এম.মনছুর আলম,চকরিয়া :
নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তপসিল মতে চতুর্থ ধাপে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার আটটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আগামী ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত নির্বাচনে তপসিল অনুসরণে প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের নির্ধারিত দিনক্ষণ ছিল ৭ ডিসেম্বর। নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের ওইদিন ৮টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, সংরক্ষিত সদস্য ও সাধারণ সদস্য পদের প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেন স্ব স্ব ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা। প্রতীক পেয়েই প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক ভাবে কর্মী-সমর্থকদের সাথে নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় নামেন।
চতুর্থ ধাপের চকরিয়া উপজেলায় অনুষ্টিতব্য যেসব ইউনিয়ন আগামী ২৬ ডিসেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত সেই সব ইউনিয়ন গুলো হচ্ছে, চিরিংগা, ফাঁসিয়াখালী, ডুলাহাজারা, খুটাখালী, বমুবিলছড়ি, সুরাজপুর-মানিকপুর, বরইতলী ও হারবাং।
অনুষ্টিতব্য এ নির্বাচনে ৫০৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তৎমধ্যে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৪৯ জন প্রার্থী। এছাড়াও সংরক্ষিত সদস্য পদে ১০২ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৩৫৫ জন প্রার্থী লড়ছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী ৮জন, জাতীয় পাটি (এরশাদ) মনোনীত প্রার্থী ২ জন প্রার্থী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত দুইজন। অন্যান্য প্রার্থীরা হলেন আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী।
উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, আগামী ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্টিতব্য আটটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন দলীয় ও স্বতন্ত্রসহ ৪৯ জন প্রার্থী। এতে উপজেলার চিরিংগা ইউনিয়নে ৬জন প্রাথী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন, কেএম সালাহ উদ্দিন (মোটর সাইকেল), বর্তমান চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জসিম উদ্দিন (চশমা), জামাল হোসেন চৌধুরী (আনারস), নাজের হোছাইন (হাতপাখা), মোহাম্মদ করিম (ঘোড়া), আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী শাহনেওয়াজ রুমেল (নৌকা)। ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৭জন প্রার্থী। তাঁরা হলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী এহসানুল করিম (ঘোড়া), নাছির উদ্দিন (মোটর সাইকেল), জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী বদরুচ্ছালাম (লাঙ্গল), মো: কুতুব উদ্দিন (আনারস), শওকত ইসলাম (চশমা), হামিদ হোসেন (টেলিফোন), আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী হেলাল উদ্দিন (নৌকা)।
ডুলাহাজারা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১১জন প্রার্থী। তাঁরা হলেন, এমরানুল হক (রজনীগন্ধা), কলিম উল্লাহ (টেলিফোন), গিয়াস উদ্দিন (চশমা), জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল আমিন (লাঙ্গল), মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান (মোটর সাইকেল), মোস্তফিজুর রহমান (টেবিল ফ্যান), মোহাম্মদ নাঈম (ঢোল), মোহাম্মদ সেলিম (অটোরিক্সা), আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী মো. শাহনেওয়াজ তালুকদার (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী হাসানুল ইসলাম আদর (আনারস), সোহেল মাহমুদ (ঘোড়া)।
খুটাখালী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৬জন প্রার্থী। তাঁরা হলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী আজিজুল হক (হাতপাখা), এস এম মনজুর আলম (আনারস), বর্তমান চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুর রহমান (মোটর সাইকেল), আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ বেলাল (নৌকা), মোহাম্মদ কায়েস (ঘোড়া) ও মো: রিহাবুল আলম (চশমা)।
বরইতলী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৪জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী এটিএম জিয়া উদ্দিন চৌধুরী জিয়া (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান চোয়ারম্যান জালাল আহমদ সিকদার (আনারস), কফিল উদ্দিন (ঘোড়া), মো. ছালেকুজ্জামান (চশমা) ও রফিক আহমদ ছিদ্দিকী (ঘোড়া)।
বমুবিলছড়ি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩ জন প্রার্থী। তাঁরা হলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল মতলব (চশমা), আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী মনজুরুল কাদের (নৌকা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী কফিল উদ্দিন (আনারস)।
হারবাং ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১০জন প্রার্থী। তাঁরা হলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী ছৈয়দ নুর (মোটর সাইকেল), জহির উদ্দিন মো: বাবর (আনারস), জয়নাল আবেদীন (রজনীগন্ধা), জাহেদুল ইসলাম (চশমা), বোরহান উদ্দিন (দুটি পাতা), মুরাদ উদ্দিন চৌধুরী (টেলিফোন), আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী মেহরাজ উদ্দিন (নৌকা), মোহাম্মদ শুয়াইব (ঘোড়া), সাইদুল ইসলাম ( অটোরিক্সা) ও ছাবের আহমদ ( টেবিল ফ্যান)।
সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী আজিমুল হক (নৌকা) প্রতীক নিয়ে মাঠে রয়েছে। নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী ডা: ফেরদৌস আহমদ প্রার্থীতা ফিরে পেতে হাইকোর্টে আপীল করেছেন। নিস্পত্তি না হওয়ায় তাকে এখনো প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়নি।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শহিদুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে ৮ইউনিয়নে নির্বাচনী মাঠে সরগর হয়ে উঠে। কোনো ক্রমেই আমরা ভোটের মাঠকে ঘোলাটে করতে দেব না। সব প্রার্থীদের নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে প্রচার-প্রচারণা করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ইউপি নির্বাচন যেন উৎসব হতে পারে, সেই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। তাছাড়া নির্বাচনে কোন ক্রমেই সহিংসতা ও সংঘর্ষের রূপ নিতে দেব না। এ বিষয়ে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে থাকবে।
তিনি আরও বলেন, প্রতীক বরাদ্দের মধ্য দিয়ে প্রার্থীরা এখন নিয়ম মেনে প্রচার চালাতে পারবেন। দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মাইকিং করা যাবে। কোন ধরনের শো-ডাউন, বড় ধরনের জনসভা ও তোরণ নির্মাণ করা যাবে না। তবে ঘরোয়া বৈঠকে প্রার্থীরা অংশ নিতে পারবেন।