জালাল আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীকে যৌন নিপীড়ন এবং ছাত্রলীগ কর্তৃক নির্যাতিত ছাত্রীকে বাধা দেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, কেন্দ্রীয় কমিটি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতারা।
আজ ২১ জুলাই (২০২২) বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে
ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামীন মোল্লা বলেন, “ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে সন্ত্রাস, চাদাবাজী ও ধর্ষণের আখড়া বানিয়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি করে ৫ জন মিলে তার ভিডিও ধারণ করেছে। চবি শাখা ছাত্রলীগের নেতারা সেই ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে। প্রক্টরের কাছে অভিযোগ দিতে গেলে চবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রুবেল বাধা প্রদান করে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা এই নিপীড়নের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন করছে, আমরা তাদের সাথে আছি। ২৪ ঘন্টার ভিতরে এই কালপ্রিটদের গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনা না হলে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিবাদের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ জ্বলে উঠবে। ছাত্রলীগের এক সময়ের গৌরবউজ্বল ইতিহাস থাকলেও আজ তারা সন্ত্রাসী চাদাবাজী আর ধর্ষণের যে মহামারী সারা দেশে ছড়িয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধ গড়ে তোলা এখন সকলের নৈতিক দায়িত্ব হয়ে দাড়িয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বলতে চাই, আমাদের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগের একটি হচ্ছে আপনি একজনকে শিক্ষামন্ত্রী বানিয়েছেন যার নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। এমন একজনকে শিক্ষা উপমন্ত্রী বানিয়েছেন যার অনুসারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাদাবাজী আর মাদকের সিন্ডিকেট চালায় এবং ধর্ষণের চক্র গড়ে তুলে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতারা টাকা নিয়ে শিক্ষার্থীদের হলে তুলে, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সেঞ্চুরি মানিকের কথা এখনো কেউ ভুলে নাই। দুর্নীতির দায়ে শোভন- রাব্বানীর পতনের কথা মনে আছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নির্মাণকজে চাঁদাবাজী করতেছে। নিজের সহকর্মীদের কে কু প্রস্তাব দেয়।
ধৈর্যের একটা সীমা আছে । আমাদের মা- বোনদের গায়ে হাত দিবে ,সেটাও আমরা সহ্য করবো এমনটা কখনো সম্ভব নয়। এই জানোয়ারদের জনসমক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন,”যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী নির্যাতনের সাথে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা জড়িত থাকে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতা মানিক শতাধিক মেয়ে কে ধর্ষণের সাথে জড়িত ছিলেন। সিলেট এমসি কলেজে গৃহবধূকে গণধর্ষণের সাথে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জড়িত ছিলেন ।২০১৫ সালের ঢাবি ও জাবিতে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে মহিলাদের কে যৌন নিপীড়নের সাথে ছাত্রলীগ জড়িত ছিল। এখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের সাথে জড়িতদের আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার না থাকলে সকল ক্যাম্পাস এবং জেলায় আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে ”।
এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ তরিকুল ইসলাম,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ আকরাম হোসেন, সহ-সভাপতি আসিফ মাহমুদ,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী নুসরাত জাহান প্রমুখ।
এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং কেন্দ্রীয় কমিটির শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।