আবু সায়েম:
কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের আওতাধীন পানের ছড়া রেঞ্জাধীন চেনছড়ি বন এলাকায় বন্য হাতির পালকে বনে ফেরাতে গিয়ে বন্যহাতির আক্রমণের শিকার হয়েছেন বনবিভাগের লোকজন। এ সময় ৪ জন বনকর্মী ও ১ জন স্থানীয় বাসিন্দা আহত হয়েছেন।
শনিবার (৬ নভেম্বর) সকাল ১১ টায় রামু উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের চেনছড়ি বনতলা থেকে ভিতরে বনে হাতির পালের এ আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে।
কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের পানেরছড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. তৌহিদুর রহমান টগর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আহতরা হলেন, সাইদুল ইসলাম
(বনবিভাগের আউট সোর্সিং কর্মচারী) এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের সদস্য আনোয়ার হোসেন, নজরুল ইসলাম,স্থানীয় বাসিন্দা মো. বাপ্পি ও পানের ছড়া বনবিট কর্মকর্তা মো. সোহেল রানা।
আহত ৫ জনকে উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে
আহতদের মধ্যে স্থাায়ী বাসিন্দা বাপ্পির অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান পানের ছড়া বনবিট কর্মকর্তা সোহেল রানা ।
কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. সারওয়ার আলম বলেন, শাবকসহ ১৪টি হাতির একটি পাল লোকালয়ে চলে আসে। হাতি দেখতে স্থানীয় বাসিন্দারা ভিড় করেছিলেন। জানতে পেরে বনবিভাগের সদস্যরা, এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিম ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান ৷ ভিড় করে থাকা মানুষদের নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে দিয়ে আমরা হাতিগুলোকে ধীরে ধীরে বনের ভেতর ফেরানোর চেষ্টা করি। কিন্তু বনে ফেরানোর আগ মুহূর্তে হাতির পাল উল্টো ঘুরে আক্রমণ চালায়। হাতির পালের মধ্যে ৬/৭ টি হাতি শাবকও রয়েছে। এতে ৫ জন আহত হয়েছে। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বলে জানান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দীর্ঘ কয়েক মাস থেকে রামু উপজেলার চেইন্দা, বনতলা, চেনছড়িসহ আশপাশের এলাকায় লোকালয়ে ডুকে হাতির পাল ফসলের ব্যাপক ক্ষতিসাধান করে আসছিল। এর আগেও এ হাতির পালটিই মূলত লোকালয়ে এসে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে এবং অনেককে পায়ে পিষ্ট করে গুরুতর আহত করে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শুক্রবার দিবাগত রাতে ১৩/১৪টি হাতির একটি পাল দক্ষিণ বনবিভাগের পানেরছড়া বনাঞ্চল থেকে দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের বনতলা চেনছড়ি এলাকায় গিয়ে পাকা ধান খেয়ে পেলে এবং অন্যান্য সবজি ক্ষেত নষ্ট করে। সকালে হাতি আসার খবরে উৎসুক জনতা হাতি দেখতে ভিড় জমায়। সর্বত্র আতংক সৃষ্টি হয়।
লোকালয়ে হাতি আসার বিষয়ে জানতে চাইলে পানেরছড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা তহিদুর রহমান টগর বলেন, গত কয়েক মাস থেকেই হাতির পালটি লোকালয়ে হানা দিয়ে জান-মালের ক্ষতিসাধন করছে। বিভিন্ন সময় আমরা খবর পেয়ে হাতির পালটিকে বনে ফেরানোর চেষ্টা করি। তারপরেও বার বার হাতির দল লোকালয়ে চলে আসে।
লোকালয়ে বন্যহাতিকে বনে ফেরাতে গিয়ে ৫ জন বনকর্মী আহত হওয়ার পরেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বনকর্মীরা তাদের নিরাপদ আবাসস্থলে ফেরত পাঠাতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ সারওয়ার আলম।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।