থানা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ

শেফাইল উদ্দিন:

কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের ছাতিপাড়া গ্রামের( অবঃ) প্রধান শিক্ষকের জায়গা দখলে নিতে মরিয়া উঠেছে প্রভাবশালী চক্র। ভুক্তভোগী প্রতিকার চেয়ে ঈদগাঁও থানা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার জালাবাদ ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দা ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের( অবঃ) প্রধান শিক্ষক এম. রশিদ আহমদ সিকদারের বাড়ির পার্শ্ববর্তী ঈদগাঁও মৌজার আর.এস ১৬২৩নং খতিয়ানের ১৪৫৫১ ও ১৪৫৫৭ নং দাগের .০১৮ একর জমি বিগত ১৬/০৪/১৯৯৬ ইং তারিখের ৭৬৬নং কবলামূলে ক্রয় করে শান্তিপূর্ণ ভোগদখলে রয়েছেন। এম. রশদি আহমদ বাদী হয়ে উক্ত জমির বি.এস খতিয়ানে মালিকের নাম ভুল লিপি হওয়ায় খতিয়ান সংশোধন বা স্বত্ব উচ্চারণের প্রার্থনায় বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ আদালত, সদর কক্সবাজারে অপর-২৫৬/২০০৭ নং মামলা রুজু করেন। বিবাদীগণের প্রতি সমন রীতিমত জারী করা হয়। কিন্তু তার পরও বিবাদীপক্ষ ওকালতনামা যোগে হাজির হয়ে মামলার প্রতিদ্বন্দিতা না করায় বিগত ১০/০১/২০১১ইং তারিখে উক্ত মামলার তফশীলোক্ত জমিতে বাদীর স্বত্ব রহিয়াছে মর্মে উচ্চারণের ডিক্রী হয়। এতদ্বারা নালিশী তপশীলোক্ত জমি সংক্রান্ত প্রচারিত বি.এস ১২৫৮নং খতিয়ান ভুল, ফেরবী, অকার্যকর তৎদ্বারা বাদী ও নালিশী জমি বাধ্য নহে মর্মে ঘোষণা করে একতরফাসূত্রে ডিক্রী হয়।

রফিকুল হক গং বিজ্ঞ আদালতের একতরফা সূত্রে প্রদত্ত রায়কে অমান্য করে মামলার বাদীকে বিভিন্নভাবে হয়রানী করেন। এম. রশিদ আহমদ ২৫৬/২০০৭ইং মামলাটি বিজ্ঞ আদালতে পুণঃ দায়ের করেন। এতে অভিযুক্ত বিবাদীরা মামলার প্রতিদ্বন্ধিতা করেন। দীর্ঘ প্রায় ১২বছর মামলা পরিচালিত হয়ে বিগত ২৮/০৩/২০২৩ইং তারিখে মামলাটি দোতরফাসূত্রে বাদী এম. রশিদ আহমদ সিকদারের পক্ষে ডিক্রী হয়। উক্ত মামলার আদেশ হয় যে, নালিশী আর.এস ১৬২৩ নং খতিয়ানের ১৪৫৫১নং দাগের তুলনামুলক বি.এস ১২৫৮ নং খতিয়ানের ১৪৭৫১ নং দাগের ০.১৩ একর জমিতে বাদীর স্বত্ব আছে মর্মে ঘোষণা করা হলো। এছাড়াও উক্ত জমি সংক্রান্ত ১২৫৮নং বি.এস খতিয়ান ভুল, ভিত্তিহীন ও অকার্যকর মর্মে এবং এই খতিয়ান দ্বারা বাদী কিংবা নালিশী জমি বাধ্য নয় মর্মে ঘোষণা করা হলো।

অভিযুক্ত বিবাদী রফিকুল হক গং দেশের প্রচলিত আইন অমান্যকারী হওয়ায় বিজ্ঞ আদালতের রায়কে তোয়াক্কা না করে স্থানীয় মাদকসেবী, বখাটে, সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যূ ভাড়া করে এম. রশিদ আহমদের জমিতে স্থাপনা নিমার্ণে বাঁধা সৃষ্টি করে আসছে। উক্ত জমি জবরদখল করে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণে মরিয়া হয়ে উঠেছে। উক্ত জমিতে স্থাপনা নির্মাণ করলে বাদী ও তার পরিবারের সদস্যদেরকে মারিবে, কাটিবে, হত্যা করিবে বলিয়া প্রকাশ্যে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে। ইতোমধ্যে অভিযুক্ত রফিক গং এর ভাড়াকৃত মাদকসেবী, বখাটে, সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যূরা দা-কিরিচ ও লাঠিসোটা প্রদর্শণ করে আমার জমিতে স্থাপিত সাইনবোর্ড ও সীমানা নির্ধারণ খুটিগুলো দিন-দুপুরে বীরদর্পে তুলে নিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে অবসর প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এম. রশিদ আহমদ জানান, আমার সন্তানেরা সরকারি বিভিন্ন সেবা সংস্থায় কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অন্যান্য পেশায় রয়েছে। আমরা সবাই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ভূমিদস্যূরা আমার জমি জবরদখল করার জন্য স্থানীয় রফিক গং তার ভাড়াকৃত ভূমিদস্যুরা উঠে পড়ে লেগেছে। প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সর্বসাধারণের সার্বিক সহযোগীতা কমনা করেন। অভিযোগ উঠা রফিকুল হকের সাথে কথা হলে জানান, এ রায় ডিগ্রীর বিরুদ্ধে আমি আপীল করেছি। মামলা এখনো চলমান এবং জবর দখল চেষ্টার বিষয়টি অস্বীকার করেন।

ভুক্তভোগী ঈদগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন এবং জেলা প্রশাসক , পুলিশ সুপার , অফিসার ইনচার্জ ঈদগাঁও থানা ও চেয়ারম্যান জালালাবাদ ইউনিয়ন পরিষদে অনুলিপি প্রেরণ করেন।
এলাকাবাসী রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ এড়াতে প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।