দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির প্রায় আট দশক পেরিয়ে অক্ষশক্তির দেশ জার্মানি যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। কয়েক দশকের অবিশ্বাস্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দেশটিকে ইউরোপের অন্যতম ধনী দেশে পরিণত করেছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দেশটি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে।
জার্মানির শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারাও প্রকাশ্যে যুদ্ধ প্রস্তুতির কথা বলছেন।
বিশ্ব শাসনের স্বপ্ন থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা করেছিল জার্মানি। যুদ্ধের পর জার্মানির অর্থনীতির কোমর ভেঙে যায়। উল্টো ক্ষতিপূরণের বোঝা বয়ে চলতে হচ্ছে এখনও।
তবে এবার কোনো রকম রাখঢাক না রেখেই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতির ঘোষণা দিয়েছে জার্মানি। বুধবার দেশটির পার্লামেন্টে জার্মান প্রতিরক্ষমন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস বলেন, রাশিয়ার হুমকি বৃদ্ধি পাওয়ায় তার দেশের অবশ্যই যুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।
সংবাদমাধ্যম পলিটিকো জানিয়েছে, নিউজ ম্যাগাজিন দের স্পিয়েগেল পিস্টোরিয়াসকে উদ্ধৃত করে বলেছে, ২০২৯ সালের মধ্যে আমাদের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। ইউরোপের দেশগুলো বিশেষে করে পূর্ব ইউরোপে এই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, রাশিয়া ইউক্রেন ছাপিয়ে অন্য দেশেও আক্রমণ করতে পারে। এরপরই ইউরোপের দেশগুলো সামরিক শক্তি বাড়াচ্ছে।
জার্মানিতে সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যকতামূলক করার বিষয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। দেশটির বিরোধী দল সিডিইউ বলছে, ভবিষ্যতে ক্ষমতায় গেলে এক বছরের জন্য তরুণদের সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে আইন করার চেষ্টা করবে তারা। জার্মানিতে ২০১১ সাল পর্যন্ত এ ব্যবস্থা চালু ছিল। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা ও জার্মান সামরিক বাহিনীতে কর্মীর অভাবের কারণে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিডিইউ।
হজ নিয়ে ভোগান্তি: দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস মন্ত্রীর
রাশিয়া টুডে এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে, জার্মানি সম্ভাব্য যুদ্ধের জন্য ইতোমধ্যে একটি নতুন পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ নেওয়া এবং দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় সীমানায় নেটোর সেনা মোতায়েন।
গেল বুধবার জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ সোলজের মন্ত্রিসভা নতুন প্রতিরক্ষা ফ্রেমওয়ার্কের অনুমোদন দেয়। জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফায়েসের এক বিবৃতিতে জানান, রাশিয়ার আগ্রাসনে ইউরোপের নিরাপত্তা পরিস্থিতি পুরোপুরি বদলে গেছে।
নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করতে এয়ারবাসের কাছ থেকে আরও ২০টি ইউরোফাইটার জেট কিনতে চায় জার্মানি। বুধবার বার্লিনে আন্তর্জাতিক মহাকাশ প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে এমন কথা বলেন তিনি। দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দোহাই দিয়ে সামরিক শক্তি বাড়াচ্ছে ইউরোপের দেশগুলো। এমন পরিস্থিতি চলমান থাকলে আবারও দীর্ঘ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে ইউরোপ।
আরও খবর পেতে যুক্ত থাকুন CoxsbazarNEWS.com এর সাথে।