয়েছে- এর প্রতি বিশ্বব্যাপী দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ইমরান খান। ”

ঢাকা (১৭ ফেব্রুয়ারী)