জে. জাহেদ, চট্টগ্রাম:
'বঙ্গবন্ধু জেলে থেকেই বলেছেন আমাকে বই দিন। তিনি মানিক মিয়া ও বেগম মুজিবকে চিঠি লিখেও বারবার বই চেয়েছেন। বঙ্গবন্ধু জেলে থেকে টুথপেস্ট চায়নি, বই চেয়েছেন। এই জন্য শিশু আর তরুণেরা বই পড়বে আর বই পড়বে। আমরা দেশের তরুণকে বই পড়াতে পারলে ওরাই মানবিক মানুষ হবে। শিশুরা যেন কবিতা মুখস্থ করে।'
অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন উপলক্ষ্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন আয়োজিত বই মেলার লেখক সম্মিলন অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে এসব কথা বলেন দেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক।
২৪ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) সন্ধ্যায় নগরীর সিআরবির শিরিষতলা প্রাঙ্গণের এ অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কবি ও প্রাবন্ধিক অভীক ওসমান।
লেখক আনিসুল হক আরও বলেন, 'চট্টগ্রামকে আমরা আলোকবর্তিকা হিসেবে জানি। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছে চট্টগ্রাম থেকে। চট্টগ্রাম থেকেই বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে স্বাধীনতার ঘোষণা এসেছে। সারা পৃথিবী জেনেছে এ ঘোষণা। গণতন্ত্র আন্দোলনসহ সবই চট্টগ্রাম থেকে হয়েছে।'
প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, 'বইমেলা এখন আশাব্যঞ্জক। বইমেলা এখন সিআরবির শিরিষ তলায় প্রাণের মেলায় পরিণত হয়েছে। চট্টগ্রামে বই মেলা আগে বিচ্ছিন্ন ভাবে করা হতো। আমি মেয়র থাকাকালে সেটা এক করে আয়োজন করেছি। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বদৌলতে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে সমাদৃত। একুশ আমাদের প্রেরণা। বাংলা ভাষা আজ জাতিসংঘে স্বীকৃতি পেয়েছে। '
স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমাজ সেবক বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ কাউন্সিলর সাবেক প্যানেল মেয়র নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি ও লেখক জয়নুল টিটো বলেন, 'পাঠকেরা বইমেলার ধুলো মাখুক। পাঠক নতুন বইয়ের ঘ্রাণ উপভোগ করুক। পাঠক বই না কিনলেও বই হাতে ধরে উল্টাপাল্টা করুক। বই মেলা সব লেখকের জন্য উন্মুক্ত হোক। পাঠক ও লেখক বইমেলায় মুক্ত বিহঙ্গের মতো উড়ুক, সেটাই প্রত্যাশা করি।'
তিনি মেলা আয়োজকদের উদ্দেশ্যে বলেন, 'চট্টগ্রামের বইমেলার জন্য নির্ধারিত একটি স্থান দরকার। যদিও শিরিষতলা খুব ভালো স্পট। আরো বড় পরিসরে বইমেলা হলে প্রকাশক বাড়বে। আরো স্টল বাড়বে। লেখকদের জন্য আলাদা একটি প্যাভেলিয়ন দরকার। লেখকের ঘরে যেন বই বিক্রেতা না বসে। সেখানে লেখক যে বিব্রত না হয়।'
অনুষ্ঠানের শুরুতেই চট্টগ্রাম শিল্পী সংসদ জাতীয় সংগীত, দেশীয় সংস্কৃতিসহ দেশের গান পরিবেশন করেন।
অনুষ্ঠান সহযোগিতায় ছিলেন চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদ ও চট্টগ্রামের নাগরিক সমাজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ ও সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংগঠন।