লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি:
দেশের বান্দরবান জেলার আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে গরু প্রবেশ যেন থামছেই না। স্থানীয় প্রশাসন, বিজিবি ও পুলিশ বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে গরু আটক করলেও থেমে নেই সীমান্ত দিয়ে গরু প্রবেশ। গত ৭-৮মাস ধরে মিয়ানমার থেকে প্রতিনিয়ত ঢুকছে গরু ও মহিষ। একটি অসাধু চক্র মিয়ানমার থেকে এসব গরু দেশে এনে বিভিন্ন জেলা উপাজেলায় পাচার করে চলেছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে বান্দরবান জেলার আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা থেকে গত দুই দিনে ২৩টি গরু আটক করে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) ও গত সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাতে পৃথক অভিযান চালিয়ে উপজেলা দুটির বিভিন্ন স্থান থেকে গরুগুলো আটক করা হয়। আটককৃত গরুগুলোর আনুমানিক বাজার মূল্য ২২ লাখ ৮৬ হাজার টাকা বলে ধারণা করছেন স্থানীয় গরু ব্যবসায়ীরা।
সূত্র জানায়, মঙ্গলবার ভোর পৌনে ৫টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আলীকদম থানার উপ-পরিদর্শক মো. রেজোয়ানুল হকের নেতৃত্বে সঙ্গীয় সদস্যরা লামা-আলীকদম সড়কের পাট্টাখাইয়াস্থ মুড়ি ফ্যাক্টরীর পাশে অভিযান চালায়। এ সময় মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে আনা ১৪টি গরু ও এর আগের দিন সোমবার ভোর ৪টার দিকেও ছফুর ঘোনাস্থ পাহাড়ে ঢাল থেকে ৬টি গরু আটক করে পুলিশের উপ-পরিদর্শক আনোয়ার হোসাইন। এদিকে একই দিন পাশের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের জারুলিয়াছড়ি থেকে ৩টি গরু আটক করে পুলিশের উপ-পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম। গরু আটকের বিষয়টি বান্দরবান পুলিশ সুপারের ফেসবুক ফেইজ থেকে পোষ্ট করা হয়। গত কয়েক মাসে বিজিবি, পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন অভিযান চালিয়ে দুই শতাধিক গরু আটক করেছে বলে জানা গেছে।
লামা উপজেলার খামারী আবদু সত্তার ও এসহসান উল্লাহ বলেন, মিয়ানমার থেকে গরু আনার কারনে দেশীয় গরুর চাহিদা ও দাম কমে গেছে। দেশে গরুর খাদ্যের দাম বেশি। তাই এক থেকে দেড় বছর গরু লালন পালনের পর বিক্রি করলে লাভের মুখ দেখতে পারছেনা খামারীরা। অধিকাংশ সময়ে লোকসান গুনতে হচ্ছে খামারীদের।
এ বিষয়ে সার্ক মানাবাধিকার ফাউন্ডেশনের বান্দরবান জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এম. রুহুল আমিন বলেন, মিয়ানমার থেকে অবাধে গরু মহিষ দেশে আনার কারণে লোকসানের মুখে পড়েছে দেশীয় খামারীরা। তাই দেশে গরু আনা বন্ধে স্থানীয় প্রশাসন, বিজিবি ও পুলিশকে আরো কঠোর হতে হবে। তবেই বন্ধ হবে গরু প্রবেশ আর লোকসান থেকে বাঁচবে খামারীরা।
গরু আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে আলীকদম থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মো. মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, আটক গরু গুলো থানা হেফাজতে রয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অবৈধভাবে মিয়ানমার থেকে গরু প্রবেশের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।