বাংলাট্রিবিউন: অশালীন ও শিষ্টাচারবহির্ভূত বক্তব্যের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর অবশেষে ‘ব্যক্তিগত কারণ’ দেখিয়ে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) ই-মেইলের মাধ্যমে পদত্যাগপত্রটি মন্ত্রণালয়ের সচিবের দফতরে পাঠানো হয়েছে। দফতর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এর আগে বেলা ১২টার দিকে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর জনসংযোগ কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন আহমেদ জানান, মুরাদ হাসান বর্তমানে চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন। দফতর থেকে পদত্যাগপত্র টাইপ করে তার কাছে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, প্রতিমন্ত্রী তার পদত্যাগপত্র স্বাক্ষর করে দফতরেও পাঠাতে পারেন, আবার ব্যক্তিগতভাবে মেইল করে সরাসরি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগেও পাঠাতে পারেন। পাঠানোর পরে আমরা জানাতে পারবো তিনি কোন মারফত পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন।

পরে বেলা সোয়া ১টার দিকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেন যে, ‘ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে প্রতিমন্ত্রী পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।’

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, ‘প্রতিমন্ত্রী বর্তমানে চট্টগ্রামে এক বন্ধুর বাসায় অবস্থান করছেন। সেখান থেকেই তিনি স্বাক্ষর করেছেন।’

ডা. মো. মুরাদ হাসান একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালেও তিনি একই আসনে থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৯ সালে সরকার গঠনের সময় মুরাদ হাসানকে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে ৫ মাসের মাথায় ওই বছরের ১৯ মে তার দফতর পরিবর্তন করে তথ্য প্রতিমন্ত্রী করা হয়।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পরিবারের এক সদস্যকে নিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের ‘নারীবিদ্বেষী’ বক্তব্য নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে আলোচনার মধ্যেই চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে ধর্ষণের হুমকি সংবলিত অডিও ফাঁস হয়। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীদের নিয়েও ডা. মুরাদের অবমাননাকর বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

এ নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। অবশেষে তাকে গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ মঙ্গলবারের (৭ ডিসেম্বর) মধ্যে মন্ত্রিসভা থেকে মুরাদ হাসানকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে।

গতকাল সোমবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, আজ (সোমবার) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। আমি প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে বার্তাটি পৌঁছে দিয়েছি।