নিজস্ব প্রতিবেদক:

স্কুলে যাওয়ার পথে হোঁচট খেয়ে ব্যথা পেয়েছে; হালকা মাথা ব্যথা, জ্বরজ্বর ভাব কিংবা সর্দিকাশি অনুভব করছে-এমন শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছে ক্ষুদে ডাক্তারগণ। তাও ক্লিনিকে কিংবা হসপিটালে নয়, স্কুলের আঙ্গীনায়। চিকিৎসকরা আবার কোন সনদধারীও নন। দক্ষ চিকিৎসকের কাছ থেকে পেয়েছে প্রাথমিক ধারণাপত্র। সেই ধারণাকে কাজে লাগিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা বাংলাবাজার আইডিয়াল ইনস্টিটিউট স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গণে ‘ক্ষুদে ডাক্তার’দের বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা শিক্ষা অফিসার মো. নাছির উদ্দিন ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন।
তিনি আইডিয়ালের ক্ষুদে ডাক্তারদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। বিদ্যালয়ের ডেঙ্গু সচেতনতাসহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও রোগ প্রতিরোধ বিষয়ে তাদের অধিকতর সচেতন কার্যক্রমকে দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য দৃষ্টান্ত হতে পারে বলে আশাবাদ শিক্ষা অফিসারের।
স্কুলের অধ্যক্ষ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণে ৩৬ শিক্ষার্থী হাতেকলমে প্রশিক্ষণ পেয়েছে। তাদের প্রত্যেককে ‘ক্ষুদে ডাক্তার’ লিখা ইউনিফর্মও প্রদান করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি দেলোয়ার হোসেনসহ শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
কর্মসূচি সম্পর্কে অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান বলেন, বিগত মাসখানেক যাবত সচেতনতামূলক কাজ করছে ক্ষুদে ডাক্তারগণ। হাতধোয়া থেকে শুরু করে নিত্যনৈমিত্তিক কাজগুলো কিভাবে স্বাস্থ্যকর পন্থায় করা যায়, সে বিষয়ে প্রচারণা কার্যক্রম চালানো হয়েছে। ক্ষুদে ডাক্তারদের এই প্রচারণা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি এলাকায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী  শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক সারাদেশে স্কুল ভিত্তিক ক্ষুদে ডাক্তার তৈরির পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে শ্রেণি ভিত্তিক ক্ষুদে ডাক্তারদের কার্যক্রম দীর্ঘদিন থেকে চলমান।
উল্লেখ্য, বিদ্যালয় পর্যায়ে হাইজিন শিক্ষার কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে ক্ষুদে ডাক্তারদের প্রশিক্ষিত করা খুবই প্রয়োজন, যারা বিদ্যালয়ে একটি সক্রিয় সহায়ক দল হিসাবে ভূমিকা রাখতে পারে। শিশুর মাধ্যমে শিশুদের স্বাস্থ্যশিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে ২০১১ সাল থেকে দেশের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্ষুদে ডাক্তার কার্যক্রমের শুরু হয়।
বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ক্ষুদে ডাক্তার কর্তৃক শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা’ বিষয়ক এক অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এ উদ্যোগের আওতায় ক্ষুদে ডাক্তারের ভূমিকায় দেখতে পাওয়া যাবে ১২ থেকে ১৬ বছর বয়সী শিক্ষার্থী বা ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের। তবে, এখনো দেশের অধিকাংশ স্কুলে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়নি।
 
স্বাস্থ্য পরীক্ষার উদ্দেশ্য
১. শিক্ষার্থীদের উচ্চতা, ওজন পরিমাপ এবং দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা করা।
২. শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ উচ্চতা, ওজন ও দৃষ্টিশক্তি সম্পর্কে সচেতন করে তোলা
৩. উচ্চতা, ওজন ও দৃষ্টিশক্তির কোনো সমস্যা থাকলে তা প্রতিকারের ব্যবস্থা করা।