চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:

চট্টগ্রাম নগরীর মুরাদপুর বিবিরহাট ও কর্ণফুলীর মইজ্জ্যারটেক পশুরহাটে রয়েছে ছোট বড় সব সাইজের গবাদিপশু। কিন্তু কেনাবেচা হচ্ছে খুবই কম। ক্রেতা বিক্রেতা ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, বেশির ভাগ ক্রেতারা ছুটির দিন শুক্রবারে গরু-মহিষ ও ছাগল কেনার পরিকল্পনায় রয়েছেন। এজন্য বিক্রেতারাও অলস সময় পার করছেন। চারদিন আগে ৩০টি দেশি জাতের গরু নিয়ে এসেছেন মইজ্জ্যারটেক গরুর বাজারে। গরুগুলো তিনি নিজস্ব খামারে লালন-পালন করেছেন। মাত্র ৩টি গরু বিক্রি করেছেন মুন্সি মিয়া।

কর্ণফুলী উপজেলার মইজ্জ্যারটেক এলাকার গরুর বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সাতকানিয়া-লোহাগড়া, চুনতি, খাগড়াবাড়ি, রাঙামাটি, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া থেকে নিজস্ব খামারে পালন করা গরু নিয়ে এসেছেন বেপারিরা। এছাড়া উত্তরবঙ্গ থেকেও কিছু গরু এসেছে। ভারতীয় গরুর তেমন আধিক্য নেই এই বাজারে। সাতকানিয়া থেকে ৫০টি গরু নিয়ে এসেছেন মো. সাজ্জাদুর রহমান। ৬ মাস আগে তিনি একটি গরু কিনেছিলেন ১ লাখ ১৫ হাজার টাকায়। সেই গরু মইজ্জ্যারটেক বাজারে মাত্র ৯৫ হাজার টাকা দাম চাচ্ছে। যার কারণে তিনি খুব অসন্তুষ্ট। গরুগুলো বিক্রি না হলে বিরাট লোকসানে পড়বেন তিনি, আছে এমন দুশ্চিন্তাও।

রাউজান থেকে আসা মোহাম্মাদ নবী বলেন, আমরা নিজেরাই দেশিয় গরু লালন-পালন করে থাকি। এ বছর প্রায় সবকটি গরু দেশিয়। কিছু গরু আছে যেগুলো ভারতীয় জাতের। মইজ্জ্যারটেক গরুর বাজারের ইজারাদার আব্দুল শুক্কুর বলেন, এখনো তেমন বেচাকেনা শুরু হয়নি। খুব কম বিক্রি হচ্ছে। আমাদের এখানে ১৫ হাজার গরু আছে। সব দেশি জাতের গরু। অল্পকিছু ভারতীয় জাতের গরু আছে। আশাকরি শুক্রবারে বেচাকেনা বাড়বে।

বিবিরিহাটের স্থানীয় পারভেজ প্রতিবছরের মত এবছরও ২২টি গরু নিয়ে এসেছেন বিক্রির জন্য। এর সবই মাঝারি ও বড় সাইজের গরু। ৭৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২ লাখ টাকা দামের গরু রয়েছে তার কাছে। পারভেজ জানান, ২২টি গরুর মধ্যে তার ১০টি গরু বিক্রি হয়ে গেছে। আশা করি শুক্রবার থেকে হাট জমে উঠলে তার সবগুলো গরুই বিক্রি হবে।

গরু ব্যবসায়ি বেল্লাল হোসেন বাবর ১৭টি গরুর বিক্রির জন্য এসেছেন কুমিল্লা ব্রাক্ষণপাড়া থেকে। ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকায় একটি বিক্রি করেছেন। তার কাছে নেপালি, শাহীওয়ালা, অস্ট্রেলিয়ান জাতের গরু রয়েছে। গরুগুলোর দাম হাঁকছেন ৮৫ হাজার থেকে শুরু করে ৬-৭ লাখ টাকা। ইমন সওদাগর হাটে এনেছেন ২৭টি গরু। এর মধ্যে ১০টি বিক্রি হয়ে গেছে। শাহীওয়াল, ফিজিয়ান ও দেশি জাতের গরু তিনি বিক্রি করছেন। তার গরুগুলোর দাম ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে ৩ লাখের মধ্যে। আমি এ দামেই গরু বিক্রি করব। তবে শুক্রবারে হাট জমলে বোঝা যাবে দাম এটাই থাকবে, নাকি আরো বাড়বে?

বিরিহাট গরুর বাজার পরিচালনা কমিটির পরিচালক মো. ফয়সাল বলেন, আমরা স্বাস্থ্যবিধি পালন করে হাট পরিচালনা করে আসছি। হাটে ক্রেতা ও বিক্রেতার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। ব্যাপারিদের যেকোন সমস্যা হলে তাৎক্ষণিক সমাধান করার চেষ্টা করা হচ্ছে। হাটে খাবার পানির সংকট দূর করা হবে।