ইমাম খাইর
ঈদের প্রথম দিনেই কক্সবাজারে রেকর্ড পরিমাণ পর্যটক সমাগম ঘটেছে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে কঠোর ব্যবস্থা। কাজ করছেন ৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
ঈদের দিন স্থানীয় ও পর্যটকদের উপস্থিতিতে মুখর লাবণী, সুগন্ধা ও ইনানী বিচ। তবে আবাসিক হোটেলগুলো তেমন বুকিং হয়নি। অনেকটা ফাঁকা। তবু ব্যবসায়ীরা দেখছেন নতুন আশার আলো।
করোনা পরিস্থিতি ভালো হওয়ায় পুরোদমে পর্যটকের ভিড় লাগা শুরু হয়েছে সমুদ্রশহরে।
একইসঙ্গে অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে এবার ঈদের সরকারি ছুটিতে কক্সবাজারে কয়েক লাখ পর্যটকের সমাগম হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবারের ঈদে পর্যটনের শেষ মৌসুমের ইতি টানছেন। তবে এই ঈদে আশানুরূপ পর্যটক আসলে ক্ষতি পুষিয়ে লাভের আশার মুখ দেখছে তারা।
কক্সবাজার কলাতলী মেরিন ড্রাইভ হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান জানান, ঈদের দিন দুপুরের দিকে সৈকতের লাবণী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে পর্যটক ভিড় বাড়ে। তবে দর্শনার্থীদের অধিকাংশই স্থানীয়। তারা ঈদের ছুটিতে মনের সুখে বেড়াতে ছুটে আসেন সৈকতে। করোনাকালীন ব্যবসায় যে লোকসান হয়েছে এইবার তা কেটে উঠবে বলে ধারণা তার।
ঈদের প্রথম দিন সৈকতে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ এসেছেন বলে ধারণা স্থানীয়দের।
উত্তম দত্ত নামক পর্যটক জানান, তিনি ঈদের ছুটি কাটাতে চট্টগ্রাম থেকে সপরিবারে বেড়াতে এসেছেন। দুদিন বেড়িয়ে মহেশখালীর তীর্থ হয়ে বাড়ি ফিরবেন।
সরেজমিনে দুপুরে সৈকতের বেশ কয়েকটি পয়েন্টে দেখা যায়, মানুষ আর মানুষ সমুদ্রস্নান সারছেন। সুগন্ধা, সিগাল, লাবণীসহ সব পয়েন্টেই পর্যটকের ভিড়। তবে সবচেয়ে বেশি ভিড় লাগে কলাতলী পয়েন্টে। বিকালের দিকে গোটা সৈকতজুড়ে সবমিলিয়ে ৫০ হাজারের মতো মানুষ জড়ো হয়।
প্রতিটি হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউজে ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়েছে। এরমধ্যে তারকা মানের হোটেলগুলোতে বুকিং বেশি হয়েছে।
ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টুয়াক) সাধারণ সম্পাদক এ.কে.এম মুনিবুর রহমান টিটু জানান, বিপুল মানুষ সমাগম হলেও হোটেল-মোটেলগুলো পুরোপুরি বুকড হয়নি। তবে বুধবারের জন্য বেশিরভাগ হোটেল-মোটেলই বুকড হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে কতজন পর্যটক বেড়াতে আসবে তার সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া মুশকিল। তবে আমাদের ধারণা করোনা পরিস্থিতি ভালো হওয়ায় এবার বিপুল মানুষ কক্সবাজারে বেড়াতে আসছেন।’
ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিম বলেন, ‘পর্যটকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শতভাগ নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি পর্যটন কেন্দ্রে রাতদিন টহলে থাকবে ট্যুরিস্ট পুলিশ।’
এদিকে, সম্প্রতি কক্সবাজারে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে সৈকতসহ হিমছড়ি, ইনানী, রামু, মহেশখালী ও আশপাশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ‘ঈদের পরের সাত দিন পর্যন্ত কক্সবাজার জেলাজুড়ে পুলিশের বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকবে। এ জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’
এদিকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবনী, সুগন্ধা, কলাতলী পয়েন্টসহ অন্যান্য পর্যটন এলাকায় অপরাধ প্রতিরোধের নিমিত্তে ৪ জন সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
গত ২ মে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মামুনুর রশীদ মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯ অনুযায়ী এ নির্দেশ দেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ ২ মে থেকে ৯ মে পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করবেন। দায়িত্ব পালনকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটবৃন্দ হলেন, কাজী মোঃ মাহমুদুর রহমান, সৈয়দ মুরাদ ইসলাম, আরাফাত সিদ্দিকী ও নিরুপম মজুমদার। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা শেষে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।