মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

১৫ হাজার ইয়াবা টেবলেট পাচারের মামলায় এক রোহিঙ্গা সহ ২ জন আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। একইসাথে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে প্রত্যেককে আরো ১ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-চতুর্থ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মোঃ মোশারফ হোসেন রোববার (৩০ জুলাই) এ রায় ঘোষণা করেন। একই আদালতের বেঞ্চ সহকারী প্রনব কান্তি শর্মা এ তথ্য জানিয়েছেন। রাষ্ট্র পক্ষে অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট শওকত বেলাল মামলাটি পরিচালনা করেন।

যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত আসামীরা হলো : কক্সবাজারের উখিয়ার ০১ ইস্ট রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পের ব্লক-১৮ এর মো: ছিদ্দিক ও খুরশিদা বেগমের পুত্র রোহিঙ্গা মোঃ হাসান (২২) এবং কক্সবাজার পৌরসভার পেতা সওদাগর পাড়ার আবদুশ শুক্কুর ও জুলেখা বেগমের পুত্র সিরাজুল মোস্তফা (২৩)। রায় ঘোষণার সময় দন্ডিত আসামীরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ :
২০২১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের রামু’র মরিচ্যা যৌথ চেকপোস্টে ৩০ বিজিবি’র একটি টিম কক্সবাজার অভিমুখী একটি প্রাইভেট কারকে থামিয়ে প্রাইভেট কারের ড্রাইভার মোঃ হাসান ও যাত্রী সিরাজুল মোস্তফাকে আটক করে। পরে তাদের স্বীকারোক্তি মতে বিজিবি সদস্যরা কারটি তল্লাশী করে ১৫ হাজার পিচ ইয়াবা টেবলেট উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় ৩০ বিজিবি’র নায়েব সুবেদার মোঃ মাহমুদুল হাসান বাদী হয়ে রামু থানায় ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে উপরোক্ত ২ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। যার রামু থানা মামলা নম্বর : ১৯/২০২১ ইংরেজি, জিআর মামলা নম্বর : ৫১৭/২০২১ ইংরেজি (রামু) এবং এসটি মামলা নম্বর : ৫০৩/২০২২ ইংরেজি।

বিচার ও রায় :
মামলাটি বিচারের জন্য চার্জ (অভিযোগ) গঠন করে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মো: মোশারফ হোসেন এর কোর্টে বিচারকার্য শুরু হয়। মামলায় ৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, সাক্ষীদের আসামীদের পক্ষে জেরা, রাসায়নিক পরীক্ষার রিপোর্ট যাচাই, আসামীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্ক সহ বিচারের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে বিজ্ঞ বিচারক মো: মোশারফ হোসেন রোববার মামলাটির রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।

রায় ঘোষণার দিনে আসামী রোহিঙ্গা শরনার্থী মো: হাসান ও বাংলাদেশী নাগরিক সিরাজুল মোস্তফা কে ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬(১) সারণীর ১০(গ) ধারায় দোষী সাব্যস্থ করে বিজ্ঞ বিচারক মো: মোশারফ হোসেন তাদেরকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। একইসাথে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো এক বছর করে সশ্রম কারাদন্ড দেন।