রাজু দাশ ,চকরিয়া :
কক্সবাজারের চকরিয়ায় জমে উঠেছে ঈদ বাজারে কেনাকাটা। ঈদের দিন যতোই ঘনিয়ে আসছে বিপণি বিতানে মানুষের স্রোত বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির কারণে গত দু বছরে ঈদের বাজারে কোনো উৎসবের আমেজ ছিলো না। করোনা মহামারিকে মোকাবেলা করে বিজয়ের বেশে আবারও কর্মচাঞ্চলতায় ফিরেছে। গত দু বছর পর মানুষ ঈদুল ফিতরের উৎসবের আমেজে স্বাভাবিকভাবে ফিরে এসেছে। যার কারণে ঈদের বাজারে সাধারণ মানুষের প্রতিদিন ভীড় বেড়েই চলেছে।

সোমবার (২৫ এপ্রিল) পৌর শহরের বিভিন্ন মার্কেটগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, সকাল ৯ টায় থেকে ক্রেতা সমাগম হতে শুরু হয়। বেশিরভাগ ক্রেতা, শাড়ি, থ্রি-পিস, লেহেঙ্গা, উড়না, প্যান্ট পিস, শার্ট পিস ইত্যাদি মার্কেটগুলোতে বেড়েছে ক্রেতাদের চাপ। ক্রেতাদের ভীড় সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন দোকান মালিক ও শ্রমিকরা। আনোয়ার শপিং সেন্টার মনে রেখা, সৌদিয়া বস্ত্র বিতান, মেগা আার্ট, সোনালী ফ্যাশন, ডে টু ডে, ফ্যাশন হাউজ, পরেশ মনি, চমক ফেব্রিক্সসহ উন্নতমানের ব্রান্ডের দোকানগুলোতেও ভীড় দেখা গেছে চোখে পরার মতো।

ওয়েস্টার্ন প্লাজা কসমেটিক্স দোকানগুলোতে দেখা গেছে, আইলানার ৮০ টাকা, মাশকারা ৭০ টাকা, নেইলপলিশ ৫০ টাকা থেকে ৮০ টাকা, ঝুমকা ৭০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা, মালা ৫০ থেকে ১৫০ টাকা, নূপুর ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বালা ১০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চকরিয়া নতুন নির্মিত জনতা শপিং সেন্টার মার্কেটে বাহিরে ভীড় শুধু দেখা যায়। তবে ভেতরে ক্রেতাদের সংখ্যা খুব কম। অনন্য মার্কেট থেকেই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনছেন। এ মার্কেটে প্রত্যেকটা ব্যবসায়ীরা লক্ষ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। তবে ক্রেতাদের পণ্য কেনার চাহিদা কম।

এদিকে ঈদের বাজারে ছোট বাচ্চাদের কাপড়ের চাহিদার মেটার পর ভিড় করছে খেলনার দোকানে।
জারা সপ দোকনে মালিক প্রফেসার সাহাবউদ্দীন জানান, প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ টি করে রিমোর্ট কন্ট্রোল ভেকু ৬০ থেকে ৬৫০ টাকা, রিমোর্ট কন্ট্রোল হেলিকপ্টার ৩৫০ টাকা, হ্যাকার মুখোশ ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কাকারা ইউনিয়ন গৃহিনী শাবনুর আক্তার জানান,
ঈদের বেশ কিছুদিন বাকি থাকলেও তিনি আগে ভাগেই এসেছেন, দাম কম পাওয়ার আশায়। কন্যাশিশুর জন্য নতুন জামা ও ভাগনির জন্য থ্রি-পিস কিনতে এসেছেন। তবে তিনি বেশ কয়েকটি দোকানে ঘুরে অভিযোগ করেন, দাম অনেক বেশি নেওয়া হচ্ছে। থ্রি-পিস ১ হাজার ৫শ থেকে ৬শ টকায় পাওয়া যায় সে দোকান গুলোতে এখানে ৩ হাজার ৫শ টাকার উপরে বিক্রি হচ্ছে।

নিউ মার্কেট বিক্রেতারা জানিয়েছেন, ঈদের দিন যত বাড়ছে ক্রেতার সমাগম তত বাড়ছে। তবে অনেকেই পন্যের দাম কম পাওয়ার আশায় আগে ভাগেই মার্কেটে এসেছেন। ক্রেতাদের পক্ষ থেকে দাম বেশির ব্যাপারে তিনি জানান, ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন পোষাকে দাম সামান্য বেশি মনে হতে পারে। তবে ক্রেতা সমাগম ঘটছে প্রচুর। এ বছর টি-শার্ট, সুতি পাঞ্জাবী, জিন্সের প্যান্ট, শাড়ি ও মেয়েদের বিভিন্ন থ্রি-পিস বিক্রি হচ্ছে বেশি। এর মধ্যে মেয়েদের জারারা, গ্রাউন, লাহিঙ্গা, ডালিসহ বিভিন্ন নামের পোষাকের চাহিদা রয়েছে বেশি।
তিনি আরো বলেন, এবার যেভাবে বেচাবিক্রি বেড়েছে তা ঈদ পর্যন্ত চললে গত দুইবছর করোনার যে ক্ষতি হয়েছে তা অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।

পৌরশহরে ওয়েস্টার্ন প্লাজা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক বলেন, প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ কোরানা ভাইরাসকে উপেক্ষা দীর্ঘ ২ বছর পর মহিলারা গৃহবন্দি থাকার পর শ্বাস ছেড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে আসতে পেরে মহা খুশি তারা। মহা আনন্দে পৌরশহরে মার্কেটে ও ফুটপাতের দোকানগুলোতে কেনাকাটার জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন। আমরা ব্যবসায়ীদের ব্যবসা যাতে নিবিঘ্নে করতে পারে প্রশাসন বিদ্যুৎ ও যানজট নিয়ন্ত্রণে সর্বদাই কাজ করে যাচ্ছে।