ইমাম খাইর, সিবিএনঃ
কক্সবাজার জেলা পরিষদের নির্বাচন আগামী ১৭ অক্টোবর। এই নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে গেছে। অর্ধ ডজন নেতা ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছেন। যোগাযোগ, লবিং শুরু করেছেন দলীয় হাইকমান্ডের সাথে।
নৌকা প্রত্যাশী প্রার্থীদের অনেকে রাজধানী ঢাকায় অবস্থান করছেন। ইতোমধ্যে দলীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহও করেছেন।
তারা হচ্ছেন, জেলা পরিষদের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমদ সিআইপি, সাবেক এমপি অধ্যাপিকা এথিন রাখাইন, পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আবছার, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (১ম) মাহবুব উল হক মুকুল ও স্বাধীনতা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি (অমৃত্যু) একেএম মোজাম্মেল হকের সেজ ছেলে শাহীনুল হক মার্শাল।
৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বিক্রি করবে আওয়ামী লীগ।
মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ১৫ সেপ্টেম্বর। ১৭ অক্টোবর ইভিএমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি:
#মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী
মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী মুক্তিযোদ্ধের সংগঠক ও কক্সবাজার জেলা পরিষদের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে তিনি কক্সবাজার সদর-মহেশখালী আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য (এমপিএ) নির্বাচিত হন। ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে দ্বিতীয় দফায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
সর্বশেষ ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় নির্বাচনে কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসন থেকে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও জেলা পরিষদের প্রশাসক।
# সালাহ উদ্দিন আহমদ সিআইপি
সালাহ উদ্দিন আহমদ সিআইপি ২০০৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ ও ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন। ছাত্র জীবন থেকেই তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একনিষ্ট কর্মী ও স্বচ্ছ রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত।
১৯৭০ এর নির্বাচনকালে বৃহত্তর হারবাং ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ও উপজেলা কমিটির সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেন সালাহ উদ্দিন আহমদ। ১৯৮৬ সাল থেকে তিনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত। রাজনীতির পাশাপাশি জেলার উচ্চশিক্ষা বিস্তারে তার ভূমিকা রয়েছে।
# নুরুল আবছার
এই জনপদের অনন্য পরিচিত ব্যক্তি নুরুল আবছার। যিনি পরপর ৪ বার কক্সবাজার পৌর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তুখোড় ও অনলবর্ষি বক্তা হিসেবে তার সুখ্যাতি। স্বাধীনতা পরবর্তী কক্সবাজার সরকারি কলেজ সংসদের জিএস ছিলেন নুরুল আবছার। গত উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। শহরের টেকপাড়ায় তার বাড়ি।
# অধ্যাপিকা এথিন রাখাইন
অধ্যাপিকা এথিন রাখাইন পেশাগত জীবনে শিক্ষক। তিনি ৮ম ও নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে কক্সবাজার সিটি কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতির দায়িত্বে আছেন। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি।
# মাহবুব উল হক মুকুল
মাহবুব উল হক মুকুল ১৯৭০-১৯৭২ সালে কক্সবাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি, ১৯৭৩-১৯৭৫ সালে কক্সবাজার সরকারী কলেজ ছাত্র লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ১৯৭৪-১৯৭৭ সাল পর্যন্ত মহুকুমা ছাত্র লীগের প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮০ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত পৌর ও জেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদে ছিলেন। বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের ১ম যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। তার পিতা মরহুম ডা. আবুল হোসেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও পৌর আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। পিতামহ মরহুম হাজী ফজল করিম ঝিলংজা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। বড় ভাই শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোজাম্মেল হক যুদ্ধকালীন জয় বাংলা বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। মেজ ছেলে আবু মোহাম্মদ মারুফ আদনান জেলা ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক।
# শাহীনুল হক মার্শাল
শাহীনুল হক মার্শাল স্বাধীনতা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি (অমৃত্যু) একেএম মোজাম্মেল হকের সেজ ছেলে। ১৯৯৩-৯৪ সালে কক্সবাজার পৌরপ্রিপ্যারেটরি উচ্চবিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। জেলা ছাত্র লীগের প্রচার সম্পাদক পদেও দায়িত্ব পালন করেন। প্রায় ১ যুগ ধরে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। তিনি বঙ্গমাতা পরিষদ কক্সবাজার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক, জেলা ক্রিড়া সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির আজীবন সদস্য। কক্সবাজার কেজি স্কুলের (প্রাথমিক শাখা) সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন শাহীনুল হক মার্শাল। এছাড়া বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত আছেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।