এম.এ আজিজ রাসেল:
কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের সঙ্গে আরসা সন্ত্রাসীদের সংঘর্ষে আব্দুল মজিদ উরফে লালাইয়া নামের এক আরসা কমান্ডার নিহত হয়েছে। এসময় তিন আরসা সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে এপিবিএন পুলিশ। এছাড়াও নিহত আরসা কমান্ডার আব্দুল মজিদ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সংঘটিত ৪টি হত্যা মামলার এজাহার ভুক্ত আসামি।
নিহত আব্দুল মজিদ উখিয়া তানজিমারখোলা ক্যাম্প ১৩, ব্লক— ই/৩ এর নুরুল আমিন এর ছেলে। আটককৃত আরসা সন্ত্রাসীদের পরিচয় হলো— ক্যাম্প—১৯ এর কাশেম আলীর ছেলে মোহাম্মদ তাহের (৪৫), একই ক্যাম্পের সলিমুল্লাহ এর ছেলে লিয়াকত আলী (২৫) ও মৃত সৈয়দ হোসেন এর ছেলে জামাল হোসেন (২০)।
মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে ১৯ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ঘোনারপাড়া পাহাড়ে এই ঘটনা ঘটেছে।
একইদিন বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করে ৮ এপিবিএন এর সহকারী পুলিশ সুপার (অপস এন্ড মিডিয়া) মোঃ ফারুক আহমেদ বলেন— মঙ্গলবার সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযান চালায় ২০ থেকে ২৫ জনের পুলিশের একটি টিম। এসময় আমিন মাঝির বাড়ির পাশে কয়েকটি ঘর ঘিরে ফেলে এপিবিএন সদস্যরা।পুলিশের উপস্থিতি টের পেলে আরসা সন্ত্রাসীরা পুলিশকে লক্ষ করে গুলি ছুড়তে শুরু করলে পুলিশও আত্মরক্ষার্থে সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য করে পাল্টা গুলি চালায়। পরে এলাকা ও ঘর তল্লাশি করে তিন আরসা সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়। একই সাথে এক আরসা কমান্ডারের লাশ ও একটি আগ্নেয়াস্ত্র, দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। ঘটনার সময় ২ জন পুলিশ সদস্য আহত হন।
তিনি আরো জানান— উদ্ধারকৃত মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। আইনী প্রক্রিয়া শেষে ধৃতদের আদালতে প্রেরণ করা হবে। ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
পুলিশ ও রোহিঙ্গা নেতাদের দেওয়া তথ্যমতে, মার্চ মাসে উখিয়ার বিভিন্ন আশ্রয়শিবিরে ১০টি পৃথক সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় অন্তত ১১ জন রোহিঙ্গা নিহত হন। গুলিবিদ্ধ হয় এক শিশুসহ চারজন। এ নিয়ে গত পাঁচ মাসে আশ্রয়শিবিরে সংঘাতে অন্তত ৩৭ রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ জন রোহিঙ্গা মাঝি, ৯ জন আরসা সন্ত্রাসী, একজন স্বেচ্ছাসেবক ও বাকিরা সাধারণ রোহিঙ্গা।
সম্প্রতি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়—সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে অস্থিরতার জন্য আরসাসহ তিনটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ও সাতটি ডাকাত দল সক্রিয় আছে।