লামা প্রতিনিধি:
বান্দরবানের লামা পৌরসভার মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম বলেছেন, জনৈক আক্তার উদ্দিন তপনরা জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে পৌরসভার কোটি টাকার সম্পদ স্থায়ী দখলের অপচেষ্টা করছেন। লামা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় তিনি আরো বলেন, গত কয়েকদিন ধরে -এ সংক্রান্ত বিষয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে একটি পত্রিকায় সংবাদ ছাপিয়ে এতদ্বঞ্চলের পাহাড়ি ও বাঙ্গালীদের মধ্যে দীর্ঘদিনের সৌহাদপূণর্র্ সম্প্রীতি নষ্টের হীন চেষ্টাও লিপ্ত রয়েছেন আক্তার উদ্দিন তপনরা। আক্তার উদ্দিন তপন উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ত্রিশডেবা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও মুক্তিযোদ্ধা মৃত আলতাফ উদ্দিনের ছেলে। বৃহস্পতিবার বিকেলে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে পৌরসভার প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ হোসেন বাদশা, কাউন্সিলর মোহাম্মদ রফিক, মমতাজ উদ্দিন, আলী আহমদ, মহিলা কাউন্সিলর মরিয়ম বেগম ও সাকেরা বেগম, পৌর প্রকশলী জুলকার নাঈম মানিকসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এতে স্থানীয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিড়িয়া সাংবাদিকরা অংশ গ্রহণ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, লামা পৌরসভা থেকে কোন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে উচ্ছেদ করা হচ্ছেনা। বরং মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের নাম ব্যবহার করে জনৈক আক্তার উদ্দিন তপন অবৈধভাবে পৌরসভার মালিকানাধীন কোটি টাকার সম্পদ গত এক যুগের বেশি সময় ধরে জবর দখল করে রেখেছেন। বর্তমানে ওই সম্পদ স্থায়ীভাবে দখলের চেষ্টায় লিপ্ত হন আক্তার উদ্দিন তপন। পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. আমির হোসেনের সাথে ব্যক্তিগত আতাত ও মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে করা একটি ভূয়া চুক্তি নামা উপস্থাপন করে আক্তার উদ্দিন তপন এ জায়গা ও ভবন জবর দখলে রাখেন। যার কোন তথ্য উপাত্ত পৌরসভা কার্যালয়ে রক্ষিত নেই। তাছাড়া সাবেক মেয়র মো. আমির হোসেন জবর দখলকৃত সম্পদ ছেড়ে দেওয়ার জন্য একাধিকবার নোটিশ দেওয়ার পরেও কিভাবে আক্তার উদ্দিন তপন এ চুক্তি উপস্থাপন করেন তা বোধগম্য নয়। অপরদিকে আক্তার উদ্দিন তপন কর্তৃক জবরদখলকৃত জায়গার একশ ফুট দূরে সরকারী অর্থায়নে একটি ¤্রাে ছাত্রাবাস নির্মাণকে জড়িয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করে এতদ্বঞ্চলের পাহাড়ি ও বাঙ্গালীদের মধ্যে দীর্ঘদিনের সৌহার্দ সম্প্রীতি নষ্টের হীন চেষ্টা করা হচ্ছে। ্এদিকে ৩য় পৌর পরিষদ ক্ষমতা গ্রহণের পর আকতার উদ্দিন তপন কর্তৃক পৌরসভার মালিকানাধীন জায়গা ও ভবন অবৈধ দখল মুক্ত করার জন্য পূর্ববর্তী মেয়রের পত্র সমূহ অনুস্মরণ পূর্বক এবং বিধি মোতাবেক আকতার উদ্দিন তপনকে চূড়ান্ত পত্র দেওয়া হয়। এতদ্বসংক্রান্ত তথাকতিথ চুক্তিপত্রে সেলামী বাবদ ৩ লক্ষ টাকা উল্লেখ থাকলেও পৌরসভার কোন হিসাবে জমা হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। দপ্তর এড়িয়ে, একান্ত নিজস্ব মত অর্ন্তভূক্ত করে, নিজের সুবিধামত শর্ত যুক্ত করে ২য় পৌর পরিষদের মেয়রের সাথে ব্যক্তিগতভাবে আকতার উদ্দিন তপন চুক্তিপত্র সম্পাদন করেছেন মর্মে চুক্তিপত্রের ছায়াকপি পাঠান্তে মনে হয় বলে জানান মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম।
প্রসঙ্গত জবরদখলকৃত জায়গাটি লামা পৌরসভা স্থাপিত হওয়ার পর “দি ডিক্লারেশন এন্ড অল্টারেশন অব মিউনিসিপ্যালিটিস রুলস্” এর ৬ ধারা মতে স্থানীয় সরকার বিভাগ, পৌর-৩ শাখার স্মারক নং: পৌঃ-৩/চবি-বিধ-২/২০০২/৪৯২, তারিখঃ ০৪/০৬/২০০৩, ও জেলা প্রশাসক, বান্দরবান পার্বত্য জেলার স্মারক নং: জেঃপ্রঃবান/স্থঃসঃ/ছয়-১৬/২০০৩-১৯৫, তারিখঃ ০৭/০৭/২০০৩ খ্রিঃ এর অনুবৃত্তিক্রমে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, লামা’র স্মারক নং: দশ-২৬/২০০৩-১৩৫৩, তারিখঃ ১৬/১০/২০০৩ ইং মূলে জারীকৃত নির্দেশ মোতাবেক গত ৩১/০১/২০০৪ ইং তৎকালীন গজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাথোয়াইচিং মার্মা ও পৌরসভার চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইসমাইলের মধ্যে গজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের মালিকানাধীন ১ টি ভবন, ১ টি দোকান, ১ টি গোডাউন, ১ টি বাসা ও ০.৯৪ একর জমি সহ স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার মাধ্যমে পৌরসভার মালিকানায় অর্ন্তভূক্ত হয়।