এম.এ আজিজ রাসেল:
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, কক্সবাজারে রক্তের হোলি খেলা দেখতে চাই না। এটি পর্যটন প্লেস। এখানে ট্যুরিস্ট আসবে। আমরা শুনেছি, এখানে কয়েকটা প্রাণহানি হয়েছে। আর কোন সহিংসতা, আর কোন প্রাণহানি যেন এখানে না হয়। আমরা কোন সন্ত্রাসী ও রক্তপাত দেখতে চাইনা।
সোমবার (০৮ নভেম্বর) বিকেলে ট্যুরিস্ট পুলিশের অষ্টম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী অনুষ্ঠানে উপস্থিত পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেনকে উদ্দেশ্য করে বলনে, আপনারা কঠোর হোন। আর কোন সহিংসতা যেন এখানে আমাদের আর দেখতে না হয়। আপনি যেভাবে পারেন এর ব্যবস্থা করুন।
তিনি বলেন, যদি রোহিঙ্গারা রক্তপাত ঘটায়, মাদক আনে- তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে আমরা বাধ্য হবো।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আগের মতো তলাবিহীন ঝুড়ি নয়, এখন স্বপ্নের দেশ। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।ট্যুরিস্ট পুলিশ গঠিত হয়েছে বলেই পর্যটকরা এখন নির্বিঘ্নে ভ্রমণ করতে পারছেন। ১০ বছর আগেও পর্যটকরা এখনকার মত সাচ্ছন্দ্যে ঘুরতে পারতেন না।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ কার্যালয় প্রাঙ্গণে এ অনুষ্ঠান করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের ডিআইজি মোর্শেদুল আনোয়ার খান।
অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাংসদ কানিজ ফাতেমা আহমেদ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে টুরিস্ট পুলিশের কার্যক্রম সম্পর্কিত একটি প্রামান্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মোর্শেদুর আনোয়ার খান। বক্তব্যে তিনি বলেন, কক্সবাজার বিশ্বের দীর্ঘতম নিরবচ্ছিন্ন বালুকাময় সমুদ্র সৈকত। আমরা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতকে ব্র্যান্ডিং করতে চাই। কক্সবাজারকে বিশ্বে তুলে ধরার মাধ্যমে পর্যটন আকর্ষণ বাড়াতে আমরা আইজিপি মহোদয়ের সুযোগ্য নেতৃত্ব ও নির্দেশনায় নিরলস কাজ করছি। ইতোমধ্যে পর্যটকদের বিশ্বমানের সেবা ও নিরাপত্তা প্রদানের মাধ্যমে তাদের আস্থা অর্জনে টুরিস্ট পুলিশ সক্ষম হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মহিউদ্দিন, কক্সবাজার প্রেস ক্লাবের সভাপতি আবু তাহের চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মো. মুজিবুল ইসলাম, সাবেক পৌর চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আবছার, হোটেল—মোটেল গেষ্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ¦ আবুল কাশেম সিকদার, ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টুয়াক) এর সভাপতি আনোয়ার কামালসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
এর আগে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে বর্ণাঢ্য র্যালী বের করা হয়। র্যালী উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। র্যালীটি সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে লাবণী পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়।
এর আগে সৈকতের সুগন্ধ্যা পয়েন্টে বেলুন ও শান্তির পায়রা উড়িয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশের ৮ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচীর উদ্বোধন করা হয়। পরে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী লাবণী পয়েন্টে এসে শেষ হয়।
এদিকে ৩ দিনব্যাপী ৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আগামী ১১ নভেম্বর সমাপনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনে পর্দা নামবে। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ।
উল্লেখ্য, দেশি—বিদেশি পর্যটকদের বিশ্বমানের পর্যটন সেবা ও নিরাপত্তা প্রদানের মাধ্যমে দেশের পর্যটনশিল্প বিকাশের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ২০১৩ সালে বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ট্যুরিস্ট পুলিশ। পর্যটন নিরাপত্তা ও সেবায় আট বছর পূর্তি উপলক্ষে ৮ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।