এস.এম.জুবাইদ,পেকুয়া:
কক্সবাজারের পেকুয়ায় এক হাতুড়ে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় হাসপাতালের বেডে পাঞ্জার সাথে লড়ছে কুলছুমা বেগম (৪০) নামের এক গৃহবধূ। সে উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের মরিচ্যাদিয়া এলাকার মো.ইউনুসের স্ত্রী।
জানা যায়, পেকুয়ার মগনামা ইউনিয়নের কাজী মার্কেট এলাকায় লাব্বাইক মেডিকেল হল নামক এক চেম্বার খুলে রোগী দেখেন সাইফুল ইসলাম নামের এক পল্লী চিকিৎসক। চেম্বারের সামনে ঝুলিয়ে দেন ডাক্তার সাইফুল ইসলাম নামের একটি সাইনবোর্ডও।নামের নিচে যুক্ত লিখেছেন নানা ডিগ্রীও এবং নানা রোগের অভিজ্ঞ। মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ ও সরকারী নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে নামের আগে লিখেছেন ডাক্তার।
রোগীদের কে চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি একই চেম্বারে করেন নানান রোগের পরীক্ষা নিরীক্ষাও। অল্প মেডিকেল সার্জারির সরঞ্জাম নিয়ে সাধারণ মানুষকে আকর্ষণ করতে বেশ নিয়ে যেন বড় ডিগ্রিধারী ডাক্তার। এতে করে মগনামার কাজী মার্কেট এলাকার আশে পাশের অসংখ্য রোগীরা তার প্রতারণার শিকার হচ্ছে। এধরণের ভূল চিকিৎসা দিয়ে মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। কিন্তু এসব কিছুর পিছনে নেই কোন ডিগ্রীর বৈধ সনদপত্র কিংবা প্রয়োজনীয় অনুমতি পত্র।
এদিকে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে গৃহবধূ কুলছুমার স্বামী ইউনুছ বলেন, আমি প্রথমে স্ত্রীকে নিয়ে পেকুয়া চৌমুহনী ডাক্তার জিয়ার কাছে গিয়েছিলাম। ডাক্তার জিয়া সবকিছু দেখে আমার স্ত্রীর রক্তশুন্যতার কারনে একটি স্যালাইন লিখে দেয়। পরে ওই স্যালাইনটি দেওয়ার জন্য সাইফুলের চেম্বারে গেলে সে চার ঘন্টার স্যালাইনটি ৩০ মিনিটে শেষ করে দেন। স্যালাইনটি দেওয়ার কিছুক্ষন পরই স্ত্রীর পুরো শরীর ফুলে ডায়রিয়া শুরু হয়ে যায়। ভুল চিকিৎসার প্রতিবাদ করলে উল্টো গালিগালাজ করে পরিণতি খারাপ হবে বলে হুমকি দেয়।
তিনি আরও বলেন, ডাক্তার সাইফুল আমাকে বলেন স্যালাইন পুশ করা আমার কাজ, কোন প্রেসক্রিপশন দেখা আমার কাজ না। সে কেমন ডাক্তার একটি স্যালাইন দেওয়ার নিয়ম না জেনেও এই এলাকায় মানুষের সাথে প্রতারণা করে যাচ্ছে। এ দিকে গৃহবধূ কুলসুমাকে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত চার দিন ধরে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার অবস্থা অবনতি হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
এ দিকে এ ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপসহকারী মেডিকেল অফিসার ডা: জিয়া উদ্দিন বলেন, রোগীটা আমার কাছে আসছিল। আমি তাকে রক্তশুন্যতার কারনে একটি স্যালাইন লিখে দিয়েছি। স্যালাইনটি শরীরে সঞ্চালন হতে চার ঘন্টা সময় লাগবে। কিন্তু গ্রামের সাইফুল নামের এক হাতুড়ে ডাক্তার আমার প্রেসক্রিপশন না দেখে চার ঘন্টার এই স্যালাইনটি ত্রিশ মিনিটে শেষ করে দিয়েছে। এতে করে রোগীর অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচ ইউ) ডা: মো.মহিউদ্দিন মাজেদ চৌধুরী বলেন, মগনামা কাজী মার্কেট এলাকায় এক হাতুড়ে ডাক্তারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।