আব্দুস সালাম,টেকনাফ(কক্সবাজার):
কক্সবাজারের টেকনাফে আদালতের আদেশে মৃত্যুর ১৩ দিন পর মো. ফাহিম নামের তিন বছরের এক শিশুর মৃতদেহ কবর থেকে উত্তোলন করেছে পুলিশ। শিশুটিকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগে সৎমা শাকিলা আক্তারসহ পাঁচজনকে আসামি করে শিশুটির মামা মো. আলমগীর আদালতে মামলা করেছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের পূর্ব সাতঘরিয়াপাড়া গ্রামের কবরস্থান থেকে শিশুটির লাশ তোলা হয়। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও টেকনাফ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. এরফানুল হক চৌধুরী সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল হালিম।
নিহত মো. ফাহিম (৩) ওই গ্রামের সৌদিপ্রবাসী মো. হেলাল উদ্দিনের ছেলে। তানিয়া (৬) নামের শিশুটির এক বোন আছে। তাদের মা রোকেয়া বেগম দেড় বছর আগে ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এরপর বাবা হেলাল উদ্দিন শাকিলা আক্তার (২০) কে বিয়ে করেন।
শিশুটির মৃত্যুর দুই দিন পর মামা মো. আলমগীর বাদী হয়ে হত্যার অভিযোগে সৎমা শাকিলা আক্তারকে প্রধান আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করেন।
ফাহিমের মামা ও মামলার বাদী মো. আলমগীর বলেন, তাঁর বোন রোকেয়া বেগম অসুস্থ হয়ে মারা যাওয়ার পর ভগ্নিপতি মো. হেলাল উদ্দিন শাকিলা আক্তারকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকেই ভাগনি তানিয়া ও ভাগনে ফাহিমকে নির্যাতন করতে থাকেন সৎমা। তিন মাস আগে হেলাল উদ্দিন সৌদি আরবে চাকরি করতে যান। বাবার অনুপস্থিতিতে সৎসন্তানদের ওপর নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। একপর্যায়ে গত ২২ ফেব্রুয়ারি বেলা ১টার দিকে ফাহিমকে পিটিয়ে ও শ্বাস রোধ করে হত্যা করার পর ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায় বলে প্রচার করেন শাকিলা।
মো. আলমগীর আরও বলেন, ‘এ ঘটনাটি তাঁরা আমাদের না জানিয়ে তাড়াহুড়া করে গোপনে দাফন করে ফেলেন। ঘটনাটি আমরা জানার পর টেকনাফ আমলি আদালতে গিয়ে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি হত্যা মামলা দায়ের করি।’
মামলার আরজির বরাতে তদন্ত কর্মকর্তা টেকনাফ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল্লাহ আল ফারুক বলেন, গত ২২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে বাড়িতে শিশু ফাহিমের রহস্যজনক মৃত্যু হয়। ওই দিনই তড়িঘড়ি করে শিশুটির লাশ স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়। শিশুটির মৃত্যুর দুই দিন পর মামা মো. আলমগীর বাদী হয়ে হত্যার অভিযোগে সৎমা শাকিলাকে প্রধান আসামি করে আদালতে মামলা করেন। এতে আসামি করা হয় আরও চারজনকে।
তদন্ত কর্মকর্তা আরও বলেন, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি মামলাটি তদন্তের স্বার্থে শিশুটির লাশ কবরস্থান থেকে উত্তোলনের জন্য আদালতে আবেদন জানানো হয়। ওই দিন আদালত লাশটি উত্তোলন করার আদেশ দেন। দুপুরে ফাহিমের মৃতদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। কবরস্থান থেকে শিশুটির মৃতদেহ উত্তোলনের পর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। পরে বিকেলে ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহটি কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।