অনলাইন ডেস্ক:
সেনাবাহিনীর পরোক্ষ সহযোগিতায় ২০১৮ সালে পাকিস্তানের মসনদে বসেন ইমরান খান। চার বছর ক্ষমতায় থাকাকালীন দ্বন্দ্বে জড়ান সেনাবাহিনী ও অন্যতম বৈদেশিক মিত্র আমেরিকার সঙ্গে। যার জেরে ২০২২ সালে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন বিশ্বকাপজয়ী ক্যাপ্টেন খান। সর্বশেষ সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে প্রবল বাধা সত্ত্বেও চমক দেখায় ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ তথা পিটিআই। এরপরই ইমরান ও অন্যান্য নেতাকর্মীদের মুক্তির জন্য সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেন-দরবার করছে পিটিআই এমন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পিটিআইয়ের শীর্ষ নেতা ব্যারিস্টার গওহর খান দলের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান ও কারাগারে আটক অন্যান্য নেতাকর্মীদের মুক্তি আহ্বান জানিয়েছেন। জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সেনাপ্রধান জেনারেল অসিম মুনিরের এক বক্তব্যের পরই এমন আহ্বান জানান পিটিআইয়ের বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
রোববার এক বিবৃতিতে জেনারেল অসিম মুনির নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য পাকিস্তানের জনগণকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, নৈরাজ্য ও মেরুকরণের রাজনীতি থেকে দেশকে এগিয়ে নিতে জাতির জন্য একটি স্থিতিশীল হাত ও নিরাময় স্পর্শ প্রয়োজন।
পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর মিডিয়া উইংয়ের বরাতে জানা যায় জেনারেল অসিম মুনির বলেন, নির্বাচন জয়-পরাজয়ের কোনো শূন্য সমষ্টি নয়। বরং এটি জনগণের ম্যান্ডেট পূরণের একটি মহড়া। সেনাপ্রধানের এমন বক্তব্যের পরই পিটিআই নেতা গওহর খান এক বিবৃতিতে জানান, রাজনৈতিক নিরাময়ের অর্থ হলো দেশে কোনে রাজনৈতিক বন্দি না থাকা।
পিটিআই-এর বর্তমান চেয়ারম্যান বলেন, পিটিআইয়ের ম্যান্ডেটকে অবশ্যই সম্মান করতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে দেশের কোনো রাজনৈতিক নিরাময় হবে না। সেনাপ্রধানের বক্তব্যে উল্লিখিত সমন্বিত সরকার ব্যবস্থার প্রতি ইঙ্গিত করেন গওহর খান বলেন, এর মানে জোট সরকার নয়। সমন্বিত সরকার বলতে প্রতিটি দলকে একটি বিষয়ে একমত হতে হবে যে তারা জনগণের ম্যান্ডেটকে সবার আগে সম্মান করবে।
জাতীয় পরিষদের ১০ নম্বর আসন থেকে জয়ী এ নেতা জানান, নির্বাচনে ১০২টি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিজয় অর্জন করেছেন। এর মধ্যে ৯৫টি আসনেই জয়ী হয়েছেন পিটিআইয়ের সমর্থিত প্রার্থীরা। এ সময় অন্তত ৫০টি আসনে পিটিআই সমর্থিত প্রার্থীদের জোরপূর্বক হারিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন গওহর।
এদিকে নির্বাচনে কোনো দলই সরকার গঠনের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে না পারায় অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে সরকার গঠন। এমন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলো জোট করতে না পারলে পাকিস্তানের ক্ষমতায় আবারও সেনাবাহিনীর প্রত্যাবর্তন ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কিছু বিশ্লেষক।
সূত্র: কালবেলা