আবদুর রহমান খান
( নভেম্বর ২৬ ) পাকিস্তানের সাবেক প্রধান মন্ত্রী ইমরান খান আবারো বলেছেন, ১৯৭০ সালে নির্বাচনে বিজয়ী দলকে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব না দিয়ে জোর করে ক্ষমতা আকড়ে রাখতে গিয়ে পুর্বপাকিস্তানকে হারাতে হয়েছে। আজকেও পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল পিটিআইকে ষড়যন্ত্রমুলকভাবে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিয়ে দুর্নীতিবাজ-চোরের সরকার আমদানি করা হয়েছে এবং পাকিস্তানের স্বাধীনতাকে ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
আজ সন্ধ্যায় রাওয়ালপিন্ডিতে বিশাল জনসমাবেশে যোগ দিয়ে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) –এর চেয়ারম্যান দ্রুত আগাম নির্বাচনের দাবী জানিয়ে বলেছেন, দেশের ৮৫ ভাগ মানুষ এখন নির্বাচন চায়। তিনি শেহবাজ সরকারের উদ্দেশ্য করে বলেন, নির্বাচন না দিয়ে আর কোনো উপায় নেই।
চলমান লংমার্চের শেষ পর্বে নিজের জীবনের ওপর হামলার ঝুঁকি নিয়ে ইমরান খান তার গুলিবিদ্ধ পায়ে বান্ডেজ নিয়ে আজ বিকেলে ( ২৬ নভেম্বর) হেলিকপ্টারযোগে রাওয়ালপিন্ডির ঐতিহাসিক জমায়েতে যোগ দেন। এর আগে খাইবার পাখতুন ওয়ালার মন্ত্রী শওকত আলি ইউসুফজাই-এর নেতৃত্বে লং মার্চ রাওয়ালপিন্ডির বিশাল সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে ইমরান দৃঢ়তার সাথে ঘোষনা করেন , তার শরীরের শেষ বিন্দু রক্ত থাকা পর্যন্ত দেশের আজাদী রক্ষার জন্য লড়ে যাবেন। দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করা, আইনের শাসন চালু করা এবং আম আদমীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জান কোরবান করার অংগীকার ঘোষনা করেন ইমরান খান।
পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে গত এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হয় ইমরানকে। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আগাম জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে মে মাসের গোড়ার দিকে ‘আজাদি মার্চ’ শুরু করেছিলেন সাবেক ক্রিকেট তারকা ইমরান খান। সেবারের পদযাত্রায় পুলিশের সঙ্গে পিটিআই কর্মীদের সংঘর্ষে বহু মানুষ আহত হয়; সরকারি সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং অসংখ্য পিটিআই নেতা কর্মী গ্রেপ্তার হন।
এর পর ২৮ অক্টোবর আগাম নির্বাচনের দাবীতে লাহোর থেকে রাজধানী ইসলামাবাদ পর্যন্ত লং মার্চ শুরু করে বিরোধী দল পিটিআই। গত ৩ নভেম্বর পাঞ্জাবের ওয়াজিরাবাদে লংমার্চে বন্দুক হামলায় পায়ে গুলিবিদ্ধ হন ইমরান। তাৎক্ষনিকভাবে লং মার্চ স্থগিত করা হলেও দেশব্যাপী সহিংস প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরে।
এর আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ শুক্রবার ( ২৫ মার্চ) এক সংবাদ সম্মেলনে ইমরান খানকে লং মার্চ স্থগিত করে পার্লামেন্টে ফিরে আসার আহবান জানিয়ে বলেছেন, অন্যথায় দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা আর অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের জন্য তাকেই দায়িত্ব নিতে হবে। রানা সানাউল্লাহ আরো বলেছেন, রাওয়ালপিন্ডির সমাবেশে গিয়ে নির্বাচনের তারিখ পাওয়া যাবেনা। নির্বাচনের তারিখ পেতে হলে ইমরানকে রাজনৈতিক আচরণ করতে হবে। এ নিয়ে অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের সাথে আলোচনা করতে হবে। এমন কি প্রতিপক্ষ নেওয়াজ শরিফ এবং শেহবাজ শরিফের সাথেও কথা বলতে হবে। আর তাতে তারা অসম্মত হবেন না।