জাহাঙ্গীর আলম:

বিংশ শতাব্দীর পুরোটা সময় ছিল বৈজ্ঞানিক ফর্মুলার প্রারম্ভ কাল। এই শতাব্দীকে গবেষকরা বিজ্ঞানের সূচনাকাল বলে অবহিত করেছেন। আর একবিংশ শতাব্দি হল বিজ্ঞানের উৎকর্ষকাল। এই শতাব্দীর বিগত ২৩ বছরে বিজ্ঞানের অভূতপূর্ব উন্নতি সাধিত হয়েছে।

এই শতাব্দীর কোন এক সময় বাংলাদেশের এক পঞ্চমাংশ সাগরে ডুবে যাবে। বাংলাদেশের জন্য এই মহাবিপদজনক সময়টি আগামী ৩০ বছরের মধ্যে দেখা দিতে পারে। এই সময়টি উপকূলবাসীর জন্য এক মহা দুর্যোগ কাল হিসেবেই আবির্ভূত হবে। উপকূলের মানুষ লোনা পানির কবলে পড়ে সর্বস্বান্ত হবে। এ সময় এলাকায় আবাসন,খাদ্য, শিক্ষা প্রভৃতিতে ব্যাপক সংকট দেখা দিবে।

ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপী দেখা দিয়েছে জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তন। এই পরিবর্তনের সাথে যুক্ত হবে অতিবৃষ্টি ও ঘূর্ণিঝড়। ফলে বাংলাদেশের অধিকাংশ এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে যাবে। সৃষ্টি হবে খাদ্য সংকট আর ব্যাহত হবে কৃষি উৎপাদন। সুপেয় পানির তীব্র সংকট সৃষ্টি হবে। ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।

এই শতাব্দীতে জীবাশ্ম জ্বালানির মারাত্মক সংকট দেখা দিবে। দেশে বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি। বিশাল এই জনশক্তির জ্বালানি সরবরাহ কঠিন হয়ে পড়বে। জীবাশ্ম জ্বালানি সাধারণত তিন ধরনের হয়ে থাকে। সেগুলো হলো কয়লা, তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস।আর এগুলো ছাড়া কোন দেশ একদিনও চলতে পারবে না।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমান হারে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার চলতে থাকলে আগামী ২০৫০ সালে তেল শেষ হয়ে যাবে। ২০৬০ সালে শেষ হবে গ্যাস । ২০৮৮ সালের শেষ হবে কয়লার মজুত।

পৃথিবীতে বর্তমানে যে পরিমাণ সঞ্চিত জ্বালানি আছে, তা দিয়ে আগামী ১০০ বছর চলবে। এরপর কি হবে সে বিষয়টি মানুষের অজানা রয়ে গেছে। বাপএক্সের সূত্র মতে,বাংলাদেশের মজুদকৃত জ্বালানি ৩০ বছর চলবে। আজ থেকে ৩০ বছর পর বাংলাদেশ এই ক্ষেত্রে আমদানি নির্ভর হয়ে পড়বে। জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা এটিকে বাংলাদেশের জন্য ভয়াবহ চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

এই শতাব্দীতে বৈশ্বিক বিভিন্ন অস্থিরতা দেখা দেবে। ইতোমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন স্বাধীন দেশের অভ্যন্তরে সহিংসতা বেড়ে গেছে। বিশ্বের বিভিন্ন শক্তিধর দেশগুলো পারমাণবিক শক্তি সঞ্চয় কর্মসূচিকে বেগবান করে তুলছে। অন্য রাষ্ট্রগুলো এই কর্মসূচি থেকে বিরত রাখতে গলা চেপে ধরছে। আগামী প্রজন্ম এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারবে তো?

জাহাঙ্গীর আলম
আঞ্চলিক টিম লিডার-কক্সবাজার ও সহকারি পরিচালক
কোস্ট ফাউন্ডেশন।