বলরাম দাশ অনুপম:
আর মাত্র ২ দিনের অপেক্ষা। শনিবার (১ অক্টোবর) থেকে শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এই আনন্দ উৎসবকে ঘিরে চারদিকে চলছে নানা আয়োজন। ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা তৈরির কারিগররা। কে কত ভালো প্রতিমা তৈরি করে ভক্তদের হৃদয় ছুঁতে পারেন তারই প্রতিযোগিতা চলছে মণ্ডপে মণ্ডপে। সামর্থ্য অনুযায়ী স্থানীয় ও অন্য জেলা থেকে কারিগর এনে প্রতিমা তৈরি করছেন পূজার আয়োজকরা।
মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে শহরের সরস্বতী বাড়ি, ইঁন্দ্রসেন দুর্গাবাড়ি, ঘোনারপাড়া শ্রীশ্রী কৃষ্ণানন্দধামসহ বিভিন্ন মন্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিমার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। বেনার (খড় দিয়ে কাঠামো) কাজ, বেনায় মাটির প্রলেপ দেওয়া ও শুকানোর কাজ ও মাটির প্রলেপের ওপর সাদা রং দেওয়ার কাজ শেষ এখন সেগুলোর ওপর রং আর তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে দেবী দুর্গাসহ সকল দেব-দেবির প্রতিচ্ছবি। এর বাইরে মন্দির আঙিনা পরিষ্কার ও পূজামণ্ডপ নির্মাণের কাজ চলছে।
শহরের প্রধান সড়কের সরস্বতী বাড়ি প্রাঙ্গনে গিয়ে কথা হয় প্রতিমা কারিগর মিল্টন ভট্টাচার্য্যর সাথে। তিনি জানান, প্রতিমা তৈরি ও শুকানোর কাজ শেষে এখন রং-তুলি দিয়ে দেবীর প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তোলার কাজ চলছে। কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের দেয়া তথ্যমতে, এই বছর জেলায় মোট ৩০৫টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে কক্সবাজার সদর উপজেলায় (পৌর এলাকাসহ) ৪৯টি, ঈদগাঁওতে ২৬টি, রামুতে ৩২টি, উখিয়ায় ১৫টি, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে-১টি, টেকনাফে ৬টি, মহেশখালীতে (পৌর এলাকাসহ) ৩১টি, কুতুবদিয়ায় ৪৫টি, পেকুয়ায় ৯টি ও চকরিয়া উপজেলায় (পৌর এলাকাসহ) ৯১টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা আয়োজনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
কক্সবাজার সদর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি এডভোকেট বাপপী শর্মা বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজাকে উৎসবমূখর পরিবেশে উদযাপনের লক্ষে ইতোমধ্যে সকল ধরণের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি উজ্জ্বল কর ও সাধারণ সম্পাদক বেন্টু দাশ জানান, চলতি বছর জেলার ৩০৫টি পূজামণ্ডপে দুর্গোৎসব উদযাপিত হবে। সেই দুর্গোৎসব সুষ্ঠু, সুন্দরভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যায়ে প্রশাসনের সাথে সকল ধরণের প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুর্গাপূজাকে জেলাব্যাপি উৎসবমূখর পরিবেশে উদযাপনে জেলার ধর্ম, বর্ণ, জাতি নির্বিশেষে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তারা।
পুলিশ সুপার মোঃ মাহাফুজুল ইসলাম জানান, দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাড়তি পুলিশী নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। পুলিশ-র্যাব সদস্যের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও থাকবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। সিসিটিভির আওতায় এনে মণ্ডপ স্থল নজরে রাখা হবে। পঞ্জিকা অনুযায়ী, ২৫ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মধ্য দিয়ে মর্তলোকে আহ্বান জানানো হয়েছে দেবী দুর্গাকে। ১ অক্টোবর ষষ্ঠীর মাধ্যমে শুরু হবে পূজার আনুষ্ঠানিকতা। ৫ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে এবারের শারদীয় দুর্গোৎসব।