জালাল আহমদ,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খানকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বাসা ছাড়ার অন্যায্য নোটিশ প্রদানের নিন্দা জানিয়েছেন।
তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খানকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দেওয়া বাসার ছাড়ার নোটিশ কে “অমানবিক” বলে উল্লেখ করেছেন।
বিএনপি মহাসচিবের বিবৃতি:
২১ জুলাই (২০২২) বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপির সহ দফতর সম্পাদক মুহাম্মদ মুনির হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “১৯৭৩ সালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষক স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের অধিকার রাখেন। সেই অনুযায়ী বিভিন্ন সময় পত্রিকায় বিভিন্ন নিবন্ধ প্রকাশিত হতে থাকে। এরূপ একটি নিবন্ধের দায়ে অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খানকে অন্যায়ভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। বিষয়টি সুরাহার জন্য তিনি উচ্চ আদালতের স্মরণাপন্ন হয়েছেন। যা এখনও আদালতে বিচারাধীন। বিষয়টি আদালতে চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই তাকে বাসা ছাড়ার নোটিশ দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, অধ্যাপক মোর্শেদ হাসানের ক্যানসার আক্রান্ত স্ত্রী ও শিশু কন্যাকে নিয়ে বাসা ত্যাগের নির্দেশটি একটি অমানবিক আচরণ।
বিএনপি মহাসচিব অবিলম্বে এহেন অমানবিক নির্দেশ প্রত্যাহার করার দাবী জানান।
ঢাবি ছাত্রদলের নিন্দা ও প্রতিবাদ:
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আক্তার হোসেন এবং সদস্য সচিব মোঃ আমান উল্লাহ আমান এক বিবৃতিতে অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান কে “বাসা ছাড়ার বিষয়ে” ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত নোটিশ কে “অবৈধ এবং অমানবিক” বলে উল্লেখ করেছেন।
তারা বলেন, ” যে বিদ্যাপীঠের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এই দেশের গণমানুষের কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠায় রক্ত দিয়ে বাক স্বাধীনতা এনেছে, সেই বিদ্যাপীঠে একটা নিবন্ধ লেখার জন্য ‘চাকরিচ্যুত করা এবং নির্দয়ভাবে বাসা ছাড়তে বলা’ সমগ্র দেশের মানুষের বাক স্বাধীনতার প্রতি হুমকিস্বরূপ”।
ছাত্রদল নেতৃবৃন্দ অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খানের উপর নিপীড়ন বন্ধ করে অবিলম্বে তাকে ‘চাকরিতে পুনর্বহাল’ করার দাবি জানান।
এর আগে গত ৭ জুলাই বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন “সাদা দল” এর নেতৃবৃন্দ অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান কে বাসা ছাড়ার বিষয়ে প্রদত্ত নোটিশ ‘প্রত্যাহারের’ দাবিতে এর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর মুহাম্মদ আখতারুজ্জামানকে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন।
গত ৬ জুলাই “ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব) এর প্রেসিডেন্ট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য অধ্যাপক ডঃ এবিএম ওবায়দুল ইসলাম এক বিবৃতিতে বাসা ছাড়ার বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত নোটিশ কে “অত্যন্ত অগ্রহণযোগ্য, নজিরবিহীন এবং অমানবিক” বলে উল্লেখ করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ২০১৮ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত নিবন্ধে “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কটুক্তি এবং ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে” ২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ডঃ মোর্শেদ হাসান খান কে চাকরিচ্যুত করা হয়। পরে তিনি ন্যায়বিচার চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন দায়ের করেন। বিষয়টি এখনো উচ্চ আদালতে বিচারাধীন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।