অনলাইন ডেস্ক: জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ইউক্রেনে মানবিক সহায়তা এবং বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে আনা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) জাতিসংঘে প্রস্তাবটি ১৪০ ভোট পেয়ে পাস হয়।
এতে প্রায় এক মাস আগে প্রতিবেশী দেশটিতে হামলা চালিয়ে 'ভয়াবহ' মানবিক পরিস্থিতি তৈরি করার জন্য রাশিয়ার সমালোচনা করা হয়েছে।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা মানবিক পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে ভোট দিয়েছি।
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস রাশিয়ার 'অযৌক্তিক যুদ্ধ' জন্য কঠোর সমালোচনা করেছেন। গত মাসে শুরু হওয়া এই যুদ্ধে ইউক্রেনে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে, লাখ লাখ মানুষ শরণার্থী হয়েছে এবং শহরগুলো ধ্বংস হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ইউক্রেন ও মিত্রদের তৈরি করা খসড়া প্রস্তাবটির পক্ষে ১৪০ ভোট পড়ে এবং বিপক্ষে পড়ে পাঁচ ভোট- রাশিয়া, সিরিয়া, উত্তর কোরিয়া, ইরিত্রিয়া এবং বেলারুশ। এছাড়া চীন ও ভারতসহ ৩৮টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে।
সাধারণ পরিষদে গৃহীত প্রস্তাব মানা বাধ্যতামূলক নয়, তবে সেগুলো রাজনৈতিক গুরুত্ব বহন করে।
গত ২ মার্চ ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন বন্ধে সাধারণ পরিষদে আরেকটি প্রস্তাব ১৪১ ভোট পেয়ে গৃহীত হয়েছিল। সেসময় বাংলাদেশ ভোটদানে বিরত থাকে।
উল্লেখ্য, পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য ২০০৮ সাল থেকে আবেদন করে ইউক্রেন। মূলত, এ নিয়েই রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। তবে সম্প্রতি ন্যাটো ইউক্রেনকে পূর্ণ সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করায় দ্বন্দ্বের তীব্রতা আরও বাড়ে। ন্যাটোর সদস্যপদের আবেদন প্রত্যাহারে চাপ প্রয়োগ করতে যুদ্ধ শুরুর দুই মাস আগ থেকেই ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রাখে মস্কো। কিন্তু এই কৌশল কোনো কাজে না আসায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া। ঠিক তার দুদিন পর ২৪ তারিখ ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ঘোষণা দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরপর রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে।
এ দিকে চলমান এই যুদ্ধে ইতোমধ্যে ইউক্রেন ছেড়েছেন প্রায় ৩৯ লাখ মানুষ। যুদ্ধে ইউক্রেনের ১৩শ’ সেনা নিহত এবং রাশিয়ার ১৫ হাজার ৮০০ সৈন্য নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন। তবে রাশিয়া বলছে, যুদ্ধে তাদের প্রায় ৫০০ সৈন্য নিহত এবং ইউক্রেনের আড়াই হাজারের বেশি সেনা নিহত হয়েছেন।
এ ছাড়া জাতিসংঘ জানিয়েছে, রুশ অভিযানে ইউক্রেনের এক হাজার ৩৫ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।