কক্সবাজার বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত একটি শহর, পর্যটন কেন্দ্র। এটি চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলার সদর দপ্তর। কক্সবাজার তার নৈসর্গিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। এখানে রয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম অবিচ্ছিন্ন প্রাকৃতিক বালুময় সমুদ্র সৈকত, যা ১২০ কি.মি. পর্যন্ত বিস্তৃত। এখানে রয়েছে বাংলাদেশের বৃহত্তম সামুদ্রিক মৎস্য বন্দর এবং সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন। এক সময় কক্সবাজার “পানোয়া” নামেও পরিচিত ছিল যার আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে হলুদ ফুল। এর আরও একটি প্রাচীন নাম হচ্ছে “পালঙ্কি”।
কেন আসবে কক্সবাজার?
পর্যটন নগরী কক্সবাজারের প্রতিটি উপজেলায় ছড়িয়ে আছে দর্শনীয় স্থান। সৌন্দর্যমণ্ডিত ও গুরুত্বপূর্ণ কিছু দর্শনীয় স্থান হল:
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত আদিনাথ মন্দির, মহেশখালী কুতুবদিয়া বাতিঘর ছেঁড়াদ্বীপ, সেন্টমার্টিন, টেকনাফ, নাফ নদী, ডুলাহাজরা সাফারি পার্ক প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন রাবার বাগান হিমছড়ি ইনানী সমুদ্র সৈকত সোনাদিয়া দ্বীপ, মহেশখালী এবং টেকনাফ সমুদ্র সৈকত।
কখন আসবেন কক্সবাজার?
ষড়ঋতুর বৈচিত্র্যময় এ দেশে কক্সবাজারও বৈচিত্র্য ছড়ায় প্রতি ঋতুর মাঝেই। অধিকাংশ মানুষ পর্যটন মৌসুম শীতকালকে কক্সবাজার ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত মনে করে থাকে এবং এই শীতকালীন সময় বেশি আসে। সত্যিকার অর্থেই শীতের সময়ে ভ্রমণ করাটা সহজ হয়ে থাকে। তবে আপনি যদি প্রকৃতি প্রেমী হয়ে থাকেন, বর্ষার ঝুম বৃষ্টিতে আকাশ আর সমুদ্রের মিতালির যে এক অপার্থিব সৌন্দর্য–তা আপনাকে হারিয়ে যেতে বাধ্য করবেই। তাছাড়া শরতের সাদা মেঘ, কখনো বৃষ্টি আবার কখনোবা চকচকে রোদ আপনাকে দিবে এক অনন্য অনুভূতি এই সময় আসতেই পারেন। হেমন্তের কোনো এক পূর্ণিমা রাতে চাঁদের মোহনীয়তা আর সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের গর্জন আপনার মন কাড়বেই। তাই আপনার সুবিধাজনক কোনো সময়ে বেরিয়ে পড়ুন কক্সবাজার ভ্রমণের উদ্দেশ্যে।
কীভাবে আসবেন কক্সবাজার?
সাধারণত কক্সবাজার ভ্রমণের জন্য সড়ক পথ, আকাশ পথ এবং রেল পথ ব্যবহার করা যেতে পারে। নিচে বিস্তারিত উল্লেখ করা হলো:
সড়ক পথ: সড়ক পথে ঢাকা টু কক্সবাজার সরাসরি বাস সার্ভিস চালু রয়েছে। সাধারণত কক্সবাজার ভ্রমণে নন এসি বাসে আপনার খরচ পড়বে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকার মতো এবং এসি সার্ভিস ও অন্যান্য সুযোগ গ্রহণ করতে চাইলে খরচ করতে হবে ১০০০ থেকে ২৫০০ টাকার মতো।
রেল পথ: ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজার যেতে চাইলে, কমলাপুর কিংবা বিমানবন্দর স্টেশন থেকে কক্সবাজার এক্সপ্রেস বা পর্যটক এক্সপ্রেসে করে সরাসরি কক্সবাজার যাওয়া যাবে। সেক্ষেত্রে ভাড়া সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১৭২৫ টাকা খরচ হবে।
আকাশ পথ: কক্সবাজারে বিমানবন্দর থাকায়, কক্সবাজার ভ্রমণ হয়েছে আরও স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক। ঢাকা এয়ারপোর্ট থেকে বেশ কিছু বিমান কক্সবাজার গিয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৩,৫০০ টাকা টিকেট থেকে শুরু করে ১১,০০০ টাকা পর্যন্ত মূল্য রয়েছে।
কক্সবাজারে কোথায় থাকবেন?
কক্সবাজার পর্যটন নগরী হওয়ায় এখানে পর্যটকদের থাকার জন্য গড়ে উঠেছে অসংখ্য হোটেল ও রিসোর্ট। সুযোগ-সুবিধা ও সৈকতের নিকটে বা দূরে অবস্থানের কারণে একেক হোটেল বা রিসোর্টের খরচ একেক রকম হয়ে থাকে। কক্সবাজারে থাকার জন্য কিছু উল্লেখযোগ্য হোটেল ও রিসোর্টের নাম লিস্ট দেওয়া হলো:
১.রামদা বাই ওইন্ডম।
২.সিয়ামোন হোটেল।
৩.স্বপ্নিল সিন্ধু
৪.ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা
৫. সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা।
৬.সায়মন বিচ রিসোর্ট
৭.মারমেইড বিচ রিসোর্ট
৮.ওশ্যান প্যারাডাইস হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট।
৯.লং বিচ হোটেল
১০.হোটেল সিগাল
১১.নিসর্গ হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট
১২.হোটেল দ্য কক্স টুডে
১৩.সাম্পান বিচ রিসোর্ট ইত্যাদি
কক্সবাজারে সমস্যা পড়লে কি করবো?
সাথে সাথে টুরিস্ট পুলিশকে নিজের সমস্যা জানাতে হবে। তাদের দেওয়া হেল্প লাইনের মাধ্যমে সহযোগী নিতে হবে।
কিছু না চিনলে কি করবো?
কিছু না চিনলে টুর গাইডের মাধ্যমে ঘুরবেন। এবং টুর গাইড নেওয়ার সেরা মাধ্যম হল:
“হেলো ট্যুর” Hello Tour ফেসবুক পেজে নক করলে পাওয়া যাবে.
কক্সবাজার আসার সময় নিজের পরিচয় পত্র এবং আইডি কার্ড অথবা জন্মনিবন্ধন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষিদ্ধ হওয়া মালামাল এবং পণ্য বহন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ভ্রমণ করুন নিজের দেশকে এবং পৃথিবীকে জানুন এবং জ্ঞান অর্জন করুন।
লেখক,
সিদ্দিকুর রহমান,
শিক্ষার্থী ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ,
কক্সবাজার সিটি কলেজ।