মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :
নিজের অদম্য ইচ্ছা শক্তি ও সময়কে কাজে লাগিয়ে সদ্য প্রকাশিত মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় স্থান করে নিয়ে ঢাকা সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ এ ভর্তির সুযোগ পেয়েছে কক্সবাজারের আদনান সোহরাওয়ার্দী। কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক, সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট আবদুল শুক্কুর ও গৃহিণী জয়নব বেগমের জ্যৈষ্ঠ সন্তান আদনান সৌরাওয়ার্দী।
আদনান সোহরাওয়ার্দী ভর্তি পরীক্ষায় মেরিট স্কোর ২৮০’৭৫ পেয়ে জাতীয় মেধা তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনা পরিস্থিতিতে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে গত কয়েকমাস নিজ বাড়িতেই রাত-দিন কঠোর পরিশ্রম করে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করেন তিনি। তার সাফল্যে খুশি পরিবারের সবাই। মেধাবী শিক্ষার্থী আদনান সোহরাওয়ার্দী’র এমন অভাবনীয় সাফল্যের খবরে আনন্দের জোয়ার বয়ে যাচ্ছে পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু -বান্ধব, এলাকাবাসী, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মাঝে।
অদম্য মনোবল সম্পন্ন আদনান সোহরাওয়ার্দী ইতিপূর্বে কক্সবাজার সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৯ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সর্বোচ্চ ১২১১ নাম্বার নিয়ে জেলায় প্রথম হয়ে মেধার স্বাক্ষর রেখেছে। আদনান সৌরাওয়ার্দী একই স্কুল থেকে জেএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে টেলেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছিল। একইভাবে কক্সবাজার মডেল কেজি স্কুল থেকে সে পিএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ এবং টেলেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছিল। এইচএসসি পরীক্ষার ঢাকা কলেজে ২০২১ সালে গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়েছে। এরপর ঢাকা বোর্ড কতৃক ঘোষিত সরকারের জাতীয় মেধা তালিকায় বৃত্তি পেয়েছে আদনান সোহরাওয়ার্দী।
আদনান সৌরাওয়ার্দী টেকনাফ উপজেলার মধ্য হ্নীলার সাতঘরিয়া পাড়ার মরহুম হাজী সুলতান আহমেদ ও কক্সবাজার শহরের নতুন বাহারছরা নিবাসী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবদুর রশিদ সওদাগরের নাতি।
মেধাবী শিক্ষার্থী আদনান সোহরাওয়ার্দী’র ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন ছিল সে চিকিৎসক হবে, একজন মানবিক মানুষ হবে। তার সেই কাঙ্খিত স্বপ্ন এখন বাস্তবায়নের পথে।
শিক্ষা জীবনে তার ধারাবাহিক ভাবে সাফল্যের জন্য তিনি সকল শিক্ষক, বন্ধু-বান্ধব ও শুভকাঙ্খীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ এ ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া আদনান সোহরাওয়ার্দী তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, শৈশব থেকে স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হব। আমার চেষ্টা, শিক্ষকদের অক্লান্ত পরিশ্রম, অভিভাবকদের সহযোগিতা সব কিছুর সমন্বয়ে সাফল্য এসেছে। আমার জন্য বাবা-মা খুব কষ্ট করেছেন। তাদের প্রচেষ্টা আর পরিশ্রম কাজে লেগেছে। স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে, কেমন লাগছে ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। তবে আজকে এই পর্যন্ত আসার পেছনে বাবা-মায়ের ইচ্ছা ছিল সরকারি মেডিকেলে কলেজে চান্স পাওয়ার। নিজেরও প্রত্যাশা ছিল। সেটি পূরণ করতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। চিকিৎসক পেশা মানুষকে সেবা করার মোক্ষম সুযোগ। বাবা-মা’র পাশাপাশি সকল আত্মীয় স্বজন এবং শিক্ষকদের অবদানের কারণে আমি এই পর্যন্ত আসতে পেরেছি। অনেক বড় চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন তার। যেতে চান অনেক দূর।ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ এ ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়ায় মহান আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া জ্ঞাপন করে ভবিষ্যতে আরো সাফল্যের জন্য সকলের দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেন আদনান সোহরাওয়ার্দী।
আদনান সোহরাওয়ার্দী’র বাবা
এডভোকেট আবদুল শুক্কুর ও মা জয়নব বেগম তাঁদের সন্তানের সাফল্যের ব্যাপারে বলেন, ছেলেকে ডাক্তার বানানোর স্বপ্ন ছিল। সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে, খুবই ভালো লাগছে। আমরা শুধু ওর প্রতিভা বিকাশে সহযোগিতা করেছি। সবার কাছে আমাদের সন্তানের জন্য দোয়া চাই। সে যেন মানবিক চিকিৎসক হয়ে এদেশের মানুষের সেবা করতে পারে। তার লেখাপড়ার পেছনে ও ভাল রেজাল্টের জন্য পরিবারের প্রত্যেক সদস্যদের অবদান রয়েছে। বিশেষ করে শিক্ষকদের পরিশ্রম ও তাদের প্রচেষ্টার কারণে সে আজ এই পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছে। অনেক কষ্ট করে হলেও ছেলের ভবিষ্যৎ গড়ার উদ্যোগ নিয়েছি। তাদের সন্তান ভর্তিতে মেধা তালিকায় স্থান করে নেয়া এটা ভাবতেই তাঁরা পুলকিত, আনন্দিত ও গর্বিত বলে জানান। আদনান ভবিষ্যতে যেন একজন নিখাঁদ ভালো মানুষ এবং মানুষের কল্যানে নিবেদিত হয় ও তাঁর স্বপ্ন যেন সফল হয়, সেজন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করছেন-আদনান এর গর্বিত পিতা এডভোকেট আবদুল শুক্কুর ও মা জয়নব বেগম।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।