এফ এম সুমন, পেকুয়া:
পেকুয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মহিউদ্দিন মাজেদ চৌধুরীর বদলি আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে স্থানীয় বাসিন্ধারা।
বৃহস্পতিবার (২২ শে ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে স্থানীয়রা এই মানববন্ধন করেন।
স্থানীয় স্বাস্থ্য সচেতনমহল আয়োজিত এই মানববন্ধনে পেকুয়ার নানান শ্রেণীর পেশার মানুষ যোগ দেন।
মানববন্ধনে টৈটং দুই নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবু ওমর বলেন, পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছেন বর্তমান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। তিনি বলেন এক সময় এই হাসপাতালে আসলে অন্যত্র পাঠিয়ে দিত কিংবা প্রত্যাশিত সেবা পেতাম না কিন্তু এখন আমরা হাসপাতালে এসে সেবা নিয়ে শান্তি পাই। তার জন্য তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মহিউদ্দিন মাজেদ চৌধুরীর দরকার বলে মনে করেন।
মগনামা ইউনিয়নের বাসিন্দা আবুল কালাম বলেন, একসময় হাসপাতাল নোংরা থাকতো কিন্তু এখন হাসপাতাল দেখার মতো। আজকাল সকল রোগের পরীক্ষা ও এখানে বিনামূল্যে করা যায়, এসব পরিবর্তন মাজেদ স্যারের কারণে হয়েছে আমি চাই তিনি আরো কয়েকবছর থাকুক। তিনি থাকলেই পেকুয়া হাসপাতালের আরো পরিবর্তন হবে।
তার মতো পেকুয়া সদরের মাতবর পাড়া এলাকার বাসিন্দা ফিরোজ আহমেদ বলেন, এই হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠার পর কিছুদিন ভালো ছিল মধ্যখানে হাসপাতালটি ঝিমিয়ে পড়ে কিন্তু মহিউদ্দিন মাজেদ আসার পর হাসপাতালটি ঘুরে দাড়িয়েছে এবং মানুষ সেবা পাচ্ছে তিনি বলেন ইতোমধ্যেই যে-সব উন্নয়ন মুলক কাজ শুরু হয়েছে অন্তত সেগুলো শেষ করার প্রয়োজনে হলেও তিনি মহিউদ্দিন মাজেদকে স্বপদে রাখার দাবি জানান।
এই ছাড়াও স্থানীয় বাসিন্দা মিফতাব উদ্দিন, রিমা আক্তার ও গোয়াখালীর মহিউদ্দিন বলেন, ডাক্তার মহিউদ্দিন মাজেদ আসার পর থেকে পেকুয়া হাসপাতালের চেহেরা বদলে গেছে, এখন মানুষ পেকুয়া হাসপাতালে সত্যিকারের সেবা পায়। তারা মহিউদ্দিন মাজেদ চৌধুরীর বদলি আদেশ প্রত্যাহার করে তাকে স্বপদে বহাল রাখার জোর দাবি জানান।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ২০২২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ডাক্তার মহিউদ্দিন মাজেদ চৌধুরী পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। যোগ দেয়ার পর থেকে তিনি হাসপাতালে প্রথম বারের মতো অপারেশন থিয়েটার চালু, সারাদেশে প্রথম পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বৈকালিক সেবা চালু, উপজেলা পর্যায়ে প্রথম পেকুয়ায় ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি সার্ভিস সেন্টার, আলট্রাসাউন্ড সেবা, মডেল ফার্মেসি চালু, নবজাতকের জন্য এনসিডি কর্নার, এনএসইউ চালু এবং নর্মাল ডেলিভারির সংখ্যা বাড়াতে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। শুধু তাই নয় হাসপাতালে নানান ধরনের সেবা মুলক ও উন্নয়নমূলক কাজ করে তিনি ইতোমধ্যেই স্থানীয়দের প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
গত দুই বছরের সেবা প্রার্থীর সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়েছে। পেকুয়া উপজেলার পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী কুতুবদিয়া ও বাশখালীর মানুষও এই হাসপাতাল থেকে সেবা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। গত বছরের ১২ই অক্টোবর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মহিউদ্দিন মাজেদ চৌধুরীকে পদোন্নতি দিয়ে অন্যত্র বদলি করেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ।
তার বদলি আদেশের খবরে ইতোমধ্যেই স্থানীয়দের মাঝে প্রতিক্রিয়া ব্যাপক সৃষ্টি হয়েছে।