আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়ে ক্ষমতার দখলকে আরও শক্তিশালী করলেন ভ্লাদিমির পুতিন। তবে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিকভাবে গ্রহণযোগ্যতার অভাবে নির্বাচনটি ব্যাপক সমালোচিত হয়েছে। জবাবে মার্কিন গণতন্ত্রকেই কটাক্ষ করেছেন পুতিন। সোমবার (১৮ মার্চ) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

রাশিয়ার কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, প্রায় ৬০ শতাংশ এলাকার ভোট গণনা শেষ হয়েছে। এতে দেখা গেছে, পুতিন ৮৭. ৫ শতাংশ ভোট পেয়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে কমিউনিস্ট প্রার্থী নিকোলাই খারিটোনভ ৪ শতাংশের কম ভোট নিয়ে দ্বিতীয়, নবাগত ভ্লাদিস্লাভ দাভানকভ তৃতীয় এবং লিওনিড স্লুটস্কি চতুর্থ হয়েছেন।

নির্বাচন পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে, পশ্চিমা বিশ্বকে অবজ্ঞা করার ও ইউক্রেন আক্রমণের সিদ্ধান্তের সত্যতা হিসেবে ভোটের ফলাফল তুলে ধরেছেন পুতিন। তিনি বলেছেন, অনেক পশ্চিমা দেশের চেয়ে রাশিয়ার গণতন্ত্র বেশি স্বচ্ছ। একেবারেই বস্তুনিষ্ঠ। রাশিয়ার নির্বাচন যুক্তরাষ্ট্রের ভোটের মতো নয়, যেখানে ১০ ডলার দিয়ে একটি ভোট কেনা যায়।

সাংবাদিকদের পুতিন বলেন, রাশিয়ার এই নির্বাচনকে গণতান্ত্রিক বলে মনে করেন তিনি।

পুতিনের পুনর্নির্বাচিত হওয়া গণতান্ত্রিক কিনা? জানতে চেয়েছিল মার্কিন টিভি নেটওয়ার্ক এনবিসি। জবাবে পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও বিচারব্যবস্থার কড়া সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে যা ঘটছে, তা দেখে সারা বিশ্ব হাসছে। এটা বিপর্যয়, গণতন্ত্র নয়। ট্রাম্পকে ইঙ্গিত করে পুতিন বলেন, একজন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীকে আক্রমণ করতে প্রশাসন, বিচারব্যবস্থা, গণমাধ্যমের বিষয়ের ব্যবহার কি গণতান্ত্রিক? ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এখনও চারটি ফৌজদারি মামলা আছে।

এরপর সোমবার সকালে পুতিনের প্রচারণা সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে প্রথমবারের মতো বিরোধী রাজনীতিবিদ অ্যালেক্সি নাভালনি সম্পর্কে মুখ খোলেন তিনি।

এরইমধ্যে রাজধানী মস্কোতে বিজয়ভাষণ দিয়েছেন পুতিন। এসময় সমর্থকদের তিনি বলেন, রুশরা যখন ঐক্যবদ্ধ হয়, তখন যে-ই ভয় দেখাতে চায়, দমন করতে চায় না কেন, ইতিহাস বলে, কেউ সফল হয়নি। এখনও, ভবিষ্যতেও তারা সফল হবে না।

১৯৯৯ সাল থেকে রাশিয়ায় কখনও প্রধানমন্ত্রী, কখনও প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় আছেন পুতিন। আর এবারের নির্বাচনে জয়ের মধ্য দিয়ে দেশটির ২০০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় ক্ষমতায় থাকতে যাচ্ছেন তিনি।