ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে মধ্য ইউরোপের দেশ স্লোভেনিয়া। দেশটির সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকার স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে। ফলে পার্লামেন্ট বিষয়টির অনুমোদন দিলে এটি কার্যকর হবে। বৃহস্পতিবার স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট গোলব এ ঘোষণা দিয়েছেন।
স্লোভেনিয়ার রাজধারী লুব্লজানায় এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ(বৃহস্পতিবার) আমাদের সরকার ফিলিস্তিনকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
উল্লেখ্য গত মঙ্গলবার (২৮ মে) ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ইউরোপের তিন দেশ স্পেন, নরওয়ে এবং আয়ারল্যান্ড একযোগে স্বীকৃতি দিয়েছে। এ তিন দেশের পর এবার স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিল স্লোভেনিয়া।
সরকারের এ ঘোষণার পর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য পার্লামেন্টের অনুমোদন নিতে হবে। স্লোভেনিয়ার স্পিকার আর্সকা ক্লাকোচার জুপানসিস জানান, আগামী মঙ্গলবার বিষয়টির ওপর পার্লামেন্টে ভোটাভুটি হবে।
দেশটির এ ঘোষণার পর ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি পোস্ট দিয়েছেন। এ পোস্টে তিনি স্লোভেনিয়ার পার্লামেন্ট সদস্যরা প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিলে বিষয়টি হামাসকে পুরস্কৃত করা হবে। আমি আশা করছি, পার্লামেন্টে এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হবে।
এর আগে আলজাজিরা জানায়, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে গত মঙ্গলবার (২৮ মে) ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউরোপের আরও তিন দেশ। এ তিন দেশ হলো নরওয়ে, স্পেন ও আয়ারল্যান্ড।
তার আগে নরওয়ে, স্পেন ও আয়ারল্যান্ডের শীর্ষনেতারা পৃথকভাবে ঘোষণা দিয়ে বলেন, ফিলিস্তিনকে তাদের স্বীকৃতি ২৮ মে থেকে কার্যকর হবে। পাশাপাশি তারা আরও দেশকে এ ঘোষণায় যুক্ত হতে আহ্বান জানায়।
তিন দেশের এমন স্বীকৃতিকে আরব নেতারা স্বাগত জানিয়েছেন। উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন ফিলিস্তিনিরা। তবে এ পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে ইসরায়েল। তারা ওইসব দেশ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে।
নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী জোনাস গর স্তোর তখন সংবাদ সম্মেলনে জানান, দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান ইসরায়েলের স্বার্থের জন্যই ভালো। যদি (ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে) স্বীকৃতি না দেওয়া হয়, তবে মধ্যপ্রাচ্যে কখনোই শান্তি আসবে না।’
নরওয়ের ঘোষণার একটু পরই আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সিমন হ্যারিস সংবাদ সম্মেলনে জানান, তার দেশও শিগগির ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে। তিনি বলেন, ‘আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে ও স্পেন ঘোষণা দিচ্ছে যে আমরা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিচ্ছি। এই দেশগুলো এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় জাতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’ এ সময় তিনি বলেন, ‘আমি আত্মবিশ্বাসী যে অন্যান্য দেশও আমাদের পথ অনুসরণ করবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।’
তারপর স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজও সংবাদ সম্মেলনে জানান, তার দেশের মন্ত্রিপরিষদ ২৮ মে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে। গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর পর থেকেই সানচেজ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যাপারে চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন।
এই তিন দেশের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ নরওয়ে, আয়ারল্যান্ড ও স্পেনের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে থেকে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।