মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাসান মাহমুদ বলেছেন, ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণকারিরা দলের জন্য ক্ষতিকারক। কয়েকজন নেতাকর্মীর আচরণে আওয়ামী লীগের প্রতি মানুষ ভীত হবে, তা কখনো হতে দেওয়া যাবে না। দলীয় স্বার্থে তাদের বর্জন করতে হবে। দলে চাঁদাবাজ-দখলবাজদেরও কোন স্থান হবেনা।

শুক্রবার ৬ মে বিকেলে কক্সবাজার হিলডাউন সার্কিট হাউসে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যকালে তিনি এ কথা বলেন।

জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ আরো বলেন, সবাই এখন আওয়ামী লীগ করতে চায়, সবাই এখন নৌকায় উঠতে চায়। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায়ে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে সবাইকে আওয়ামী লীগের নৌকায় তোলার প্রয়োজন নেই। কারণ, যারা আওয়ামী লীগের নীতি-আদর্শ বিশ্বাস করে না, যারা পিঠ বাঁচানোর জন্য অথবা সুবিধা ভোগের জন্য অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে নৌকায় উঠতে চায়, তাদেরকে আওয়ামী লীগে কোন দরকার নেই।

মন্ত্রী বলেন, সমাজে যারা ধিকৃত, মাদক চোরাকারবারি, জমি দখলের সাথে জড়িত, চাঁদাবাজি বা অন্য অপকর্মের সাথে জড়িত, তাদেরকে আওয়ামী লীগে প্রয়োজন নেই। সারাদেশে আওয়ামী লীগ অত্যন্ত শক্ত ভিতের উপর দাঁড়িয়ে আছে। সুতরাং, নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থেকে নিষ্ঠার সাথে কাজ করলে আগামী নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের ধস নামানো বিজয় হবে।

তিনি বলেন, গত সাড়ে তের বছরে দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। প্রতিটি মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন হয়েছে। অথচ বিএনপি এই উন্নয়নের জোয়ার চোখে দেখে না। তিনি বলেন, বিএনপির রাজনীতি হচ্ছে, দেশবিরোধী অপশক্তিকে সাথে নিয়ে মিথ্যাচার আর গুজব রটানো।

মন্ত্রী বলেন, করোনাকালে বিএনপি, জামায়াতকে দেখা যায়নি। অন্য কোনো দলকেও দেখা যায়নি। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। করোনাকালীন নানা ধরনের সহায়তা দিয়েছে।

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করেছে। এটি করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের কয়েক হাজার নেতাকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির পাঁচজন নেতা মৃত্যুবরণ করেছেন। জাতীয় সংসদের অনেক সদস্যর মৃত্যু হয়েছে। অন্যকোনো দলের ক্ষেত্রে এই রকম হয়নি।

তিনি বলেন, এবার মানুষ অত্যন্ত আনন্দ-উল্লাসের সাথে নিরাপদে গ্রামে গিয়ে ঈদ উদযাপন করেছে, এটি অভাবনীয়। অথচ মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, তার উল্টো কথা। কারণ, তাদের কাজ হচ্ছে মিথ্যাচার করা। মিথ্যাচারের মধ্যেই তাদের রাজনীতি সীমাবদ্ধ।

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে হাছান মাহমুদ বলেন, যেভাবে দেশের অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে, তা জননেত্রী শেখ হাসিনার যাদুকরী নেতৃত্বের কারণে সম্ভব হয়েছে। সরকারের এই সাফল্যগুলো জনগণের কাছে তুলে ধরতে হবে। বিএনপি-জামায়াত যে অপপ্রচার করছে তার বিরুদ্ধে জনগণের কাছে সত্য প্রচার করতে হবে।

তিনি বলেন, দলের প্রতি যাদের ত্যাগ আছে, নিষ্ঠা রয়েছে, দলের দুঃসময়ে যারা দলের প্রতি অবিচল আস্থা রেখেছে তাদেরকে দলীয় নেতৃত্বের আসনে বসাতে হবে।

মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু-ঈদগাহ) আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি রেজাউল করিম, কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আবছার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল হক মুকুল, জেলা যুবলীগের সভাপতি সোহেল আহমদ বাহদুর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ ২ দিনের কক্সবাজার সফর শেষে শুক্রবার বিকেলে বিমানযোগে কক্সবাজার ত্যাগ করেন।