বুড়িগঙ্গাসহ ঢাকার চারপাশের নদীগুলো রক্ষায় গঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটিকে সমীক্ষা পরিচালনায় থোক বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।
আজ বৃহস্পতিবার (২০ জুন) জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় এই প্রস্তাব দেন তিনি। এ সময় সংসদে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
বাজেট অধিবেশনে নিজ নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। তিনি বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকায় অনেক সমস্যা রয়েছে। এরমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে নদী দূষণ। আমার এলাকা বুড়িগঙ্গার তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা। এই বুড়িগঙ্গাসহ ঢাকার চারপাশের নদীগুলো আজ নাব্যতা হারিয়ে প্রায় মৃত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৭ সালে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন দিয়েছিলেন ঢাকার চারপাশে যে নদীগুলো রয়েছে তার নাব্যতা এবং দূষণমুক্ত করার জন্য। এই কমিটি অনেকটা নিষ্ক্রিয় অবস্থায় রয়েছে, যদি সমীক্ষা করার জন্য থোক বরাদ্দ দিয়ে এই কমিটিকে আবার সক্রিয় করা যায় তাহলে আমাদের এই নদীগুলোকে দূষণমুক্ত ও নাব্যতা ফিরিয়ে আনা যাবে।
বায়ু দূষণ ঢাকার অন্যতম একটি বড় সমস্যা জানিয়ে মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, বায়ু দূষণের কারণে আমাদের জনগোষ্ঠী বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে যাচ্ছে। এই বায়ু দূষণের অন্যতম কারণ যত্রতত্র নির্মাণসামগ্রী ফেলে রাখা, ঢাকার চারপাশের ইটের ভাটা এবং বিশেষ করে বায়ু দূষণের অন্যতম কারণ সিটি করপোরেশনের স্যানিটারি ল্যান্ডফিল (ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আমিন বাজার ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মাতুয়াইল ল্যান্ডফিল) থেকে যে মিথেন গ্যাস নির্গত হয়। ঘণ্টায় প্রায় চার টন মিথেন গ্যাস নির্গত হয় এই স্যানিটারি ল্যান্ডফিল থেকে। কানাডা ভিত্তিক একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এই তথ্য দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে আহ্বান জানাবো এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নের মাধ্যমে বায়ু দূষণমুক্ত ঢাকা এবং বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করবার জন্য।
পুরান ঢাকায় জলাবদ্ধতা অত্যন্ত কঠিন একটি সমস্যা জানিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক এই মেয়র বলেন, ঢাকায় মাত্র ২০ মিলিমিটার বৃষ্টিতে আমাদের ড্রেনেজ সিস্টেমগুলো সাপোর্ট করতে না পারার কারণে এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। একই সঙ্গে সময় মতো খালগুলো পরিষ্কার করতে না পারার কারণে এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে এই বিষয়ে নজর দেওয়ার জন্য আজকের এই সংসদ থেকে অনুরোধ জানান তিনি।
ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য বলেন, নগর দরিদ্র একটি বড় সমস্যা। এই দরিদ্রতা দূর কারণে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় পরিচালিত আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সার্ভিস ডেলিভারি একটি প্রজেক্ট রয়েছে। যেটা একেবারে শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। এই প্রোজেক্টের অবকাঠামোগুলোকে ব্যবহার করে আমরা যদি একটি নতুন প্রজেক্ট নিতে পারি তাহলে নগরের এই দরিদ্র জনগোষ্ঠী স্বল্পমূল্যে সেবা নিতে পারবে।
মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, ২০০৯ সালে প্রিয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করে। আজকে ১৬ বছর পর আমরা দেখতে পাই বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। আমরা প্রায়ই এই বদলে যাওয়া বাংলাদেশকে উন্নয়ন শব্দ দিয়ে ব্যাখ্যা করতে চাই। আমি বলতে চাই শুধুমাত্র উন্নয়ন শব্দ দিয়ে ব্যাখ্যা করলে যথার্থ মূল্যায়ন হবে না। আমরা বলতে চাই এটি একটি জাতিরাষ্ট্রের রূপান্তর। একটি জাতিরাষ্ট্রের ইতিবাচক রূপান্তর ঘটে গেছে এই বিগত ১৫ বছরে। তিনি বলেন, আমাদের প্রাণপ্রিয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা যা করেছি এ দেশের মানুষের জন্যে- এই যাত্রাকে অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় মাননীয় অর্থমন্ত্রী বাজেট দিয়েছেন। যাতে করে আজকের বাস্তবতা ডিজিটাল বাংলাদেশ- স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর হতে পারে। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের ভিশন এই ডিজিটাল বাংলাদেশ সেটা সফল হয়েছে এবং তাঁর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের যে রূপরেখা আমরা সেটাকে ইনশাআল্লাহ সফল করব।