আব্দুস সালাম,টেকনাফ:
টেকনাফ উপজেলার শাহপরীর দ্বীপ এলাকায় অভিযান চালিয়ে উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পরকীয়ার জের ধরে স্বামী হত্যার চাঞ্চল্যকর মামলার অভিযুক্ত এজাহারনামীয় স্ত্রী ও তার কথিত প্রেমিক ১নং এজাহারনামীয় আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৫ এর সদস্যরা
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপের মো. সিদ্দিকের নজির হোসেন বাহাদুর প্রকাশ বাহাদুল্লাহ (২৩) ও কথিত স্ত্রী উখিয়া এফডিএমএন ২৬ নং ক্যাম্পের সোনা মিয়ার মেয়ে আসমিদা বেগম (৩০)।
কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল’ এন্ড মিডিয়া) মো. আবু সালাম চৌধুরী গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, গত ৫ এপ্রিল কক্সবাজারের উখিয়ায় পারিবারিক কলহের জেরে পরকীয়া প্রেমিকসহ স্ত্রী আসমিদা বেগম পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তার স্বামী সলিমকে গুলি করে এবং ঘটনার পরদিন ভিকটিম সলিম চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় ভিকটিমের পিতা মীর আহমদ বাদী হয়ে উখিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যার মামলা নং-১৫, তারিখ-০৮/০৪/২০২৪, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড। ঘটনার দিন থেকেই উক্ত হত্যাকাণ্ডে জড়িত নিহতের স্ত্রী ও তার পরকীয়া প্রেমিককে গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে র্যাব-১৫ সচেষ্ট ভূমিকা পালন করে আসছিল।
অবশেষে গত বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাতে র্যাবের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে সিপিসি-১ টেকনাফ ক্যাম্পের চৌকস আভিযানিক দল উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পরকীয়ার জের ধরে স্বামী হত্যার চাঞ্চল্যকর মামলার এজাহারনামীয় ১নং আসামি কথিত প্রেমিক নজির হোসেন বাহাদুর প্রকাশ বাহাদুল্লাহ (২৩) এবং এজাহারনামীয় ২নং আসামি ভিকটিমের স্ত্রী আসমিদা বেগম (৩০) কে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ এলাকা থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামিরা হত্যাকাণ্ডে নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
জিজ্ঞাসাবাদ ও অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিকটিম মৃত সলিম (৩২) ও আসমিদা বেগম (৩০) সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী। তারা দুজনেই মিয়ানমারের নাগরিক। বিগত ১২ বছর পূর্বে তারা দু'জন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। তাদের ঘরে দুটি পুত্র সন্তান রয়েছে। কাজের সূত্রে ভিকটিম মৃত সলিম প্রায়ই বাইরে থাকতো। এই সুযোগে তার স্ত্রী আসমিদা বেগম তার পরকীয়া প্রেমিক নজির হোসেন বাহাদুর প্রকাশ বাহাদুল্লার সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি ভিকটিম মৃত সলিমের নজরে এলে সে স্ত্রীর সাথে প্রতিবাদ করায় তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ ও ঝামেলার সৃষ্টি হয়। তখন থেকেই ভিকটিমের স্ত্রী তার পরকীয়া প্রেমিকের সহযোগিতায় ভিকটিমকে হত্যা করার পরিকল্পনা করতে থাকে। ঘটনার দিন অর্থাৎ ৫ এপ্রিল দুপুর অনুমান ১২ টার দিকে পূর্ব পরিকল্পনা অনুসারে ভিকটিমের স্ত্রীর কথিত প্রেমিক নজির হোসেন বাহাদুর তার সঙ্গে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ভিকটিমের পেটের ডান পাশের নিচের অংশে গুলি করে। এই কাজে ভিকটিমের স্ত্রী তার প্রেমিককে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে। পরবর্তীতে ভিকটিমকে প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে। ঘটনার পরদিন সকালে ভিকটিম চট্টগ্রাম মেডিকেলে মৃত্যুবরণ করেন।
তিনি আরো জানান,গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।