ইমাম খাইর, সিবিএন:
রামু উপজেলার পাহাড়ি ও বিচ্ছিন্ন জনপদ ঈদগড় হাসনাকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্ণাঢ্য আয়োজনে পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
মহান দিবসটি ঘিরে ছাত্র-ছাত্রীরা ভোর থেকে স্কুল আঙ্গিণায় জমায়েত হতে থাকে। হাতে বাংলাদেশের মানচিত্র, জাতীয় ফুল শাপলা, বাংলা বর্ণমালা ও লালসবুজের পতাকা। বুকে জড়িয়ে নিয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি। শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা জানাতে ফুল নিয়ে যায় শিক্ষার্থীরা। শোকের প্রতীক কালো পতাকাও ছিল তাদের হাতে।
তখনো সূর্যের আলো পুরোপুরি উদিত হয়নি। কিন্তু শিক্ষার্থীরা বেরিয়ে গেছে আনন্দ আর উচ্ছ্বাসের সঙ্গে।
প্রধান শিক্ষক সরওয়ার আলমের নেতৃত্বে র্যালিতে ভাষা শহীদদের ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড ধারণ করে ছোট্টমনিরা। স্কুল আঙ্গিণা থেকে শুরু হওয়া বিশাল র্যালিটি গ্রামের মেঠোপথে এগিয়ে যায় ঈদগড় এএমবি উচ্চ বিদ্যালয়ের দিকে।
দেশের গানের তালেতালে সজ্জিত ছাত্রছাত্রীদের সুশৃঙ্খল এই আয়োজন হাসনাকাটার মতো একটি গ্রামীণ জনপদে খবর করে দিয়েছে। সন্তানদের এক পলক দেখতে ঘর থেকে বেরিয়ে যায় বাবা-মা, আত্নীয় স্বজন। ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর ব্যতিক্রমী এই শোভাযাত্রা প্রাণভরে দেখেছে ঈদগড়ের সাধারণ মানুষ।
আধাঘণ্টারও বেশি পায়ে হেঁটে কচিকাঁচা শিক্ষার্থীরা হাজির হয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে। সেখানে কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে। ভাষার গানের সুরে জয়ধ্বনি তুলে। তারপর শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানায়। তখন সুরের ব্যঞ্জনায় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে তৈরি হয় আবেগঘন পরিবেশ।
একুশের কর্মসূচিতে শিক্ষক এজাহারুল ইসলাম, শাহেদা আক্তার, আইরিন খানমসহ সংশ্লিষ্টরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।
তাদের সঙ্গে যোগ দেন স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি খালেদুল ইসলাম। শহীদ বেদীতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন।
উল্লেখ্য, ঈদগড় হাসনাকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৭০ শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষক রয়েছে মাত্র ৪ জন। অল্প সংখ্যক শিক্ষক হলেও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তুলনায় পড়ালেখায় অনেক এগিয়ে। স্কুলটিতে জাতীয় দিবসসমূহ প্রতিবছর যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়। গ্রামীণ জনপদে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে শিক্ষকরা যথেষ্ট আন্তরিক।
প্রধান শিক্ষক সরওয়ার আলমের দক্ষ পরিচালনা এবং ঐকান্তিক আন্তরিকতার ফলে স্কুলটি এগিয়ে যাচ্ছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছে।