নাজনীন সরওয়ার কাবেরী
ছোট বেলা থেকে বঙ্গবন্ধু তণয়ার সাথে আমাদের পারিবারিক ও রাজনৈতিক বন্ধন। যতবারই দেখা হয়েছে মায়ের মতো তাঁর পা ছুয়ে দোয়া পাওয়ার সুযোগ হয়েছে।১৯৮৬ সালে যখন নবম শ্রেনীতে পড়ি আব্বার অনুরোধে নেত্রীকে "স্বাধীনতা "নামক রামুর কবি আশীষ কুমার বড়ুয়ার কবিতা আবৃত্তি শুনিয়েছিলাম। আমার আবৃত্তি শুনে প্রশংসায়
তিনি আমাকে কোলে তুলে আদর জানালেন। ৩২ নম্বর ধানমন্ডিতে সেদিন রামুর দূর্বার শিল্পী গোস্ঠির প্রায় সত্তর জন শিল্পী ও কলা কুশলী উপস্হিত ছিলেন। কোলে তুলে আদর জানাবার ও অনেক ছবি তোলা হয়েছিল।কিশোর বেলায় এসব ছবি দেখে নিজেকে শিশু ভেবে লজ্জায় সংরক্ষণ ও করিনি।এখন তাঁর নিশ্ছিদ্র প্রটোকল।মন্চে উঠেই তিনি জনগণ কে সালাম জানালেন।এরপর আমাদের সাথে দেখা করলেন।সবাই হাতে সালাম দিলেন।আমি
বললাম নেত্রী পা ছুঁয়ে দোয়া নিতে চাই। তিনি বললেন,' নেবে একটু পর '। বক্তব্য দিলেন মহেশখালীর প্রার্থী 'জনগণ কে চিনিয়ে দিলেন।
শেষ করে আবারও একে একে বিদায় নিয়ে
আমার সামনে আসলেন। মিটিং শেষ করার পর তিনি ঠিকই আমার চাওয়াটা খেয়াল রেখেছিলেন ,যে আমি পা ছুঁয়ে সালামের প্রস্তাব করেছিলাম। সামনে এসেই নিরুত্তর মিস্টি হাসিতে আমার দিকে চেয়ে রইলেন।
আমিও ঠিক তাই ,মন্ত্র মুগ্ধের মতো প্রিয় নেত্রীর পা ছুঁয়ে দোয়া চাইলাম।মায়ের মতো 'নেত্রী '
মাথায় হাত রেখে দোয়া দিলেন। প্রিয় নেত্রী আমার আব্বাকে ওসমান চাচা বলতেন। আব্বার কৃতিত্ব কর্মকান্ড এই মানুষ টি কখনো ভুলেননি। আমার মায়ের সাথেও বন্ধুত্ব পূর্ণ সম্পর্ক ছিল।এখনও
মায়ের হাতের রান্নার সুযোগ পেলেই প্রশংসা করেন।১৯৬৮সালে আমাদের বাড়িতে বিয়ের পর স্বামী কে নিয়ে প্রথম নেত্রী বেড়াতে আসেন।(তখন আমার জন্ম হয়নি) ঢাকায় ফিরে গিয়ে বঙ্গবন্ধু কে নেত্রী বলেছিলেন, ওসমান চাচার বাসায় স্পন্জের মতো নরম পিঠা খেয়েছি।পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু আব্বাকে বললেন,"হাসুকে নাকি তোমরা স্পন্জ পিঠা
খাইয়েছো! "এটি শুনে আমার মা রামু থেকে ভাপা পিঠা বানিয়ে পাঠালেও আমার আব্বার দুঃখ ছিল ৩২ নম্বর ধানমন্ডি ঢাকা পর্যন্ত সে পিঠা নিতে
গিয়ে ঠান্ডায় শক্ত হয়ে গিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু আর নরম শীতপিঠা খেতে পারেননি। বঙ্গবন্ধুর সেই ভালবাসার কন্যা হাসু এখন শুধু আমাদের একজন নয় ,তাঁর অসাধারণ দক্ষতা ,অনন্য চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য,
চমৎকার নেতৃত্বের কারনে তিনি ডেলটা প্ল্যানের সফল পরিচালক। আজ শেখ হাসিনা পুরো বিশ্ব নেতৃত্বের রোল মডেল। কথা দিয়ে কথা রাখেন বলেই 'গণ মানুষের অন্তরে বাহিরে শুধুই শেখ হাসিনা।
লেখক: সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক , বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ , কক্সবাজার জেলা।