সংবাদ বিজ্ঞপ্তি:

ফিলিস্তিনিের নিরীহ ও বেসামরিক নাগরিকদের প্রতি ইসরাইল এর বর্বরোচিত বোমা হামলা ও হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে কক্সবাজারে ফিলিস্তিন সংহতি সমাবেশ করেছে মানবাধিকার সংগঠন সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট, হিউম্যান রাইটস এন্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম -সিইএইচআরডিএফ।

কক্সবাজার সদর উপজেলার বাস টার্মিনাল চত্বরে আয়োজিত সভায় সিইএইচআরডিএফ প্রধান নির্বাহী মোঃ ইলিয়াছ মিয়া’র সভাপতিত্বে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শ্রমিক নেতা ছৈয়দ নুর, মানবাধিকার কর্মী দেলোয়ার হোসেন, আরফান রানা ও মোহাম্মদ সবুজ।

ফিলিস্তিন সংহতি সমাবেশ তত্ত্বাবধায়ক কমিটির সভাপতি ও সিইএইচআরডিএফ এর সহকারী প্রধান লিডার(এলডিএস) আব্দুল মান্নান রানা’র পরিচালনায় সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সহকারী প্রধান সমন্বয়ক(এসওএস) রুহুল আমিন। আয়োজকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন সহকারী প্রধান সংগঠক(ওডিএস) রেজাউল করিম, এক্টিং কো-অর্ডিনেটর(ব্যবস্থাপনা) রেজাউল হায়াত রেজা এবং কক্সবাজার মেট্রোপলিটন কাউন্সিল সেক্রেটারি হুমায়ুন কবির।

সভাপতির বক্তব্যে সিইএইচআরডিএফ প্রধান নির্বাহী মোঃ ইলিয়াছ মিয়া বলেন, পশিচমা বিশ্ব ফিলিস্তিনে বর্বরতার প্রতিবাদ ও নিন্দা না জানিয়ে বরং খাদ্য সরবরাহ , বিদ্যুৎ সংযোগ,
মেডিকেল সাপোর্ট সব ধরনের ত্রাণসামগ্রী বন্ধ করে দিয়ে প্যালেস্টাইনকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন। যা পশ্চিমা বিশ্বের মানবতার চরম বিপর্যয় বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, মানবাধিকার সকল জাতিগোষ্ঠীর জন্য এক ও অভিন্ন। কিন্তু, পশ্চিমা বিশ্বের নিরবতা এবং ইসরাইলকে উসকিয়ে দেওয়া অনেকটা কোভিড-১৯ এর পরবর্তী সময়ে পৃথিবীকে আরও বেশি সংকটের দিকে ধাবিত করার মত। যা পৃথিবীর এই অস্থির সময়ে কোনোভাবেই কাম্য নয়। তিনি ইসরাইলি ইহুদি জনগোষ্ঠীর অতীত ইতিহাস স্মরণ করে তাদের রাষ্ট্রহীনতা নিয়ে কথা বলেন। তিনি জাতিসংঘ ও বিশ্বনেতাদের প্রতি ফিলিস্তিনের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান।

অতিথির বক্তব্যে শ্রমিক নেতা ছৈয়দ নুর বলেন, আমাদের সবাইকে ইসরাইলের বর্বতার বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। তিনি ফিলিস্তিনবাসীর প্রতি সন্বাকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

অতিথির বক্তব্যে মানবাধিকার কর্মী দেলোয়ার হোছাইন বলেন, সুপার মিডিয়া’র কল্যাণে সমগ্র পৃথিবী দেখছেন ইসরাইল ইতিমধ্যে গাজা উপত্যকায় সিরিজ বোমা হামলা করে ইতিহাসের এই তৃপ্তিভূমিকে গোরস্তানে পরিণত করছেন।

সহকারী প্রধান লিডার(এলডিএস) আব্দুল মান্নান রানা বলেন, ইসরাইল নিরীহ ফিলিস্তিনের উপর আন্তর্জাতিক আইনে নিষিদ্ধ ফসফরাস বোমা নিক্ষেপ করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আইনকে অমান্য করেছেন বটে। পাশাপাশি, তারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের মত ন্যাক্কারজনক অপরাধ সংগঠিত করেছেন।যা এরকম একটি আধুনিক সময়ে এসে কোনোভাবে কাম্য নয়।

স্বাগত বক্তব্যে সহকারী প্রধান সমন্বয়ক(এসওএস) রুহুল আমিন বলেন, প্যালেস্টাইন যুগের পর যুগ ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের দ্বারা জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছে।কিন্তু,গত একদশক ধরে যা চরম মাত্রায় পৌঁছেছে। হামাস প্রতিরক্ষামূলক প্রতিবাদ করলে ইসরাইল আরও চরম মাত্রায় আগ্রাসী হয়ে তার প্রতিক্রিয়া দেখায়।

সহকারী প্রধান সংগঠক(ওডিএস) রেজাউল করিম বলেন,গত ৫ দিনে ইসরাইল নারী,শিশু,বয়স্ক সহ অন্তত ২.৫ হাজার প্যালেস্টাইনের সাধারণ নাগরিককে হত্যা করেছেন।পাশাপাশি ৫ হাজারেও বেশি সাধারণ নাগরিক আহতাবস্থা রয়েছে।অথচ,প্যালেস্টাইন তরুণরা রাসায়নিক অস্ত্র, ফসফরাস ও সিরিজ বোমা হামলার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলছে কেবল পাথর নিক্ষেপের মাধ্যমে।

এক্টিং কো-অর্ডিনেটর(ব্যবস্থাপনা) রেজাউল হায়াত রেজা বলেন, আমরা কক্সবাজার হতে ফিলিস্তিনবাসীর জন্য সংহতি জানাচ্ছি। তিনি ইসরাইলকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে বিচারের আওতায় আনার জন্য বিশ্বনেতাদের আহ্বান জানান।

কক্সবাজার মেট্রোপলিটন কাউন্সিল সেক্রেটারি হুমায়ুন কবির বলেন, গাজসবাসীকে ন্যূনতম মানবজক সহায়তা হতে বঞ্চিত করে ইসরাইল আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে।

সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার সদর এরিয়া কাউন্সিল সেক্রেটারি এমদাদুল হক, কক্সবাজার মেট্রোপলিটন ক্লাস্টার সেক্রেটারি মঈন উদ্দিন, সহকারী প্রচার সম্পাদক নাসির উদ্দিন সোহেল, খুনিয়া পালং ফোরাম সমন্বয়ক গোলাম আজম।

এতে শতাধিক স্থানীয় জনগণ, নাগরিক প্রতিনিধি, বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিক, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, শ্রমিক নেতৃবৃন্দ, মানবাধিকার কর্মী, বয়স্ক, নারী, তরুণ, কিশোর ও শিশুরা উপস্থিত ছিলেন।