ছবি : বাম থেকে সাক্ষী শহীদ উদ্দিন, সাক্ষী আবুল কালাম, এপিপি এডভোকেট জিয়া উদ্দিন আহমদ, অতিরিক্ত পিপি এডভোকেট মোজাফফর আহমদ হেলালী, পিপি এডভোকেট ফরিদুল আলম ও সাক্ষী নবী হোসেন।
মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :
চাঞ্চল্যকর মেজর (অব:) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় সাক্ষ্য গ্রহনের ষষ্ঠ দফার প্রথম দিনে সোমবার ২৫ অক্টোবর একদিনে নিহত সিনহার সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরিকারী, জব্দ তালিকার সাক্ষী সহ মোট ৮ জন আদালতে জবানবন্দী ও আসামীদের পক্ষে জেরা সম্পন্ন হয়েছে। সাক্ষ্য ও জেরার জবাব দেওয়া সাক্ষীরা হলেন-নিহত সিনহার সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরিকারী তৎকালীন কক্সবাজার সদর মডেল থানার পুলিশের এসআই মোঃ আমিনুল ইসলাম ও একই থানার কনস্টেবল পলাশ ভট্টাচার্য, জব্দ তালিকার সাক্ষী কনস্টেবল উসালা মার্মা, সেনা সদস্য হীরা মিয়া, র্যাব-১৫ এর নৌবাহিনীর সদস্য আবু সালাম, কাউন্টার ম্যানেজার নবী হোসেন, আবুল কালাম ও শহীদ উদ্দিন। এনিয়ে এ মামলায় মোট ৪৩ জন সাক্ষী অত্র মামলায় সাক্ষ্য প্রদান করেছেন।
সাক্ষ্য দিতে সমন পাওয়া ১৮ জন সাক্ষী সোমবার ২৫ অক্টোবর আদালতে হাজিরা দিলেও অবশিষ্ট সাক্ষীরা সময়ের অভাবে আদালতে সাক্ষ্য দিতে পারেননি।
রাষ্ট্র পক্ষে মামলাটির আইনজীবী ও কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি (পাবলিক প্রসিকিউটর) এডভোকেট ফরিদুল আলম, অতিরিক্ত পিপি এডভোকেট মোজাফফর আহমদ হেলালী, এপিপি ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জিয়া উদ্দিন আহমদ সাক্ষীদের জবানবন্দী গ্রহণ করবেন। এসময় বাদী শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস এর আইনজীবী এডভোকেট মোহাম্মদ মোস্তফা, এডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, এডভোকেট সৈয়দুল ইসলাম, এডভোকেট এসমিকা সুলতানা, এডভোকেট শাহ আলম, এডভোকেট আবুল আলা জাহাঙ্গীর প্রমুখ আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আসামীদের পক্ষে আদালতে এডভোকেট চন্দন দাশ, এডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত, এডভোকেট দিলীপ দাশ, এডভোকেট শামশুল আলম, এডভোকেট মমতাজ আহমদ (সাবেক পিপি) এডভোকেট মোহাম্মদ জাকারিয়া, এডভোকেট এম.এ বারী, এডভোকেট ওসমান সরওয়ার আলম শাহীন, এডভোকেট মোশাররফ হোসেন শিমুল, এডভোকেট ইফতেখার মাহমুদ প্রমুখ সাক্ষীদের পৃথক পৃথক ভাবে জেরা করেন।
এরপর আদালত অন্যান্য আসামীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু করেন। সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা সোমবার ছাড়াও মঙ্গলবার এবং বুধবার যথাক্রমে ২৬ ও ২৭ অক্টোবর আরো ২ দিন অনুষ্ঠিত হবে। কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এর আদালতে এ সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে।
এর আগে গত ১২ অক্টোবর পর্যন্ত এ মামলায় মোট ৩৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা সম্পন্ন করা হয়। যাঁরা সাক্ষ্য দিয়েছেন, তারা হলেন-মামলার বাদী শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস ও প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী সাহিদুল ইসলাম সিফাত, মোহাম্মদ আলী, মোহাম্মদ আমিন, মোহাম্মদ কামাল হোসেন ও হাফেজ শহীদুল ইসলাম, আবদুল হামিদ, ফিরোজ মাহমুদ ও মোহাম্মদ শওকত আলী, হাফেজ জহিরুল ইসলাম, ডা. রনধীর দেবনাথ, সেনা সদস্য সার্জেন্ট আইয়ুব আলী, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. মোঃ শাহীন আবদুর রহমান চৌধুরী, মোক্তার আহমদ, ছেনোয়ারা বেগম, হামজালাল, আলী আকবর, ফরিদুল মোস্তফা খান, বেবী ইসলাম, সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট মোঃ মুনতাসীর আরেফিন, সার্জেন্ট মোঃ মোক্তার হোসেন, কর্পোরাল নুর মোহাম্মদ, সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার সৈয়দ মঈন, সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার আবু জাফর এবং লেন্স কর্পোরাল মোঃ রুহুল আমিন, আহমদ কবির মনু, ধলা মিয়া, সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট মোঃ জিয়াউর রহমান, সার্জেন্ট আনিসুর রহমান, কনস্টেবল কামরুল হাসান, রামু সেনানিবাসের ১০, এমপি ইউনিটের অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ ইমরান হাসান, র্যাব-১৫ এর এএসআই নজরুল ইসলাম, এসআই সোহেল সিকদার ও পুলিশের কনস্টেবল শুভ পাল।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সেরেস্তাদার এম. নুরুল কবির জানান-এ মামলার চার্জশীটের ৮৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ৮২ নম্বর পর্যন্ত সাক্ষীকে সাক্ষ্য দিতে আদালতে উপস্থিত থাকার জন্য সমন দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র্যাব-১৫ সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ খায়রুল ইসলামকে আদালতে সাক্ষ্য দিতে এখনো সমন দেওয়া হয়নি।
সাক্ষ্য গ্রহণকালে মামলার ১৫ জন আসামীকেও কড়া নিরাপত্তায় আদালতে হাজির করা হয়। মামলায় কারাগার থেকে এনে আদালতে যে ১৫ জন আসামিকে হাজির করা হয়, তারা হলো : বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন পরিদর্শক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, রুবেল শর্মা, টেকনাফ থানার এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া।প, কনস্টেবল সাগর দেব, এপিবিএনের এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আবদুল্লাহ, পুলিশের মামলার সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো. নিজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।
গত ২৩ আগস্ট সকালে কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এর আদালতে মামলার বাদী শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌসের সাক্ষ্য প্রদানের মাধ্যমে চাঞ্চল্যকর মেজর (অব:) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার আনুষ্ঠানিক এ বিচার কার্যক্রম শুরু হয়।