বদরুল মনসুরঃ
জেলের অভ্যস্তরে মর্মান্তিক, করুণ, মর্মস্পর্শী শোকাবহ জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে জাতীয় চার নক্ষত্রের স্মরণেশোকার্ত হৃদয়ের শ্রদ্ধা শীরোনামে ইউকে বিডি টিভির উদ্দ্যোগে বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর)এক আন্তর্জাতিক ভার্চুয়াল শোক সভাঅনুষ্ঠিত হয়েছে।
ইউকে বিডি টিভির চেয়ারম্যান বিশিষ্ট কমিউনিটি লিডার ও সাবেক ছাত্রনেতা মোহাম্মদ মকিস মনসুর এর সভাপতিত্বে এবংইউকে বিডি টিভির ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও বৃষ্টল বাথ ওয়েষ্ট যুবলীগ সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার খায়রুল আলম লিংকন এরউপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত শোক সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রী, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, ৭১ এর বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ শহিদুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতাকালীন সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট লেখক এম এসালাম, মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নওশের আলী খোকন, ম্যানচেস্টার আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মীর গোলাম মোস্তফা, নিউপোর্ট আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ তাহির উল্লাহ ও বিশিষ্টসাংবাদিক ও সমাজকর্মী মুহিব উদ্দিন চৌধুরী।
সভার শুরুতেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের এবং জেলে নিহত জাতীয় চার নেতারস্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করা হয়।
প্রধান অতিথি সাবেক মন্ত্রী, বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ শহিদুল ইসলাম সহ সকল বক্তারা বলেন, ৭৫ এর ১৫ আগস্ট, ৩রা নভেম্বরএবং ২১ আগস্ট একই সূত্রে গাঁথা। এই সকল হত্যাকাণ্ড থেকে শিশু অন্তঃসত্ত্বা মহিলা পর্যন্ত রক্ষা পায় নাই। জেলের মতো একটিসুরক্ষিত জায়গায় খুনিরা পরিকল্পিতভাবে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করে তারা চেয়েছিল জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করতে। তারাবাংলাদেশের ইতিহাসকেই পাল্টে ফেলার চেষ্টা করেছিল।
খুনি মোশতাক-জিয়াই তাদের হত্যা করে বলে উল্লেখ করে বক্তারা আরও বলেন মানবতার এই হত্যাকারীদের যারা পিছন থেকেকুশিলবের কাজ করেছে তাদের এখনো খুঁজে বের করা হয় নাই। এই সকল কুশীলবদের বের করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসারজন্য বক্তারা সরকারের নিকট আহ্বান জানান।
জাতির চার উজ্জ্বল নক্ষত্র.জীবন দিয়ে প্রমাণ করেছেন
জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ছিলেন আত্মার আত্মীয়, বলে উল্লেখ করে সভাপতির বক্তব্যে ইউকে টিভির চেয়ারম্যান বিশিষ্টসাংবাদিক মোহাম্মদ মকিস মনসুর সহ অন্যান্য আলোচকবৃন্দ জেল হত্যার মূল রহস্য উন্মোচনে তদন্ত কমিশন গঠন ওজেলহত্যা দিবসটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন এবং জাতীয় চার নেতাসহ মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জীবনীসহ পূর্ণাঙ্গইতিহাস সর্বস্তরের পাঠ্যপুস্তক ও সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করার জোর দাবি জানিয়ে বলেন ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যারপর ৩ নভেম্বর তার ঘনিষ্ঠ এই চার সহকর্মীকে কারাগারে হত্যা করা হয়।
বাংলাদেশের ইতিহাসে ৩ নভেম্বর কলঙ্কময় ও বেদনাবিধুর একটি দিন। জাতীয় চার নেতা, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীনআহমদ, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী এবং আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামারুজ্জামান, যারা লোভ লালসা এবং ক্ষমতার আহ্বানকেউপেক্ষা করে ন্যায় ও সত্যের পতাকাকে সমুন্নত রেখেছিলেন। লোভ ও চাপের কাছে আত্মসমর্পণ না করে তারা জীবন দিয়ে প্রমাণকরেছেন অন্যায়ের কাছে মাথা নত করতে নেই এবং দেশ ও জাতির বিশ্বাসঘাতকদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হতে নেই।
বক্তারা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নক্ষত্রের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে তাদের আত্মত্যাগের মত আসুন
কায়েমী স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্রকারীদের সকল ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করে একটি সুখী সমৃদ্ধশালী, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশহিসাবে গড়ে তুলতে কাজ করি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীদেশরত্ন শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলার আলোর মিছিলকে এগিয়ে নিতে ম্যাদার অব হিউম্যানিটি মানণীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্নশেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার জন্য দেশে বিদেশে বসবাসকারী সবার প্রতি বিনীতভাবেঅনুরোধ জানিয়েছেন।
এখানে উল্লেখ্য যে, বাঙালি জাতির ইতিহাসে আরেকটি কলঙ্কিত অধ্যায় জেল হত্যা দিবস। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর স্বাধীনতাবিরোধীরা নির্মমভাবে হত্যা করে জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ওএ এইচ এম কামারুজ্জামানকে।
চরম নির্মমতা ও নিষ্ঠুরতার সাক্ষী হচ্ছে ৩ নভেম্বর জেলহত্যা দিবস। দেশের আপামর জনতা যাদের নেতৃত্বে ও নির্দেশে এদেশেরস্বাধীনতা সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে মাত্র নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে এ দেশেকে স্বাধীন করেছিল।
যুদ্ধকালীন সময় সৈয়দ নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।মুক্তিযুদ্ধকালীনমুজিবনগর সরকারের সমধিক পরিচিত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাজউদ্দিন আহমেদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বঙ্গবন্ধুরঅপর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও এএইচএম কামারুজ্জামান পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধপরিচালনার ক্ষেত্রে নীতি ও কৌশল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
১৯৭৫ সালের ৩রা নভেম্বর বিশ্বাসঘাতক খোন্দকার মোশতাকের আশীর্বাদপুষ্ট খুনি ফারুক-রশিদ চক্র জেল কোড ভঙ্গ করেচরম নির্মম ভাবে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যা করে জাতীয় চার নেতাকে!! জেল হত্যা ছিল স্বাধীনতা বিরোধীদের একটিষড়যন্ত্রমূলক নীলনকশার সুদূর প্রসারী বাস্তবায়ন