জালাল আহমদ,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:
বাংলাদেশের নিরীহ জনগণকে বিএনপি থেকে সাবধান থাকার জন্য সতর্ক জানিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ঢাকা শহরে বড়লোকদের বাসার সামনে লেখা থাকে “কুকুর থেকে সাবধান”। তেমনি বাংলাদেশের নিরীহ জনগণকে বলতে চাই,”বিএনপি থেকে সাবধান”। সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে খেলা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি। বিএনপি ঢাকা দখল করলে আওয়ামী লীগ ঘরে বসে ললিপপ খাবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন আওয়ামী লীগের এই নীতি নির্ধারক।
আজ ৩ ডিসেম্বর (২০২২) শনিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশ ফ্লপ হয়েছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সকালে ময়মনসিংহে আ’লীগের সম্মেলনে লাখো লোকের সমাবেশ , এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সম্মেলনে জনসমাগম দেখার জন্য মির্জা ফখরুলের প্রতি অনুরোধ করছি। তিনি (ফখরুল) রাজশাহীর জনশূন্য সমাবেশে দাঁড়িয়ে হুংকার দিচ্ছেন। নিজের ঘরে গণতন্ত্র নাই অথচ তিনি গণতন্ত্রের কথা বলেন। কতদিন ধরে বিএনপি’র সম্মেলন হয় না তা তিনি জানেন না। আমাদের তো তিন বছর পর পর সম্মেলন হয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সমালোচনা করে তিনি বলেন, নেতা (তারেক রহমান) লন্ডন থেকে আদেশ দেয় আর ফখরুল ঢাকায় বসে আওয়াজ দেয়।
বিএনপি বিশৃঙ্খলা করলে আওয়ামী লীগ ঘরে বসে থাকবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “এখন দেখছি বিএনপি হান্ডি -পাতিল বিছানা, বালিশ, কাঁথা, মশার কাঁথা নিয়ে তাঁবু টানছে। বিএনপি বিশৃঙ্খলা করলে আওয়ামী লীগ ঘরে বসে থাকবে না।
সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে খেলা হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ডিসেম্বরে বিজয়ের মাসে সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে অসাম্প্রদায়িক শক্তির খেলা হবে। হাওয়া ভবনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে খেলা হবে। বিএনপির আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে খেলা হবে। ফখরুলকে কান্নাকাটি করলেও কোন লাভ হবে না বলে তিনি হাস্যরস করেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর কোনদিন ফিরে আসবে না জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বিএনপিকে ইঙ্গিত করে বলেন, তত্ত্বাবধায়কের দিবাস্বপ্ন ও রঙিন খোয়াপ বুনবেন না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর কোনদিন সংবিধানে ফিরবে না।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মনে বড় জ্বালা পোড়া জানিয়ে কাদের বলেন, মির্জা ফখরুলের মনে জ্বালা , বড় জ্বালা। পদ্মা সেতু কী করে শেখ হাসিনা নিজেস্ব অর্থায়নে করল? চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল দক্ষিণ এশিয়ায় একমাত্র বাংলাদেশেই সম্ভব হয়েছে।
ঢাকা শহরে মেট্রোরেল, রূপপুর প্রকল্প, পায়রা বন্দর কিভাবে করল তা নিয়ে মির্জা ফখরুলের মনে বড় জ্বালা।
আওয়ামী লীগ বিএনপিকে ভয় করে না বলে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ কখনো বিএনপিকে ভয় করেনা। বিএনপির লাঠি সন্ত্রাসকে ভয় করে। আগুন সন্ত্রাসকে ভয় করে।
১০ ডিসেম্বর বিএনপি ঢাকা দখল করলে আওয়ামীলীগ ঘরে বসে ললিপপ খাবে না।
তারেক রহমানের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৫ আগস্ট এবং ৩ নভেম্বরের ধারাবাহিকতায় ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যা করার জন্য একুশে আগস্ট গ্রেন্ড হামলার মাস্টারমাইন্ড ছিল তারেক রহমান। সেই তারেক রহমান এখন মির্জা ফখরুলের নেতা। সিংগাপুর এবং আমেরিকায় টাকা পাচার করতে গিয়ে তিনি ধরা খেয়েছেন”।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের সঞ্চালনায় আয়োজিত এই সম্মেলন উদ্বোধন করেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়। সমাবেশে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম পান্থ। সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।