বার্তা পরিবেশক:
অবশেষে কারাগারে গেছে চকরিয়ার ডুলাহাজারার ইউনিয়নের সেই আলোচিত আলী আহামদ। তার বিরুদ্ধে হত্যা ও অস্ত্র ১৩টির বেশি মামলা রয়েছে। চকরিয়ার সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক রাজিব কুমার দেব।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ডুলাহাজার নয়াপাড়ার এলাকার মোজাম্মেল হকের পুত্র আলী আহামদসহ একটি চক্র একই ইউনিয়নের মাইজপাড়া এলাকার হামিদুল হকের বসতভিটা ও বাড়ি জবর দখল করে। ওই সময় চক্রটি জবর দখল করতে হামিদুল হকের পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা করে। এই ঘটনায় হামিদুল হক বাদি হয়ে আলী আহামদ, বালুচর এলাকার জাকের হোসেন, পাগরিল বিল এলাকার নূরুল আবচার, বালুরচরের রুহুল আমিন, কমর উদ্দীন ও রোজিনা আকতারের বিরুদ্ধে চকরিয়া সিনিয়র জুড়িসিয়াল আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। এই মামলায় দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন আলী আহামদসহ অন্যান্য আসামীরা। সর্বশেষ গত ১৫ মার্চ এই মামলায় আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পরোয়ানার ভিত্তিতে সোমবার (২৮ মার্চ) আদালতে আত্মসমর্পণ করেন আলী আহামদ ও মাইজপাড়ার এলাকার জামাল আহামদের মেয়ে অপর আসামী রোজিনা আকতার। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে আলী আহামদকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং রোজিনা আকতারকে অন্তর্বর্তী জামিন দিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আলী আহামদ ও তার সিন্ডিকেট মিলে দীর্ঘদিন ধরে ডুলাহাজারার বিভিন্ন এলাকায় হত্যা চাঁদাবাজি, জমি জবর দখল, সরকারি বনের গাছ চুরি, অবৈধ বালি উত্তোলন, সন্ত্রাসী কার্যকলাপসহ নানা অপরাধ সংঘটিত করে আসছে। এসব অপরাধের দায়ে আলী আহামদ ও তার সিন্ডিকেট সদস্যদের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, বনসহ বিভিন্ন ধারায় এক ডজনের বেশি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। তবে আরো মামলা থাকতে পারে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। সর্বশেষ সরকারি জায়গার বালু করতে গেলে বাধা দেন স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হামজা। বাধা দেয়ায় তার উপর হামলা ও মিথ্যা দায়ের করে আলী আহামদ। পরে সার্বিক বিষয়ে অবগত হয়ে উপজেলা প্রশাসন আলী আহামদ ও তার সিন্ডিকেট সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
ভুক্তভোগী হামিদুল হক জানিয়েছেন, জালিয়াতির মাধ্যমে জমি ক্রয়ের দাবি করে আলী আহামদ ও তার লোকজন ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি হামিদুল হকের শত বছরের ভোগ দখলীয় বসতবাড়ি ও ভিটা অস্ত্রের মুখে দখল করে। এই ঘটনায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী হামিদুল হক। মামলা হলেও দীর্ঘদিন তারা প্রকাশ্যের ঘুরে বেড়ান। এমনকি ভুক্তভোগীদের হুমকি প্রদর্শন করেন। সেই থেকে হামিদুল হকের বসতবাড়িও দখল করে আছে। মূলত যুবলীগের নাম ভাঙিয়ে এলাকায় প্রভাব কাটিয়ে অপকর্ম করে এসেছে আলী আহামদ। আলী আহামদ কারাগারে যাওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী। অন্যান্য আসামীরা এখনো প্রকাশ্যের ঘুরছে। তাদেরও গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জন্য চকরিয়া থানা পুলিশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, ভুক্তভোগী হামিদুলসহ স্থানীয়রা লোকজন।
সরকারি সম্পদ আত্মসাতের দায়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হামজাসহ শতাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আলী আহামদ ও তার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানা গেছে।