আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মিয়ানমারের দক্ষিণাঞ্চলের শান রাজ্যে দেশটির প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সঙ্গে তীব্র লড়াইয়ে জান্তা সেনাবাহিনীর অন্তত ৮৫ সদস্য নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষে সৈন্যদের প্রাণহানির পর কয়েক দিন ধরে এই রাজ্যের পেকোন শহরের মোইবিতে বিমান থেকে গোলা ও কামান হামলা চালাচ্ছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী।
সোমবার থাইল্যান্ডভিত্তিক মিয়ানমারের ইংরেজি দৈনিক দ্য ইরাবতির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, শান রাজ্যের মোইবি শহরে গত চার দিন ধরে বিমান ও কামান হামলা চালিয়ে আসছে সামরিক বাহিনী। প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সাথে সংঘর্ষে সেনাবাহিনীর ৮০ জনের বেশি সদস্য নিহত হওয়ার পর হামলার তীব্রতা বৃদ্ধি করেছে মিয়ানমার জান্তা।
মিয়ানমারের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় কায়াহ ও দক্ষিণাঞ্চলীয় শান রাজ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার তথ্য সংগ্রহকারী স্থানীয় মানবাধিকার সংস্থা প্রোগ্রেসিভ কারেন্নি পিপলস ফোর্স (পিকেপিএফ)। এই সংস্থাটি বলেছে, শান রাজ্যে গত কয়েক দিনে জান্তা বাহিনীর অব্যাহত বোমা হামলায় প্রায় ১০০ বাড়িঘর ও ভবন একেবারে ধ্বংস হয়ে গেছে। বোমা হামলায় এক শিশুও নিহত হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার থেকে মোইবিতে মিয়ানমারের স্থানীয় রাজনৈতিক দল কারেন্নি ন্যাশনাল প্রোগ্রেসিভ পার্টির সশস্ত্র শাখা কারেন্নি ন্যাশনালিটিজ ডিফেন্স ফোর্স (কেএনডিএফ), কারেন্নি আর্মি (কেএ) এবং পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের (পিডিএফ) সদস্যদের সাথে জান্তার সৈন্যদের তুমুল সংঘর্ষ চলছে। ওই দিন মোইবিতে অভিযান চালানোর চেষ্টার সময় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর প্রায় ৩০০ সদস্যের ওপর হামলা চালায় প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর সদস্যরা।
মোইবির পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার থেকে রোববার পর্যন্ত কারেন্নির প্রতিরোধ বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর মোট ৮৫ সৈন্য নিহত হয়েছেন। এ সময় সংঘর্ষে দুই প্রতিরোধ যোদ্ধা নিহত ও আরও ৫০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।
তবে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের প্রাণহানির তথ্য স্বাধীনভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে ইরাবতি।
কেএনডিএফ বলেছে, রোববারও মোইবিতে ভয়াবহ সংঘর্ষ ও গোলাবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। শহরের একটি আবাসিক এলাকা দখলে নেওয়ার সময় সামরিক বাহিনীর সদস্যদের ওপর প্রতিরোধ যোদ্ধারা হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে কারেন্নির এই সশস্ত্র গোষ্ঠী।
মোইবির পিডিএফ শাখা মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর অন্তত ২৫ সৈন্যকে হত্যার দাবি করেছে। এই গোষ্ঠী বলেছে, সংঘর্ষের সময় প্রতিরোধ যোদ্ধারা জান্তা বাহিনীর বিমান ও কামান লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।
সংঘর্ষে নিহত মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সদস্য, ছিনিয়ে নেওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদের ছবিও প্রকাশ করেছে কেএনডিএফ।
গত চার দিন ধরে চলা এই সংঘর্ষে শান রাজ্যের ৫ হাজারের বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইরাবতি। এই রাজ্যে মিয়ানমারের জান্তাবাহিনী প্রতিনিয়ত প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হামলার কবলে পড়ছে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।