মোঃ কামাল উদ্দিন, চকরিয়া :
প্রতিদিন সারাদেশে সড়কে দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। এতে কেউ মারা যাচ্ছেন আবার কেউ গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করছেন। এসব দুর্ঘটনা এড়াতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিচ্ছেন নানা পদক্ষেপ। এরই মধ্যে চকরিয়া পৌরসভার ভাঙ্গারমুখ থেকে অলিশাহ বাজার সড়কে দেখা গেছে অন্য চিত্র। গত ১ মাস ধরে ভাঙ্গারমুখ থেকে অলিশাহ বাজার পর্যন্ত সড়কের মাঝখানে বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই সড়ক উন্নয়ন কাজ করছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন চকরিয়া পৌরসভার অধীনে কাজ পাওয়া ঠিকাদারী প্রতিষ্টান সেলিম এন্ড ব্রাদার্স। সাধারণ মানুষের সুবিধার জন্য ৪ কিলোমিটার এই সড়কটি প্রশস্ত করা হলেও সড়কের মাঝখানে থাকা হাই ভোল্টেজ বিদ্যুতের খুঁটিগুলো প্রতিনিয়ত মনে করিয়ে দেয় সড়ক দুর্ঘটনার কথা। মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) সকালে সরেজমিনে সেই সড়কটিতে দেখা গেছে, পৌরশহরের ৯নং ওয়ার্ড ভাঙ্গারমুখ থেকে অলিশাহ বাজার পর্যন্ত রাস্তা প্রশস্ত করার ফলে ১১ হাজার ভোল্টেজ সম্পন্ন বিদ্যুৎ সংযোগের প্রায় ১০-১৫টি বৈদ্যুতিক খুঁটি রাস্তার মাঝখানে পড়েছে। সড়কটি ২০-২৫টি গ্রামের সাধারণ মানুষের চলাচলের প্রধান সড়ক হওয়ায় প্রতিনিয়ত ছোট বড় যানবাহনের চাপ রয়েছে। সড়কের মাঝখানে খুঁটি থাকায় দুর্ঘটনাও ঘটছে বলে জানা গেছে স্থানীয়দের কাছে। আরও দেখা গেছে, সড়কটির নির্মাণ কাজের বক্স-কাটিং শেষে ইটের খোয়া ফেলে সেগুলো রোলার দিয়ে সমান করার (ডব্লিউভিএম) কাজ শেষ করা হয়েছে। কিন্তু সড়কে ১১ হাজার ভোল্টের তার বহনকারী বিদ্যুতের খুঁটি রয়েই গেছে। এ বিষয়ে জানতে, বাংলাদেশ পাওয়া ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল কাদের গণির সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এবিষয়ে অবগত নেই বলে জানান। তিনি চকরিয়ার আবাসিক প্রকৌশলী গিতি বসু চাকমার সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। পরে চকরিয়া আবাসিক প্রকৌশলী গিতি বসু চাকমার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রাস্তার উপর থেকে বৈদ্যুতিক খুঁটি সরানোর এখনো কোন ঠিকাদারী প্রতিষ্টান বা পৌর কর্তৃপক্ষ আমাদের সাথে যোগাযোগ করেনি এবং লিখিত কোন চিঠিও দেয়নি। লিখিত চিঠি দিলে পৌর কর্তৃপক্ষ এবং আমরা একসাথে গিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থানান্তর করতাম। এদিকে ব্যটারিচালিত অটোরিকশাচালক আবুল হাসেম বলেন, আগে রাস্তা ছোট ছিল। তখন বিদ্যুতের খুঁটি রাস্তার পাশেই ছিল চলাচলে তেমন কোনো অসুবিধা হয়নি কিন্তু এখন রাস্তা বড় করায় বিদ্যুতের খুঁটি একেবারে রাস্তার মাঝখানে চলে এসেছে। বিদ্যুতের খুঁটিগুলো তাড়াতাড়ি সরানো প্রয়োজন। না হলে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। চকরিয়া পৌরসভা ৯নং ওয়ার্ড এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল হাকিম বলেন, সড়কের কাজ শুরু হওয়ায় আমরা খুশি। তবে বিদ্যুতের পিলারগুলো এখনই সরানো উচিত। সব কাজের আগে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা প্রয়োজন। এই সড়কে যা হচ্ছে তা হলো পরিকল্পনাবিহীন কাজ। কাজ শেষে একদিকে পৌর কর্তমপক্ষ এবং ঠিকাদারী প্রতিষ্টান দায় এড়িয়ে যাবে, অন্যদিকে নানা অজুহাত তৈরি করবে বিদ্যুৎ বিভাগ। ফলে খুঁটি রয়েই যাবে। এতে দুর্ঘটনার মাধ্যমে প্রাণহানির আশঙ্কা যেমন থাকবে তেমনি সড়ক প্রশস্তকরণের কোনো সুফল আসবে না। জানতে চাইলে চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী বলেন, এই বিদ্যুতের খুটিগুলো সরানোর বিষয়ে আমি চকরিয়া ওয়াপদা বিদ্যুত অফিসের সাথে যোগাযোগ করেছি। খুব শীঘ্রই রাস্তার মাঝখান থেকে বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো সরিয়ে নেওয়া হবে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।