নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কক্সবাজার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল সংলগ্ন নাপ্পাঞ্জাপাড়া মসজিদের পুকুর ভরাট করে দোকান ঘর নির্মাণ করছে একটি চক্র। ইতোমধ্যে চারটি দোকান নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ঘেরাবেড়া দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে মুসল্লি ও দখলবাজচক্রের মধ্য সংঘর্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয় মুসল্লিরা জানিয়েছেন, জাফর আলম ও মোকতার আহমদ নামের দুই ব্যক্তির নেতৃত্বে দোকান করে নির্মাণ করা হচ্ছে। এর আগে তারা মসজিদের পুকুরের জমি নিজেদের নামে খতিয়ান সৃজন করেছে। যার খতিয়ান নং-৫৩১১। এ বিষয়ে কক্সবাজার যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালতে মামলা চলমান। যার অপর মামলা নং-৫০/২৩। মসজিদ কমিটির পক্ষে সভাপতি শওকত ওসমান ও সাধারণ সম্পাদক শাহনেওয়াজ চৌধুরী গত ৪ জুন এই মামলা দায়ের করেন। মামলায় 'ভুয়া খতিয়ান সৃজনকারী' হিসেবে ১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহনেওয়াজ চৌধুরী বলেন, কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা মৌজার বিএস খতিয়ান নং-৯৯৭ভুক্ত ৬০ শতক জমি নাপ্পাঞ্জাপাড়া জামে মসজিদের নামে চূড়ান্ত বিএস খতিয়ান রেকর্ড হয়। সেখানে মসজিদ এবং পুকুর রয়েছে। মোতওয়াল্লি মুবিনুল হকের মৃত্যুর পরে তার ওয়ারিশগণ মসজিদের পুকুরের জমি নিজেদের মালিকানা দাবিতে ভুয়া খতিয়ান সৃজন করে। যার খতিয়ান নং-২২৭৬। পরবর্তীতে তার ওয়ারিশগণ শহরের দক্ষিণ রুমালিয়ারছড়া এলাকার জাফর আলম ও মোকতার আহমদকে একই জমি বিক্রি করে। তারাও নিজেদের নামে পৃথক খতিয়ান সৃজন করে। যার নং-৫৩১১।
পরে ওই খতিয়ান থেকে জাফর আলম নিজের নামে আলাদা খতিয়ান সৃজন করে। যার সৃজিত বিএস খতিয়ান নং-১২২৩৪।
মসজিদ কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন,
দুই দফায় জাল খতিয়ান সৃজনের মাধ্যমে মসজিদের জমি দখলের চেষ্টা করছে চিহ্নিত চক্রটি। দোকানপাট নির্মাণ করে যাচ্ছে। বাধা প্রদান করলে উল্টো মামলার হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।
মসজিদের জমি উদ্ধার করে দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন সভাপতি শওকত ওসমান।
মসজিদের পুকুর ভরাট করে দোকানঘর নির্মাণের বিষয়ে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারি কমিশনার (ভূমি)সহ সংশ্লিষ্টদের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয় এলাকাবাসী। কিন্তু কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় দখলবাজি বন্ধ হয় নি।
এদিকে, মসজিদের জমি উদ্ধার করতে মুসল্লিসহ এলাকাবাসী ঐক্যবদ্ধ। অন্যদিকে খতিয়ান সৃজনকারীরা দখল ধরে রাখতে মরিয়া। নানা অপকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে তারা।
তাছাড়া নাপ্পাঞ্জাপাড়া পূর্ব গলির রাস্তা থেকে ১৪ ফুট মতো দখল করে বাউন্ডারিওয়াল করা হয়েছে। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বড় ধরণের সংঘাত, সংঘর্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, বৃহত্তর বাসটার্মিনাল এলাকায় অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটলে মসজিদের পুকুরটি ব্যবহার হতো। এলাকাবাসীর উপকারে আসতো। সেই পুকুরটি ভরাট করায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।