সময়নিউজ:

রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় করা পুলিশের মামলায় বিএনপির মৃত নেতাকেও আসামি করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন দলটির আইনজীবীরা।

মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) ওই ঘটনায় আটক হওয়া বিএনপির ১৪ নেতাকর্মীকে আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ সময় এমন তথ্য জানান আইনজীবীরা।

বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ জামিন আদেশ দেন।

দলটির আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, এ মামলার ২৩ নম্বর আসামি মিন্টু দুই বছর আগে মারা গেছেন। আর চার নম্বর আসামি টিপু সাত বছর ধরে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন। শুধুমাত্র বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে তাদের আসামি করা হয়েছে।

আগাম জামিন পাওয়া নেতাকর্মীরা হলেন- আমীর হোসেন আলমগীর, মিজান, হাসান জাহাঙ্গীর মিঠু, হারুন হাওলাদার, শাহ আলম সন্টু, শহীদুল ইসলাম শহীদ, জাপানি ফারুক, মিজান ব্যাপারী, আসিফ, রহমত, বিল্লাল, মনির, জুলহাস ও বাবুল।

এ মামলায় গত ২৩ এপ্রিল বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিউমার্কেট থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) হালদার অর্পিত ঠাকুর আসামিদের আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, গত ১৯ এপ্রিল রাত পৌনে ১টা থেকে রাত ২টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত অজ্ঞাতনামা ৬০০-৭০০ জন ঢাকা কলেজের ছাত্র এবং নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীসহ অজ্ঞাতনামা ২০০-৩০০ জন ব্যবসায়ী ও কর্মচারী নিউমার্কেট থানাধীন চন্দ্রিমা মার্কেটের সামনে পুলিশের সরকারি কাজে বাধা দেয়। তারা পুলিশের ওপর আক্রমণ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে জখম, ভাঙচুর করার অপরাধ করেছে।

মামলার সুষ্ঠু তদন্ত, মূল রহস্য উদ্‌ঘাটন, এজাহারভুক্ত আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আসামিদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে গ্রেফতারের লক্ষ্যে আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

এর আগে ২২ এপ্রিল শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডির বাসা থেকে মকবুল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়।

গত ১৮ এপ্রিল রাত ১২টার দিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের সংঘর্ষ হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা চলে এ সংঘর্ষ। এরপর রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও ১৯ এপ্রিল সকাল ১০টার পর থেকে ফের দফায় দফায় শুরু হয় সংঘর্ষ, যা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: বিএনপির এহসানুল হক মিলনের ওপর হামলা

এ ঘটনায় উভয়পক্ষের অর্ধশতাধিক আহত হন। সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত দুজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তাদের একজন ডেলিভারিম্যান, অন্যজন দোকান কর্মচারী। ডেলিভারিম্যান নাহিদের নিহতের ঘটনায় বাবা মো. নাদিম হোসেন বাদী হয়ে নিউমার্কেট থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মোরসালিনের ভাই বাদী হয়ে আরও একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এদিকে এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা করে। একটি মামলা বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে এবং অন্যটি পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে। দুই মামলাতে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী, কর্মচারী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীসহ মোট ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।