ডেস্ক নিউজ:

কক্সবাজার – কক্সবাজারে অবস্থিত ২ লক্ষ ৪০ হাজার শরণার্থীকে মাসিক খাদ্য সহায়তা দিতে যুক্তরাজ্যের ফরেন কমনওয়েলথ এন্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস-এর ৮৮ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা অনুদানকে স্বাগত জানিয়েছে জাতিসংঘ বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP)।

কক্সবাজারে অবস্থানরত ৮ লক্ষ ৬০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীর প্রত্যেকেই ইলেকট্রনিক ভাউচারের মাধ্যমে প্রতি মাসে খাদ্য সহায়তা পেয়ে থাকে, যার মাধ্যমে তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে WFP-এর খুচরা বিক্রির দোকান থেকে নিজ নিজ পছন্দমতো খাবার কিনতে পারে। এই খুচরা বিক্রির দোকানগুলো থেকে তারা চাল, পুষ্টিসমৃদ্ধ রান্নার তেল, ডিম ও ডাল-এর মতো প্রধান খাদ্যের পাশাপাশি ফ্রেশ ফুড কর্নার থেকে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ফল ও শাকসবজি, জীবন্ত মুরগী ও মাছ কিনতে পারে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরকে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার জন্য WFP খাদ্য কেনার মাধ্যমে প্রতি মাসে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রায় ৯৪ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা যুক্ত করছে এবং তার পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করছে ও স্থানীয় কৃষকদের জীবিকাকে সমৃদ্ধ করছে।

কক্সবাজারে WFP-এর সিনিয়র ইমার্জেন্সি কোঅর্ডিনেটর শিলা গ্রুডেম বলেন, “উদ্ভাবন, অর্থ সাশ্রয় ও অর্থ-ভিত্তিক সহায়তার ক্ষেত্রে আমাদের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে যুক্তরাজ্যের সাথে মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে অংশীদারিত্বে আমরা অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।” তিনি আরও বলেন, “রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আমাদের সহায়তা কার্যক্রম ও বাংলাদেশের পরিবারগুলোর জন্য জীবিকা বিষয়ক কার্যক্রমে সহযোগিতার মাধ্যমে শরণার্থীদের মর্যাদা রক্ষার পাশাপাশি স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ওপর থেকে চাপ কমাতে বিশ্বস্ত সহযোগী হিসেবে যুক্তরাজ্য আমাদের পাশে আছে।”

ঢাকাস্থ ব্রিটিশ হাই কমিশনের ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর জুডেথ হার্বার্টসন বলেন, “রোহিঙ্গা শরণার্থী ও রোহিঙ্গা ক্যাম্প-সংলগ্ন কক্সবাজারের স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে অপরিহার্য সহযোগিতা দিতে ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত যুক্তরাজ্য ৩৭০৪ কোটি ৮৮ লক্ষ টাকা অর্থ-সহায়তা প্রদান করেছে।” তিনি আরও বলেন, “৮৮ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা বাড়তি সহায়তার ঘোষণা দিতে পেরে আমি আনন্দিত। এই অর্থ বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি-কর্তৃক কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদেরকে খাদ্য সহায়তা প্রদানে ব্যবহৃত হবে।”

২০১৭ সালে রোহিঙ্গা সংকটের শুরু থেকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য WFP-এর সহায়তা কার্যক্রমে যুক্তরাজ্য ধারাবাহিকভাবে সহযোগিতা দিয়ে আসছে। শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটি সব মিলিয়ে ৬৮৬ কোটি ১৯ লক্ষ টাকা অনুদান দিয়েছে, যার মাধ্যমে এই সহায়তা কার্যক্রমে যুক্তরাজ্য WFP-এর দ্বিতীয় বৃহত্তম দাতা সংস্থায় পরিণত হয়েছে। খাদ্য রেশন থেকে পরিবর্তিত হয়ে ই-ভাউচারের মাধ্যমে সহায়তা দিতে WFP-কে কার্যকর সহযোগিতা প্রদান করেছে যুক্তরাজ্য, যার ফলে একদিকে শরণার্থীরা যেমন তাদের পছন্দমতো খাবার কিনতে পারছে, অন্যদিকে সরবরাহ শৃঙ্খল বা সাপ্লাই চেইনের স্থানীয়করণের ফলে স্থানীয় জনগোষ্ঠীও লাভবান হচ্ছে।