সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :
বিজয়ের ঊষালগ্নে পরাজয় অত্যাসন্ন জেনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় দেশের বরেণ্য ব্যক্তিদের হত্যায় মেতে ওঠে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধরে নিয়ে আসা হয় সাহিত্যিক, সাংবাদিক, চিকিৎসকসহ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। নির্মমভাবে তাদের হত্যা করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল জাতিকে মেধাশূন্য করা।
স্বাধীনতা পেয়েও বাঙালি জাতি যেন মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে সেই নীল নকশা বাস্তবায়ন করাই ছিল বুদ্ধিজীবী হত্যার হীন উদ্দেশ্য।
বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী। বক্তব্যে তিনি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধরে রাখতে পারলে এবং আগামী প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে পারলে কেউ আর এই দেশের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-আলবদরদের যারা প্রতিষ্ঠিত করে তাদের গাড়িতে লাখো শহীদের রক্তে রঞ্জিত পাওয়া পতাকা তুলে দিয়েছিল, এখন তারা নতুন করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে। পাকিস্তানি বাহিনী, তাদের দোসররা একাত্তরে পরাজিত হলেও সেই পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এদের সম্পর্কে সবাইকে সজাগ থেকে আগামী প্রজন্মকে ৭১ সালের ভয়াবহতার ইতিহাস সঠিকভাবে জানাতে হবে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাওয়া দেশের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দিতে হবে।”
প্রধান বক্তার বক্তব্যে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, “জিয়াউর রহমান ছিলেন একজন সাধারণ সৈনিক। সে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছে তাঁর কোন প্রমাণ নাই। বিএনপি ক্ষমতায় এসে ইতিহাস বিকৃত করেছিল। বিভ্রান্ত করেছিল শিক্ষার্থীদের। গত ১০ ডিসেম্বর সরকারের পদত্যাগ চাইতে গিয়ে নিজেরা সংসদ থেকে পদত্যাগ করে বিএনপি রাজনৈতিক দেউলিত্বের উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন, হুমকি ধমকি দিয়ে আওয়ামী লীগ কে ভয় দেখানোর অপচেষ্টা করে লাভ হবে না। আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছে এ দেশের মানুষের হৃদয়ের মধ্য থেকে। তাই এ দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে হৃদয়ে ধারণ করে। তিনি ভবিষ্যতে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য সৃষ্টি করে বিএনপি যদি মানুষের জানমাল নিয়ে কোন অপরাজনীতির খেলা খেলতে চাই, তাতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা মানুষের জানমাল রক্ষায় অগ্রগামি সৈনিকের ভূমিকা পালন করবে বলে জানান। তাঁদের সাথে ফাইনাল খেলা হবে আগামী নির্বাচনে।”
সাবেক উপ-প্রচার সম্পাদক এম এ মনজুরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, এম. আজিজুর রহমান, মাহবুবুল হক মুকুল, নাজনীন সরওয়ার কাবেরী, ইউনুছ বাঙালি, এডভোকেট তাপস রক্ষিত, হেলাল উদ্দিন কবির, উখিয়া আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, জেলা যুবলীগের সভাপতি সোহেল আহমদ বাহাদুর, এড. নাসরিন সিদ্দিকা লিনা, ডাক্তার পরিমল কান্তি দাশ ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মারূফ আদনান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল করিম, মুক্তিযোদ্ধা এস,এম কামাল, কাজী মোস্তাক আহমদ শামীম, সাবেক ছাত্রনেতা নুরুল আজিম কনক, কামরুল হাসান, ফরহাদ ইকবাল, মহিদ উল্লাহ, রাসেল চৌধুরী, মিজানুর রহমান, এবি ছিদ্দিক খোকন, মোর্শেদ হোসেন তানিম।
সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন সাবেক ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ড. নুরুল আবছার। সভায় শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।