ইমাম খাইর, সিবিএনঃ
কক্সবাজার কেন্দ্রিক সুনীল অর্থনীতি (ব্লু-ইকোনমি) এর বিকাশের লক্ষ্যে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক) নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করছে। তারই ধারাবাহিকতায় কক্সবাজারের মহাপরিকল্পনার প্রণয়নের অংশ হিসেবে শনিবার (২১ অক্টোবর) অংশীজনদের নিয়ে ‘Unlocking Bangladesh’s Potentials of Blue Economy’ শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
কউক চেয়ারম্যান কমডোর মোহাম্মদ নুরুল আবছার (অবঃ) এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল।
তিনি বলেন, কক্সবাজার, তার বিস্তৃত উপকূলরেখা এবং সমৃদ্ধ সামুদ্রিক সম্পদসহ, বিপুল সম্ভাবনার আলোকবর্তিকা হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে। আমাদের জেলা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং অর্থনৈতিক সম্ভাবনার এক অনন্য মিশ্রণ। সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে আমরা স্থানীয় জনগণের জন্য আরও সমৃদ্ধ ভবিষ্যত তৈরি করতে পারি। আধুনিক মৎস্যসম্পদ ব্যবস্থাপনা, পর্যটনের সমৃদ্ধি, বন্দর উন্নয়ন, পরিকল্পিত বিনিয়োগে ও সঠিক নীতি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা গেলে সুনীল অর্থনীতি ২০৩০ সালের মধ্যে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) বার্ষিক অতিরিক্ত ৬ বিলিয়ন ডলার অবদান রাখতে পারে। তাই সমৃদ্ধ কক্সবাজার গঠন ও সুনীল অর্থনীতি সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।
সেমিনারে সহ-আয়োজন ছিল জুনিয়র চেম্বার ইন্ট্যারন্যাশনাল কক্সবাজার।
সেমিনারে কউক চেয়ারম্যান তার বক্তৃতায় বলেন, “বর্তমান বিশ্বের অর্থনীতিতে ব্লু-ইকোনমির অবদান প্রায় ১.৫ ট্রিলিয়ন ডলার যা ২০৩০ সাল নাগাদ দ্বিগুন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাংলাদেশে ব্লু-ইকোনমি বিভিন্ন পলিসি তৈরি করা হলেও যথাযত গুরুত্বের অভাবে সুনীল অর্থনীতি থেকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সম্ভাবনা অধরাই থেকে যাচ্ছে।“ তিনি এ বিষয়ের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে একটি পৃথক সংস্থা তৈরি ও ‘ওশান গর্ভন্যান্স ফ্রেমওয়ার্ক’ তৈরির প্রস্তাব রাখেন।
তিনি আরও বলেন, “কউক কক্সবাজারে সুনীল অর্থনীতির বিকাশে প্রয়োজনীয় পলিসিগত সহায়তা দিতে বদ্ধপরিকর। তাই এ সংক্রান্ত দীর্ঘমেয়াদি রোডম্যাপ প্রণয়নের জন্য বিষয়টিকে কক্সবাজার জেলার মহাপরিকল্পনা প্রণয়ণ প্রকল্পের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।“ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের অংশীজন ও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে আয়োজিত এই সেমিনার থেকে প্রাপ্ত সুপারিশসমূহ বাস্তবায়নে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে জানিয়ে তিনি স্থানীয় ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের কক্সবাজারে সুনীল অর্থনীতির বিকাশে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
সেমিনারে বিশেষজ্ঞ বক্তা হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. কে এম আজম চৌধুরী, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুর রহমান, বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. জাকারিয়া প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। পরে উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে উপস্থিত ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগন ও স্থানীয় উদ্যোক্তাগন তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।