আব্দুস সালাম,টেকনাফ:
টেকনাফ পৌরসভা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১১টি ড্রামে মোট ৬৩৮ লিটার অকটেন পাচারের অভিযোগে তিনজনকে আটক করেছে র্যাব-১৫ এর সদস্যরা।
টেকনাফে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরীর নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অবৈধভাবে জ্বালানি তেল (অকটেন) পাচারের অভিযোগে তিন ব্যক্তির কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
আটককৃতরা হলেন,টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড হাবিরছড়ার মৌলভী আব্দুর রহমানের ছেলে হাবিবুর রহমান (২২), একই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড দক্ষিণ লেংগুরবিলের মৃত আবুল কালামের ছেলে নুর হোসেন (৪০) ও টেকনাফ পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড নাইট্যং পাড়ার মৃত মীর মোহাম্মদের ছেলে জাফর আলম (২২)।
কক্সবাজার র্যাব-১৫ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল’ এন্ড মিডিয়া) মোঃ আবু সালাম চৌধুরী গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান,সোমবার (২২ জানুয়ারি) রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের আভিযানিক দল অবৈধভাবে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচার করার উদ্দেশ্যে কতিপয় পাচারকারী জ্বালানি তৈল অকটেনসহ টেকনাফ পৌরসভা এলাকায় অবস্থান করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১৫, সিপিসি-১, টেকনাফ ক্যাম্পের চৌকস আভিযানিক দল উক্ত এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে। এসময় র্যাবের আভিযানিক দলের উপস্থিতি বুঝতে পেরে তিনজন ব্যক্তি তাদের হেফাজতে থাকা অকটেন ভর্তি প্লাস্টিকের ড্রাম রেখে পালানোর চেষ্টাকালে পালানোর সময় তিনজনকেই আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরীর নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে আটককৃত তিন ব্যক্তিকে ১০ হাজার টাকা করে মোট ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত চোরাকারবারিরা তাদের নাম-ঠিকানা প্রকাশ করে। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃতদের হেফাজত থেকে ১১টি ড্রামে সর্বমোট ৬৩৮ লিটার অকটেন (যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৮৪ হাজার টাকা) জব্দ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়,আটককৃত চোরাকারবারিরা দীর্ঘদিন যাবৎ এই চোরাকারবারের সাথে জড়িত। তারা পরস্পর-পরস্পরের সহযোগিতায় দেশের বিভিন্ন পেট্রোল পাম্প থেকে পাইকারি দামে জ্বালানি তৈল অকটেনসহ নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রী ক্রয় করে নিজেদের হেফাজতে মজুদ করতো। পরবর্তীতে আর্থিকভাবে অধিক লাভবান হওয়ার জন্য সমুদ্রের বিভিন্ন চ্যানেল ব্যবহার করে অবৈধভাবে চোরাইপথে পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারে জ্বালানি তৈল পাচার করে থাকে। অদ্য অবৈধভাবে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচারের লক্ষ্যে জ্বালানি তৈল অকটেন উক্ত স্থানে মজুদ করেছিল এবং একপর্যায়ে উপরোল্লিখিত আলামতসহ র্যাবের আভিযানিক দলের কাছে ধৃত হয়।
তিনি আরো জানান,অভিযুক্ত ব্যক্তিদেরকে পেট্রোলিয়াম আইন, ২০১৮ এর ২০ ধারায় দন্ড প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য,সাম্প্রতিক সময়ে কক্সবাজার জেলার সমুদ্রের বিভিন্ন চ্যানেল ব্যবহার করে কতিপয় চোরাকারবারি জ্বালানি তৈল অকটেনসহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র অবৈধভাবে চোরাচাইপথে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচার করছে মর্মে তথ্য পায় র্যাব-১৫। এই তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১৫, কক্সবাজার উক্ত চোরাকারবারি ও পাচারকারী চক্রের সদস্যদের আটক এবং পাচার রোধে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।